দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল। —ফাইল চিত্র।
ইডির হাতে গ্রেফতারি প্রসঙ্গে আবার মুখ খুললেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল। তাঁকে বৃহস্পতিবার দিল্লির রাউস অ্যাভেনিউ কোর্টে হাজির করানো হয়েছে। আদালতে যাওয়ার পথে সংবাদমাধ্যমে কেজরী জানান, তাঁর গ্রেফতারি আসলে ‘রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র’। বৃহস্পতিবার তাঁর ইডি হেফাজতের মেয়াদ আরও চার দিনের জন্য বৃদ্ধি করা হয়েছে।
এর আগে কেজরীকে ছ’দিনের ইডি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিল দিল্লির আদালত। তার মেয়াদ শেষ হয়েছে বৃহস্পতিবার। তাঁকে আবার আদালতে হাজির করানো হয়। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘এটা একটা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। মানুষ ঠিক এর জবাব দেবে।’’ আদালতে কেজরীর সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রী সুনীতা। অতিশী, গোপাল রাই, সৌরভ ভরদ্বাজের মতো আম আদমি পার্টির (আপ) নেতারাও ছিলেন আদালতে। সূত্রের খবর, ইডি কেজরীর হেফাজতের মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন জানাতে পারে।
আদালতে নিজের সপক্ষে বলতে গিয়ে কেজরী বলেন, ‘‘ইডির রিম্যান্ডের আবেদনের বিরোধিতা করছি না। ওরা যত দিন চায় আমাকে হেফাজতে রাখতে পারে। কিন্তু এটা একটা দুর্নীতি। এতে ইডির দু’টি উদ্দেশ্য। এক, আপকে ভেঙে দেওয়া। দুই, আড়ালে তোলাবাজির চক্র চালানো।’’
কেজরী আরও বলেন, ‘‘ইডি বলছে, আবগারি দুর্নীতিতে ১০০ কোটি টাকা নয়ছয় হয়েছে। তা হলে সেই টাকা কোথায় গেল? আসল দুর্নীতিটা শুরু হয়েছে ইডির তদন্ত শুরু হওয়ার পর। আমাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কোনও আদালতে আমাকে অপরাধী প্রমাণ করা যায়নি। সিবিআই ৩১ হাজার এবং ইডি ২৫ হাজার পৃষ্ঠার চার্জশিট দিয়েছে। সেগুলো পড়েও আমাকে গ্রেফতার করার কোনও কারণ খুঁজে পাওয়া যাবে না।’’
আবগারি দুর্নীতি মামলায় গত বৃহস্পতিবার কেজরীকে গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। এর আগে এই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কেজরীকে ন’বার সমন পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তিনি প্রতি বারই হাজিরা এড়িয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার ছিল নবম বারের হাজিরার দিন। ইডি দফতরে না গিয়ে কেজরী সে দিন গিয়েছিলেন হাই কোর্টে। রক্ষাকবচের আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু তা খারিজ হয়ে যায়। তার পর ওই দিন রাতেই দিল্লিতে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে পৌঁছে যান কেন্দ্রীয় সংস্থার আধিকারিকেরা। ঘণ্টা দুয়েক তল্লাশির পর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। কেজরীই প্রথম মুখ্যমন্ত্রী যিনি পদে থাকাকালীন গ্রেফতার হয়েছেন। তাঁর গ্রেফতারির পর দিল্লির শাসকদল আপের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, গ্রেফতার হলেও কেজরী পদত্যাগ করছেন না। তিনি হেফাজতে থেকেই মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব সামলাবেন।
গ্রেফতারির পর কেজরী বলেছিলেন, ‘‘আমি জেলে থাকি বা জেলের বাইরে, আমার হৃদয় সব সময়ই দেশের জন্য নিয়োজিত। তাঁকে আদালতে হাজির করিয়ে ইডি দাবি করেছিল, আবগারি মামলার মূলচক্রীদের মধ্যে অন্যতম কেজরী। তাঁর বিরুদ্ধে প্রমাণও মিলেছে। বৃহস্পতিবারও সেই দাবিতেই আদালতে কেজরীর হেফাজত চাইতে পারে কেন্দ্রীয় সংস্থা।