Mukesh Ambani

অম্বানি-কাণ্ডে তদন্তকারী পুলিশ কর্তা সচিনকে সাসপেন্ড

রবিবারই সচিনকে গ্রেফতার করেছিল জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ)। মুকেশ অম্বানির বাড়ির সামনে বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি রাখার ঘটনায় তিনি জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ।

Advertisement

সংবাদসংস্থা

মুম্বই শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২১ ১৬:৩৮
Share:

গ্রেফতারির পর সচিন ওয়াজে।

অম্বানি-কাণ্ডে এ বার সাসপেন্ড করা হল এই মামলারই প্রাক্তন তদন্তকারী অফিসার তথা মুম্বই পুলিশের এনকাউন্টার বিশেষজ্ঞ সচিন ওয়াজেকে। রবিবারই সচিনকে গ্রেফতার করেছিল জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ)। মুকেশ অম্বানির বাড়ির সামনে বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি রাখার ঘটনায় তিনি জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ ছিল। সচিনকে দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করেন এনআইএ-র গোয়েন্দারা। সোমবার সচিনকে সাসপেন্ড করার খবর জানিয়েছে মুম্বই পুলিশ। মুম্বই পুলিশের মুখপাত্র ডিসিপি এস চৈতন্য জানান, স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারের নির্দেশেই সচিনকে আপাতত সাসপেনশনে থাকতে হবে।

Advertisement

বিস্ফোরক পদার্থ, জিলেটিন স্টিকে ঠাসা একটি জলপাই রঙের স্করপিও গাড়ি অম্বানির মুম্বইয়ের বাড়ি অ্যন্টিলার সামনে থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। গত ২৫ ফেব্রুয়ারির ওই ঘটনার তদন্তভার প্রথম দেওয়া হয় মুম্বই পুলিশের স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চের হাতে। যার প্রথম তদন্তকারী কর্তা ছিলেন এই সচিন। তবে তদন্ত যত এগোতে থাকে, ততই সামনে আসতে থাকে সচিনের সঙ্গে ঘটনাটির পুরনো যোগাযোগ। জানা যায়, অম্বানির বাড়ির সামনে পাওয়া ওই গাড়িটি একসময় ব্যবহার করেছেন সচিন নিজে। যদিও তদন্তে নেমে তিনি তা লুকিয়ে যান তাঁর ঊর্ধ্বতনদের কাছে। এমনকি গাড়িটি যে সচিনের কাছে ঘটনাটি ঘটার কিছুদিন আগে পর্যন্তও ছিল এবং গত নভেম্বর থেকে তিনি সেটি ব্যবহার করেছেন, সে কথাও গোপন করেছিলেন সচিন।

বিষয়টি সামনে আসে গাড়ির আসল মালিক ঠানের ব্যবসায়ী মনসুখকে জেরা করার পর। পুলিশকর্তা সচিন যে তাঁর গাড়ির নিয়মিত গ্রাহক ছিলেন, তা মনসুখই জানান। কিন্তু, এরপর রহস্যজনক ভাবে মারা যান মনসুখও। মুম্বই ক্রিকের একটি লেক থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা সন্দেহ করা হলেও মনসুখের স্ত্রী অভিযোগ করেন, হত্যা করা হয়েছে তাঁর স্বামীকে। এক পুলিশ কর্তার সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বেড়িয়েছিলেন তিনি। এর নেপথ্যেও সচিনেরই হাত আছে বলে অভিযোগ করেন মনসুখের স্ত্রী। এফআইআরও করেন। সন্দেহের কারণ হিসেবে তিনি জানান, মনসুখ সাঁতার জানতেন। তাই তিনি জলে ডুবতেই পারেন না। তাছাড়া আত্মহত্যাই যদি করবেন, তবে তার পার্স, মোবাইল, গলার চেন পাওয়া গেল না কেন?

Advertisement

সচিনের বিরুদ্ধে এই সব অভিযোগের ভিত্তিতেই শনিবার তদন্তে নামে এনআইএ। অম্বানি-কাণ্ডে তাঁকে দীর্ঘক্ষণ জেরা করেন গোয়েন্দারা। পরে আদালতে তোলা হলে আদালত সচিনকে হেফাজতে নেওয়ার নির্দেশ দেয়। সোমবার তাঁকে সাসপেন্ড করা হল তাঁর মুম্বই পুলিশ বিভাগের পদ থেকেও। যদিও সচিন পুরো ব্যাপারটিকে মিথ্যে অভিযোগ বলেই দাবি করেছেন। সাসপেনশনের নির্দেশ প্রসঙ্গে একটি হোয়াটসঅ্যাপ স্ট্যাটাস পোস্ট করেছিলেন তিনি। লিখেছিলেন, ‘আমাকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। এর আগেও ২০০৪ সালে আমার সহকর্মী অফিসাররা এ রকমই এক মিথ্যে মামলায় আমার নাম করেছিলেন। সেই ঘটনা এখনও অমীমাংসিত। এ বারও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে চলেছে’।

উল্লেখ্য, অম্বানির বাড়ির সামনে পাওয়া ওই গাড়িতে বিস্ফোরক পদার্থ পাওয়া গেলেও অবশ্য তা দিয়ে বিস্ফোরণ ঘটানোর কোনও স্যুইচ বা ডেটোনেটর পায়নি পুলিশ। তবে যদি কোনও ভাবে ওই বিস্ফোরক ফাটত, তবে তার প্রভাব পড়ত আশপাশের ৩৫০ মিটার এলাকাজুড়ে। বিস্ফোরক বোঝাই ওই গাড়িতে একটি চিঠিও লেখা ছিল অম্বানিদের উদ্দেশে। তাতে বলা হয়েছিল এটা শুধুই ট্রেলর অর্থাৎ ভূমিকা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement