দিল্লি হাইকোর্টের সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে কেজরীবাল। ছবি: পিটিআই।
কেন্দ্রীয় সরকার এখন বিচারপতিদের ফোনেও আড়ি পাতছে— প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সামনে দাঁড়িয়েই এমন গুরুতর অভিযোগ আনলেন অরবিন্দ কেজরীবাল। কিছু ক্ষণের মধ্যেই যদিও কেন্দ্রীয় সরকার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ একেবারে উড়িয়ে দিয়েছে।
এ বার কেজরীবাল অভিযোগ এনেছেন খোদ বিচার ব্যবস্থার অনুষ্ঠানে হাজির হয়েই। দিল্লি হাইকোর্টের সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে সোমবার কেজরীবাল মন্তব্য করেন, ‘‘আমি শুনেছি বিচারপতিদের ফোনেও এখন আড়ি পাতা হচ্ছে। তাঁরা টেলিফোনে কথা বলতেও ভয় পাচ্ছেন।’’ কেজরীর দাবি, বিচারপতিদের সঙ্গে তিনি দেখা করতে গিয়েছিলেন। তখনই তাঁরা টেলিফোনে আড়ি পাতার বিষয়ে আলোচনা করছিলেন। টেলিফোনে কথা না বলার জন্য একে অন্যকে পরামর্শও দিচ্ছিলেন। তাঁদের ভয় ছিল, টেলিফোনে কথা বললে ফোনে আড়ি পাতার সম্ভাবনা থাকবে। কেজরীবাল জানান, সেই সব কথাই তিনি পাশ থেকে শুনে ফেলেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘ জানি না এ সব সত্যি কিনা। তবে এ নিয়ে ব্যাপক ভীতির সৃষ্টি হয়েছে।’’ কেজরী বলেন, বিচারপতিদের ফোনে কোনও ভাবেই আড়ি পাতা যায় না। এমনকী যদি তাঁদের কারও বিরুদ্ধে খারাপ কাজের অভিযোগও থাকে, তা হলেও নয়। মুখ্যমন্ত্রীর মতে, বিচারপতির বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ জোগাড় করতে অন্য উপায় থাকতে পারে। কিন্তু ফোনে আড়ি পাতা বিচার বিভাগের স্বাধীনতার উপর বিরাট আঘাত।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও প্রধান বিচারপতি টি এস ঠাকুরের সামনেই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী এমন গুরুতর অভিযোগ আনায় গুঞ্জন শুরু হয়ে যায়। কেননা বিচারপতি নিয়োগ নিয়ে কিছু দিন ধরে মোদী সরকারের সঙ্গে বিচারবিভাগের টানাপড়েন চলছিল। এই পরিস্থিতিতে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ মোদী সরকারের সামনে বিরাট অস্বস্তির। ফলে কিছু ক্ষণের মধ্যেই অভিযোগ নস্যাৎ করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। আইনমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি দু’বছর ধরে যোগাযোগ মন্ত্রী ছিলাম। বিচারপতিদের ফোনে আড়ি পাতার অভিযোগ পুরোপুরি ভাবে অস্বীকার করছি।’’ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফেও অভিযোগ অস্বীকার করা হয়। প্রধানমন্ত্রী যদিও কেজরীর অভিযোগ নিয়ে মন্তব্য করেননি। লঘু সুরে বলেছেন, ‘‘কোনও দিন আদালতে যাওয়ার সুযোগ হয়নি আমার। কিন্তু শুনছি সেখানকার পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। সেই ছবিটা তো এখানেও দেখতে পাচ্ছি। এটা তো সুবর্ণ জয়ন্তী! আপনারা একটু হাসুন। না হলে ভুল বার্তা যাবে।’’ মোদীর কথায় হেসে ওঠেন বিচারপতিরা।