প্রথম বার ভোটের কালি নিয়ে বুথের বাইরে অরবিন্দ কেজরীবালের ছেলে পুলকিত। ভোট দেওয়ার পরে রেহান বঢরা (ডান দিকে)। শনিবার। ছবি: পিটিআই।
বাবা কি ফের মুখ্যমন্ত্রীর গদিতে বসতে চলেছেন?
সদ্য আঠারোয় পা দেওয়া পুলকিত কেজরীবাল প্রচণ্ড ‘ডিফেন্সিভ’ উত্তর দিলেন, ‘‘মানুষ যাঁকে ভোট দেবেন, তিনিই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হবেন।’’
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের ছেলে পুলকিতের মতোই এবার প্রথম বার ভোট দিলেন রেহান বঢরা। লোকসভা নির্বাচনের আগেই ভোটের বয়স হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তখন পরীক্ষার জন্য ভোট দেওয়া হয়নি। আজ মায়ের সঙ্গে লোদী এস্টেটের সর্দার পটেল স্কুলে এই প্রথম ভোট দিতে এসেছিলেন রেহান। প্রিয়ঙ্কা বঢরার পুত্র রেহানকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, কীসের জন্য ভোট দিলেন? রেহান জবাব দিলেন, ‘‘দেখতে চাই, আমার শহরের অনেক উন্নতি হবে। বিশ্বের সেরা শহরগুলোর মধ্যে আমার শহর থাকবে। মানুষের জন্যই ভোট দিয়েছি।’’
আরও পড়ুন: সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণের দাবি নয় মৌলিক অধিকার
ছেলের মুখে গুছিয়ে উত্তর শুনে পাশে দাঁড়িয়ে হাসছিলেন প্রিয়ঙ্কা। প্রশ্ন করা হল, দিল্লিতে নতুন সরকারের কোন সমস্যার সমাধান করা উচিত? রেহানের উত্তর, ‘‘সকলের জন্য গণ পরিবহণ ব্যবস্থা থাকা উচিত। পড়ুয়াদের জন্য ভর্তুকি দিতে হবে। আমার মতে এটা খুব জরুরি।’’
আর এক মা-ও ছেলের ভোটের জন্য এ বার দিল্লি চলে এসেছেন। দিল্লির বিজেপি সভাপতি মনোজ তিওয়ারি। ভোজপুরি সিনেমার অভিনেতা মনোজকে অবশ্য মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করেনি বিজেপি। দল ক্ষমতায় এলে কে মুখ্যমন্ত্রী হবেন, মনোজ তাই মুখ খুলতে রাজি নন। যমুনা বিহারের স্কুলে ভোট দিতে এসে বললেন, ‘‘মা বারাণসী থেকে এসেছেন। মায়ের আশীর্বাদও আমার সঙ্গে রয়েছে। দিল্লির মানুষ এ বার হিংসা ও ঘৃণার রাজনীতির বিরুদ্ধে ভোট দেবেন।’’
অরবিন্দ কেজরীবাল আশাবাদী, ‘‘আম আদমি পার্টি তৃতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় আসবে বলে আশা করছি।’’ প্রথম বারের ভোটার ছেলের সঙ্গে স্ত্রী, বাবা-মাকে নিয়ে আজ নয়াদিল্লির সিভিল লাইন্সে ভোট দিতে এসেছিলেন অরবিন্দ। বাড়ি থেকে বেরনোর আগে বাবা-মায়ের আশীর্বাদও নিয়েছেন। তাঁর নয়াদিল্লি বিধানসভা কেন্দ্রের সিংহভাগ ভোটারই হয় ভিভিআইপি নয়তো উচ্চপদস্থ আমলা বা সরকারি কর্মচারী। তার পরেও বাজিমাত করতে পারবেন? অরবিন্দ মুচকি হেসে মহিলাদের বেশি করে ভোট দিতে আর্জি জানিয়ে বাড়ি ফিরলেন।
এ বার দিল্লির আর এক ভিভিআইপি ‘নতুন ভোটার’ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। অসম থেকে রাজ্যসভায় নির্বাচিত হওয়ার সুবাদে ১৯৯১ থেকেই তাঁর সরকারি ঠিকানা ছিল গুয়াহাটিতে। সেখানে না থাকলেও খাতায়-কলমে তিনি ছিলেন অসমের প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী হিতেশ্বর শইকিয়ার স্ত্রী হেমপ্রভাব শইকিয়ার নন্দননগরের বাড়ির ভাড়াটে। গত লোকসভাতেও তিনি গুয়াহাটিতে ভোট দেন। এখন তিনি রাজস্থান থেকে রাজ্যসভার সাংসদ। দিল্লিতেই তাঁর ঠিকানা। সকাল সকাল দিল্লির নির্মাণ ভবনে এসে ভোট দিলেন।
কয়েক দিনের শারীরিক অসুস্থতার পরে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে সনিয়া গাঁধীও আজ দশ জনপথ থেকে হাঁটা দূরত্বের নির্মাণ ভবনেই ভোট দিতে এসেছিলেন। রাহুল গাঁধী ভোট দিয়েছেন তাঁর আওরঙ্গজেব লেনের বাড়ির কাছের স্কুলে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ অবশ্য শনিবার দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে ভোট দেননি। তাঁরা দু’জনেই আমদাবাদের ভোটার।