উপহার: এমকে স্ট্যালিনের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চেন্নাইয়ে। —নিজস্ব চিত্র।
কাল মুখ খোলেননি। সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ এবং জম্মু-কাশ্মীরকে ভেঙে দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল তৈরি নিয়ে আজ প্রতিক্রিয়া জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপের সিদ্ধান্ত নিয়ে কোনও মন্তব্য না-করলেও, যে-পদ্ধতিতে এই বিল পাশ করাল কেন্দ্র, তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন তিনি। আজ তামিলনাড়ুর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এম করুণানিধির মূর্তির আবরণ উন্মোচন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে চেন্নাই আসার পথে কলকাতা বিমানবন্দরে নিজের অসন্তোষ গোপন না-করে তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘‘ওরা (কেন্দ্র) সব দলের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিতে পারত। প্রয়োজনে কাশ্মীরে এই বৈঠক করলে আমরা যেতে পারতাম। স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলতে পারতাম। কাশ্মীরের মানুষের আস্থা অর্জন করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল। এ ভাবে বিল পাশ করানো একেবারেই অগণতান্ত্রিক। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ করছি।’’
লোকসভা ভোটের আগে বিরোধী ঐক্য গড়তে সক্রিয় ছিলেন মমতা। ব্রিগেডে সমাবেশ করেছিলেন বিজেপি-বিরোধী সব দলকে ডেকে। লোকসভা ভোটে বিজেপির বিপুল জয় এবং তার পরে নরেন্দ্র মোদী সরকারের কাশ্মীর-অস্ত্রে বিরোধী শিবির যখন ছত্রভঙ্গ, তখন ভিন্ রাজ্যে বিজেপি-বিরোধী মঞ্চে ফের শামিল হচ্ছেন তিনি। বুধবার চেন্নাইয়ে করুণানিধির প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠানে মমতা ছাড়াও যোগ দেবেন পুদুচেরির কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রী, ভি নারায়ণস্বামী। ডিএমকের সেই মঞ্চে মোদী-শাহের ‘অগণতান্ত্রিক কার্যকলাপ’-এর বিরুদ্ধে সুর উঠবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক শিবির। কারণ, মমতার পাশে দাঁড়িয়ে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপের পদ্ধতির বিরোধিতা করেছেন ডিএমকে সভাপতি, করুণানিধি-পুত্র স্ট্যালিনও। প্রথমে ঠিক ছিল, অন্ধ্র ও তেলঙ্গানার দুই মুখ্যমন্ত্রী ওয়াই জগন্মোহন রেড্ডি এবং কে চন্দ্রশেখর রাও অনুষ্ঠানে থাকবেন। কিন্তু মমতা আজ ডিএমকে নেতৃত্বের কাছে জেনেছেন, তাঁরা থাকছেন না। তাতে অবশ্য ‘স্বস্তি’ই পেয়েছেন তিনি। কারণ, কাশ্মীর-প্রশ্নে কেন্দ্রের পাশে রয়েছেন এই দুই নেতা।
কাশ্মীর সংক্রান্ত বিল পাশের সময় কেন্দ্র যে-ভাবে ওই রাজ্যের দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা ও মেহবুবা মুফতিকে গ্রেফতার করেছে, আজ তারও তীব্র বিরোধিতা করেছেন মমতা। কেন্দ্রকে তাঁর বার্তা, ‘‘এমন কিছু করুন, যাতে ওঁরা নিজেদের ভারতীয় নাগরিক বলে মনে করেন। কাশ্মীরের মানুষ যাতে আতঙ্কিত হয়ে না-পড়েন— তাঁদের মধ্যে সেই বিশ্বাসটা জাগিয়ে তোলা দরকার।’’