(বাঁ দিকে) নরেন্দ্র মোদী এবং অরবিন্দ কেজরীওয়াল (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
অণ্ণা হজারের দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনের হাত ধরে রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয়েছিল খড়্গপুর আইআইটির প্রাক্তনী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের। সেই সময় থেকেই তাঁর রাজনীতির বড় মূলধন ‘সততা’। কিন্তু দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলায় সিবিআই এবং ইডির হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর কেজরীর এই ‘সততা’র দাবি নিয়েই প্রশ্ন তুলছে বিরোধী দলগুলি। এই আবহে দিল্লির সদ্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দেওয়ার ‘কারণ’ ব্যাখ্যা করলেন। দাবি করলেন, তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় তিনি কষ্ট পেয়েছেন।
রবিবার কেজরী এ-ও দাবি করেছেন যে, তাঁকে দুর্নীতিগ্রস্ত প্রমাণ করতে ষড়যন্ত্র করেছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শনিবারই শপথ নিয়েছেন আম আদমি পার্টি (আপ)-এর নেত্রী অতিশী মারলেনা। আর তার পরের দিনই দিল্লির যন্তর মন্তরে ‘জনতা কি আদালত’ অনুষ্ঠানে কেজরীওয়াল বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিলেন। তিনি আমাকে এবং মণীশ সিসৌদিয়াকে দুর্নীতিগ্রস্ত প্রমাণ করতে চক্রান্ত করেন। তিনি আমাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চেয়েছিলেন।” দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের ‘কারণ’ ব্যাখ্যা করে কেজরীর সংযোজন, “আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় আমি কষ্ট পেয়েছি। তাই পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিই। আমি শুধু শ্রদ্ধা অর্জন করতে চাই, টাকা নয়।”
তাঁর এবং দিল্লির আপ পরিচালিত সরকারের ‘সততার’ পক্ষে সওয়াল করে সদ্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “যদি অরবিন্দ কেজরীওয়াল অসৎ হতেন, তবে কি বিনামূল্যে বিদ্যুৎ দিতেন? যদি তিনি দুর্নীতিগ্রস্তই হবেন, তবে কি মেয়েদের বিনামূল্যে বাস পরিষেবা দিতেন? হাসপাতালে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা দিতেন?” বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোয় এই ধরনের পরিষেবা নেই কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কেজরী।
প্রসঙ্গত, গত ২১ মার্চ দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে গ্রেফতার হওয়ার পরেও মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেননি কেজরীওয়াল। তিনিই দেশের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী, যিনি গ্রেফতার হওয়ার পরেও মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। কিন্তু জামিনে মুক্তি পাওয়ার পরে আপ প্রধান গত শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ঘোষণা করেন, তিনি মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেবেন। পরের দিন দুপুরে দলীয় এক সম্মেলনে তিনি জানান, দু’দিন পরেই মুখ্যমন্ত্রী পদ ছেড়ে দেবেন তিনি। সঙ্গে এ-ও জানান, পুনরায় ভোটে না জেতা পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর পদে তিনি আর ফিরবেন না।