গোলাপি টিকিট হাতে মহিলা যাত্রীরা।—ছবি পিটিআই
নিখরচায় নিরাপদ বাসযাত্রা। ভাইফোঁটায় ‘দিল্লির বোনেদের’ জন্য ‘উপহার’ ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। জানালেন, মঙ্গলবার থেকেই দিল্লি পরিবহণ নিগম (ডিটিসি) এবং বেসরকারি ক্লাস্টার বাসে আর টিকিট কাটতে হবে না মহিলাদের। যাত্রীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এ দিন থেকে প্রত্যেক বাসে মোতায়েন হচ্ছেন রক্ষীও (মার্শাল)। কেজরীর এই ঘোষণায় প্রত্যাশিত ভাবেই খুশি মহিলারা। কিন্তু এর দরুণ নিগমের রোজগার কমে যাওয়ার খেসারত গুনতে হবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কিত কর্মীদের অনেকে।
এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, শহরে মেট্রো যাত্রীদের মাত্র ৩০% মহিলা। বাসেও তা-ই। এই ‘অসম’ প্রেক্ষাপটে মহিলাদের কিছুটা সুবিধা দিতেই টিকিট না-নেওয়ার সিদ্ধান্ত। সেই সঙ্গে যাত্রীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বাসে রক্ষী রাখার জন্য ১৩ হাজার মার্শাল নিয়োগের কথাও বলেছেন তিনি।
এই ঘোষণার দিনে বিভিন্ন বাস আর বাস ডিপোয় ঢুঁ মেরে দেখা গেল, অনেকে এখনও বিষয়টি জানেন না। যাঁরা জানেন, তাঁরা খুশি। কমলা দেবী, নবনীত কউর, সুলতা দেবী, জ্যোতি শ্রীবাস্তবরা বলছেন, ভাইফোঁটায় সরকারের তরফে ভাল উপহার। বাসের কর্মীরাও মানছেন, অফিস-কাছারি খুললে অবশ্যই ভিড় বাড়বে বাসে। কিন্তু চালক জয় প্রকাশ, যমুনা দাস থেকে শুরু করে কন্ডাক্টর নবীন কুমার, দেবেন্দ্র কুমার— অনেকেরই বক্তব্য, ‘‘হয়তো ভোটের দিকে তাকিয়ে এই ঘোষণা করা হল। আমরা মহিলাদের যে গোলাপি টিকিট দিচ্ছি, তার সংখ্যা মিলিয়ে দেখে ডিটিসিকে ভর্তুকিও দেবে সরকার। কিন্তু তার পরে ভাঁড়ারে টান পড়ার অজুহাতে কর্মী কমানোর কথা বলা হবে না তো?’’ এঁদের আশঙ্কা, ৭-১০ দিনে এই সুবিধার কথা পুরোদস্তুর প্রচার হয়ে যাওয়ার পরে আয় কমবে অন্তত ৩০%-৩৫%। তাঁদের হিসেব, ডিটিসি এবং ক্লাস্টারের একটি বাসে (যেগুলি দিল্লি সরকার নিলামের ভিত্তিতে বেসরকারি সংস্থাকে চালাতে দেয়) ছুটির দিনে গড়ে ৩,৫০০-৪,০০০ টাকার টিকিট বিক্রি হয়। কাজের দিনে ৪,৫০০-৫,৫০০ টাকার। তাঁদের দাবি, মহিলাদের টিকিট কাটতে না-হওয়ায় তা কমবে প্রায় ৩০%। এই বিপুল ভর্তুকি কী ভাবে গুনবে সরকার? এখন তো মেটাতে হবে মার্শালের বেতনও।
কেজরীবালের অবশ্য দাবি, দুর্নীতি রুখে যে টাকা তাঁরা বাঁচাচ্ছেন, তা দিয়েই একের পর এক জনমুখী প্রকল্প চালু করছেন তিনি। আগামী দিনে বয়স্ক এবং পড়ুয়াদেরও এই সুবিধা দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।