Article 370

ইদের আগে কাশ্মীরে কড়াকড়ি কিছুটা শিথিল, আংশিক ভাবে ফিরল টেলিফোন-ইন্টারনেট পরিষেবা

শুক্রবারের প্রার্থনাকেই পরীক্ষামূলক ভাবে বেছে নিল কেন্দ্র। সূত্রের খবর, ‌শুক্রবার দিনটা নির্বিঘ্নে কাটলে বিধিনিষেধ আরও একটু শিথিল হবে উপত্যকায়।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়া দিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৯ ১৩:৩২
Share:

খুলে দেওয়া হয়েছে কাশ্মীরের বেশ কয়েকটি রাস্তা। ছবি: ট্যুইটার

‘‘এখন একটু অসুবিধে হচ্ছে, কিন্তু ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েই যাবে। আমরা খুশি ৩৭০ ধারা রদ হওয়ায়। ’’

‘‘ আমাদের ছেলেমেয়েদের বারণ করেছি এবার ইদে বাড়ি ফিরতে, এত খারাপ ইদ কখনও কাটাইনি।’’

একটু একটু করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে এমনই মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেল কাশ্মীরে। এমনকি যে ৩৭০ ধারা রদ নিয়ে গোটা দেশে শোরগোল, কলেজ খুলতে সেই উপলক্ষ্যকেই উদযাপন করল কলেজ ছাত্ররা। এমন দৃশ্যও দেখা গেল এদিন কাঠুয়ায়।

নাভিশ্বাস উঠেছে পাঁচ দিনে। অবশেষে থমথমে পরিবেশ কিছুটা হলেও স্বাভাবিক হচ্ছে জম্মু-কাশ্মীরে। উপত্যকার অংশবিশেষে ফেরানো হয়েছে ইন্টারন্টে ও টেলি-সংযোগ।স্থানীয় মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে শুক্রবারের প্রার্থনা সারতে পারেন সেই জন্যেও উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্র। যদিও এখনই বাড়তি সেনা সরানো হচ্ছে না। থাকছে কার্ফুও।

আগামী সোমবার ইদ। বৃহস্পতিবার নিজের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আশ্বস্ত করেছেন বাইরে থাকা কাশ্মীরিরা যাতে ইদের আগে ঘরে ফিরতে পারেন সে ব্যাপারে পদক্ষেপ করবে কেন্দ্র। রাজ্যপাল সত্যপাল সিংহও বৃহস্পতিবারই পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দেন। বলেন, নিরাপত্তার কড়াকড়ি শিথিল করা যেতে পারে এবার।

Advertisement

নজরে ইদ, শান্তি বজার রাখতে বদ্ধপরিকর নিরাপত্তারক্ষীরা। ছবি: টুইটার



সব মিলিয়ে তাই শুক্রবারের প্রার্থনাকেই পরীক্ষামূলক ভাবে বেছে নিয়েছিল কেন্দ্র। সূত্রের খবর, ‌শুক্রবার দিনটা নির্বিঘ্নে কাটলে বিধিনিষেধ আরও একটু শিথিল হবে উপত্যকায়। ইতিমধ্যেই উধমপুরে খুলে গিয়েছে স্কুল কলেজ। আগামী কাল গোটা জম্মুতেই স্কুল কলেজ খুলবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কাঠুয়া এবং সাম্বা জেলা থেকেও তুলে নেওয়া হয়েছে ১৪৪ ধারা। রাজ্যপাল সত্যপাল সিংহ আজ বৈঠকে ডোভালকে জানিয়েছেন, পরিস্থিতি এখন অনেকটা স্বাভাবিক।

Advertisement

আরও পড়ুন: কাশ্মীর নিয়ে হস্তক্ষেপের পাক দাবিতে কান দিল না রাষ্ট্রপুঞ্জ, আনল শিমলা চুক্তির কথা
আরও পড়ুন: ইদে ঘরে ফিরবেন, উপত্যকার বাইরে থাকা কাশ্মীরিদের আশ্বাস মোদীর



এদিন শ্রীনগরের প্রধান প্রার্থনাস্থল জামা মসজিদ বন্ধ থাকলেও বিভিন্ন ডোগরা, জম্মু এলাকার ছোট মসজিদগুলি খুলে দেওয়া হয়েছে সাধারণ মানুষের জন্যে। জম্মু কাশ্মীর পুলিশের প্রধান দিলবাগ সিংহ সংবাদ সংস্থাকে জানাচ্ছেন, ‘‘কাশ্মীরবাসী প্রতিবেশীদের সঙ্গে প্রার্থনায় যোগ দিতে পারেন। এই ব্যাপারে কোনও বাধা নেই। তবে নিজের এলাকার বাইরে না বেরনোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে উপত্যকার মানুষকে।’’ এদিন বিকেল থেকে খুলেছে বেশ কিছু এটিম, পেট্রল পাম্পও। সেখানে স্থানীয় মানুষের লম্বা ঢল নেমেছে মানুষের।

দেখুন ভিডিও:


এই শান্তির ছবি এক দিকে যেমন ফুটে উঠছে, অন্য দিকে উপত্যকায় প্রতিটি আনাগোনায় নজরদারিও চলছে। এদিন সিপিএম সর্বভারতীয় সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিকেও শ্রীনগরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আসলে ইদের আগে উপত্যকায় কোনও রকম অশান্তি চায় না কেন্দ্র। আবার এলাকাবাসীর ধর্মীয় ভাবাবেগ যাতে কোনও ভাবে ক্ষুণ্ণ না হয়, সেই বিষয়টিকেও মাথায় রাখতে হচ্ছে। কোনও রকম অশান্তির উস্কানি এড়াতে এখনই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহেবুবা মুফতি বা ওমর আবদুল্লাকে গৃহবন্দি রাখার সিদ্ধান্তেই অনড় থাকছে কেন্দ্র। এর পাশাপাশি ৭০ জন বিচ্ছিন্নতাদীকে ভারতীয় বায়ুসেনার বিশেষ বিমানে করে আগ্রার কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে আসা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার নিজের বক্তৃতায় কাশ্মীরের মানুষের দুরবস্থা কথা স্বীকার করে নেন প্রধানমন্ত্রী।একই সঙ্গে তিনি জম্মু-কাশ্মীরের মানুষে কাছে আবেদন রাখেন যদি বিচ্ছিন্নতাবাদ আর সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কাশ্মীরবাসীরা নিজেরাই রুখে দাঁড়ান, তা হলে ভূস্বর্গের অবস্থার পরিবর্তন সম্ভব।

কাশ্মীর পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরেই গোটা উপত্যকার নিরাপত্তার কড়াকড়ি কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়। অবস্থা পরিদর্শনে যান নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালও। কেন্দ্রকে পুঙ্খানুপুঙ্খ রিপোর্টও পাঠান তিনি। তুমুল সতর্কতার মধ্যেও বিক্ষোভ পুরোপুরি এড়ানো যায়নি। পুলিশ জনতা খণ্ডযুদ্ধ বেধেছে শ্রীনগরেই। ইদের আগে এই ছবিটা বদলের জন্যে আপাতত কেন্দ্র বহিরাগত ইন্ধন রুখতে তৎপর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement