Arvind Kejriwal

কেজরীর দাবির পরে আশা আয়কর নিয়ে

বুধবার কেজরী দাবি করেছিলেন, মধ্যবিত্তের কথা ভেবে আয়কর ছাড়ের সীমা ৭ লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০ লক্ষ টাকা করা হোক। অর্থ মন্ত্রক সূত্রের খবর, বাস্তবিকই এ নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:৪৪
Share:

অরবিন্দ কেজরীওয়াল। —ফাইল চিত্র।

বাজেটে আয়করের ছাড় ঘিরে এমনিতেই প্রত্যাশা তৈরি হচ্ছিল। দিল্লির ভোট ময়দানে অরবিন্দ কেজরীওয়াল এ বার মোদী সরকারের কাছে মধ্যবিত্তের সুরাহার জন্য আয়কর ছাড়ের সীমা বাড়ানোর দাবি তুলে সেই প্রত্যাশা তুঙ্গে পৌঁছে দিলেন।

Advertisement

বুধবার কেজরী দাবি করেছিলেন, মধ্যবিত্তের কথা ভেবে আয়কর ছাড়ের সীমা ৭ লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০ লক্ষ টাকা করা হোক। অর্থ মন্ত্রক সূত্রের খবর, বাস্তবিকই এ নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে। রাজনৈতিক শিবিরের মতে, প্রাক্তন রাজস্ব অফিসার কেজরীওয়াল টের পেয়েছেন, মোদী সরকার এ বার ১ ফেব্রুয়ারির বাজেটে আয়কর ছাড়ের সীমা বাড়াতে চলেছে। তাই ৫ ফেব্রুয়ারি দিল্লির ভোটের আগে কৃতিত্ব নিতে নিজেই সেই দাবি তুলেছেন।

অর্থ মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, আয়কর ছাড়ের সীমা না বাড়ানো হলেও আয়করের হারে কিছু পরিবর্তন করে মধ্যবিত্তকে সুরাহা দেওয়ার চেষ্টা হতে পারে। যেমন, ১২ থেকে ১৮ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে ২০% আয়কর আদায় করা হতে পারে। অথবা, ১৫ থেকে ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে আয়করের হার কমিয়ে ২৫% করা হতে পারে। এখন ১২ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা আয়ে ২০% ও ১৫ লক্ষ টাকার উপরের আয়ে ৩০% হারে আয়কর দিতে হয়। এর সঙ্গে আয়কর জমার প্রক্রিয়া আরও সহজ করতে নতুন চেহারায় আয়কর আইনের খসড়া বাজেটের পরে সংসদে পেশ করা হতে পারে। গত জুলাই মাসে মোদী সরকার তৃতীয় বার ক্ষমতায় আসার পরে প্রথম বাজেটে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন আয়কর আইন ঢেলে সাজানোর কথা বলেছিলেন।

Advertisement

আজ আর্থিক উপদেষ্টা সংস্থা বার্কলেজ জানায়, বাজারে কেনাকাটা বাড়াতে বাজেটে আয়কর ছাড় দেওয়া উচিত। বার্কলেজ-এর মুখ্য অর্থনীতিবিদ আস্থা গাদওয়ানির মতে, আয়করের হারে আরও কিছু রদবদল প্রয়োজন। তা হলে রাজস্ব আয়ে লোকসান হলেও তার অঙ্ক বিপুল হবে না। গত বাজেটে আয়করে স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশনের পরিমাণ ২৫ হাজার টাকা বাড়িয়ে ৭৫ হাজার টাকা করা হয়েছিল। এখন নতুন কর ব্যবস্থায় ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়কর দিতে হয় না। ৩ থেকে ৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে ৫% আয়কর দিতে হয়। ৭ থেকে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে ১০%, ১০ থেকে ১২ লক্ষ টাকায় ১৫%, ১২ থেকে ১৫ লক্ষ টাকায় ২০% ও ১৫ লক্ষ টাকার বেশি আয়ে ৩০% হারে আয়কর দিতে হয়। তবে যাঁদের আয় ৭ লক্ষ টাকার কম, তাঁরা ছাড় পান বলে কার্যক্ষেত্রে নয়া কর ব্যবস্থায় ৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে আয়কর দিতে হয় না।

কর বিশেষজ্ঞদের মতে, অর্থ মন্ত্রকের সামনে দু'তিনটি বিকল্প রয়েছে। এক, আয়কর ছাড়ের সীমা বাড়িয়ে ১০ লক্ষ টাকা করা। দুই, ১২ থেকে ১৫ লক্ষের বদলে ১২ থেকে ১৮ লক্ষ টাকা আয়ে ২০% আয়কর আদায় করা। তিন, ১৫ থেকে ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে আয়করের হার ৩০% থেকে ২৫%-এ কমিয়ে আনা। অর্থ মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, আয়করে ছাড় দিতে গেলে ৫০ হাজার কোটি টাকা থেকে ১ লক্ষ কোটি টাকা পর্যন্ত রাজস্ব লোকসান হতে পারে। তবে এটাও ঠিক, বাজারে কেনাকাটায় শ্লথ গতির জন্য জুলাই-সেপ্টেম্বরে আর্থিক বৃদ্ধির হার ৫.৪ শতাংশে নেমে এসেছে। তাই আর্থিক বৃদ্ধিকে চাঙ্গা করার জন্য মানুষের হাতে বাড়তি নগদ তুলে দেওয়া উচিত। আর্থিক উপদেষ্টা সংস্থা নোমুরা-র মতেও, আর্থিক বৃদ্ধিকে চাঙ্গা করতে মোদী সরকার বাজেটে আয়কর ছাঁটাইয়ের পথে হটিবে। গত জুলাইয়ের বাজেটে অর্থমন্ত্রী জানান, ছয় মাসের মধ্যে আয়কর আইনের পর্যালোচনা হবে। সূত্রের খবর, আয়কর হিসাব করার পদ্ধতি সরল হতে পারে। অর্থ বছর, আয়কর পর্যালোচনা বা অ্যাসেসমেন্টের বছর আলাদা করার ক্ষেত্রে বিভ্রান্তি দূর করার চেষ্টা হতে পারে।

কী কী উপায়

আয়কর ছাড়ের সীমা বাড়িয়ে ১০ লক্ষ টাকা করা।

১২ থেকে ১৫ লক্ষের বদলে ১২ থেকে ১৮ লক্ষ টাকা আয়ে ২০% আয়কর আদায় করা।

১৫ থেকে ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে আয়করের হার ৩০% থেকে ২৫%-এ কমিয়ে আনা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement