দিল্লির প্রশাসনিক ক্ষমতার রাশ থাকবে কার হাতে? মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজবীবাল, নাকি নরেন্দ্র মোদীর! এর ফয়সালা করতেই এ বার সুপ্রিম কোর্টের যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্র।
আমলা নিয়োগ ঘিরে সংঘাত শুরু হয়েছিল উপ-রাজ্যপাল নজীব জঙ্গ ও কেজরীবাল সরকারের মধ্যে। বিতর্কে বাড়তি ইন্ধন জুগিয়ে নজীবের পাশে দাঁড়ায় কেন্দ্র। বিশেষ নির্দেশিকা জারি করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানায়, আমলা (রাজ্যের অস্থায়ী মুখ্যসচিব) নিয়োগের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ক্ষমতা রয়েছে উপ-রাজ্যপালের হাতে। প্রাথমিক ভাবে ব্যাকফুটে গেলেও পাল্টা আক্রমণ শানাতে থাকেন কেজরী। সম্প্রতি হালে পানি পেয়েছেন রাজ্যের সর্বোচ্চ আদালতের এক শুনানিতে।
পরশু দিল্লি হাইকোর্ট এই সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিতে নিজেদের পর্যবেক্ষণে জানায়, আমলা নিয়োগের অধিকার নির্বাচিত সরকারের হাতেই থাকা উচিত। দিল্লি সরকারের আইনি আধিকারের বিষয়গুলিতে উপ-রাজ্যপালের উচিত নির্বাচিত সরকারের পরামর্শ মেনে চলা। যে ক্ষেত্রে দিল্লি সরকার আইন প্রণয়নে সক্ষম সেখানে উপ-রাজ্যপাল যেন নিজের কর্তৃত্ব না ফলান।
হাইকোর্টের ওই পর্যবেক্ষণে অস্বস্তিতে পড়ে কেন্দ্র। কাল এ নিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহতগির সঙ্গে আলোচনায় বসে কেন্দ্র। তাঁর পরেই আজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, আদালতের ওই পর্যবেক্ষণকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যাবে কেন্দ্র।
এ দিকে আজ, দিল্লি বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনের শেষ দিনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশিকা অবৈধ বলে কেজরীবাল সরকার প্রস্তাব আনলে, তা সর্বসম্মতিতে পাশ হয়। কেন্দ্রের ওই নির্দেশিকা খারিজ করার পাশাপাশি আমলা বদলি ও নিয়োগ যে তাঁর হাতেই তিনি রাখতে চান, তা-ও স্পষ্ট করেছেন কেজরীবাল। আজ তাঁর নির্দেশে দফতর বদল হয়েছে বেশ কিছু আমলার।
সেই বদলি-তালিকায় রয়েছেন দিল্লি সরকারের কর্মিবর্গ দফতরের সচিব অনিন্দ্য মজুমদারও। অস্থায়ী মুখ্যসচিব হিসেবে শকুন্তলা গামলিনের নিয়োগপত্র জারি করেছিলেন অনিন্দ্যবাবু। ক্ষুব্ধ কেজরীবাল তাঁকে পদ থেকে সরানোর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েও পরে তা প্রত্যাহার করেন। কিন্তু এখন দিল্লি হাইকোর্টকে পাশে পেয়ে তড়িঘড়ি কর্মিবর্গ দফতর থেকে সরিয়ে দিল্লি ফিনান্স কর্পোরেশনের দায়িত্বে পাঠানো হয়েছে অনিন্দ্যবাবুকে।