দিল্লির রামলীলা ময়দানে তৃতীয় বার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথগ্রহণের পরে অরবিন্দ কেজরীবাল। ছবি: প্রেম সিংহ
আম আদমি পার্টির নেতা হিসেবে ভোটে জিতেছেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী তিনি সকলের। রবিবার তৃতীয় বার শপথ নিয়ে অরবিন্দ কেজরীবাল বললেন, ‘‘কেউ বিজেপি, কেউ কংগ্রেসকে ভোট দিতেই পারেন। কিন্তু শপথের পরে আমি সবার মুখ্যমন্ত্রী। যে কোনও দলের, ধর্মের লোক প্রয়োজনে আমার সঙ্গে দেখা করতে পারেন। আগের মতো এ বারও কাজের ক্ষেত্রে কোনও দল বিচার করা হবে না।’’
নিজের প্রথম বক্তৃতাতেই আজ কেজরীবাল স্পষ্ট করে দেন, আগামী দিনে কেন্দ্রের সঙ্গে সংঘাতে যাওয়ার পক্ষপাতী তিনি নন। ‘সবার মুখ্যমন্ত্রী’ হিসাবে দিল্লির উন্নয়নে তাল মিলিয়ে চলতে চান কেন্দ্রের সঙ্গে। দিল্লির উন্নয়নে নরেন্দ্র মোদীর আশীর্বাদও আজ প্রার্থনা করেন কেজরীবাল।
ফাল্গুন পড়তেই রোদ চড়েছে রাজধানীতে। তা-ও কেজরী রামলীলা ময়দানে ঢুকলেন সাদা শার্টের ওপরে মোটা লাল ফুলহাতা সোয়েটার পরে, যা তাঁর ফ্যাশন স্টেটমেন্টে পরিণত। বেলা সোয়া ১২টায় কেজরীবালের নাম ঘোষণা মাত্র উল্লাসে ফেটে পড়ে জনতা। শপথ নেন মণীশ সিসৌদিয়া, সত্যেন্দ্র জৈন, গোপাল রাই, কৈলাস গহলৌত, ইমরান হুসেন ও রাজেন্দ্র পাল গৌতম। নতুন মুখ বা কোনও মহিলা সদস্যকে কেন মন্ত্রিসভায় রাখা হল না, সে বিষয়ে আপের যুক্তি— গত সরকারে ভাল কাজ করেছেন ওই মন্ত্রীরা। নতুন মন্ত্রীর কাজ বুঝতে সময় লাগবে। তাই পুরনো মুখেই ভরসা করেছেন কেজরীবাল।
শপথগ্রহণ শেষে উপ-রাজ্যপাল অনিল বৈজল চলে যেতেই রাজধানীবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে কেজরীবাল বলেন, ‘‘এটা দিল্লিবাসীর জয়। গ্রামে ফোন করে বলুন, আপনাদের ছেলে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিয়েছে।’’ তাঁর বিরুদ্ধে আক্রমণ শানানো ব্যক্তিদেরও দল ক্ষমা করে দিয়েছে বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী।
এ বারে গোড়া থেকেই কেন্দ্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে চলতে চাইছেন কেজরী। কোনও আঞ্চলিক নেতাকে আমন্ত্রণ না-জানালেও, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে আমন্ত্রণ জানাতে ভুল করেননি আপ নেতৃত্ব। বারাণসীতে পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি থাকায় দিল্লিতে ছিলেন না প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু কেজরীবাল মঞ্চ থেকেই জানান, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর কাজ থাকায় আসতে পারেননি। কিন্তু দিল্লির উন্নতির জন্য প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রের আশীর্বাদ প্রার্থনা করছি।’’ আপ নেতৃত্বের ব্যাখ্যা, বিরোধিতার মানসিকতা নিয়ে গত বার ভুগতে হয়েছে বলেই এ বারে কৌশল পাল্টে মিষ্টি মুখে দিল্লির জন্য দাবি আদায় করে নিতে চায় নতুন সরকার। স্থির হয়েছে, কেন্দ্র যদি একান্তই অসহযোগিতা করে, তখন আজকের উদাহরণ দেখিয়ে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সরব হবে দল।