উরিতে হামলা চালাতে মই দিয়ে কাঁটাতার ডিঙোয় জঙ্গিরা

নিয়ন্ত্রণরেখায় কাঁটাতার দিয়ে বিদ্যুৎ বইছে। ছুঁলেই মৃত্যু। তাই সেই কাঁটাতার টপকে উরির সেনাঘাঁটিতে হামলা চালাতে কাঠের মই কাজে লাগিয়েছিল জইশ -ই-মহম্মদের জঙ্গিরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৬ ০৪:০৫
Share:

নিয়ন্ত্রণরেখায় কাঁটাতার দিয়ে বিদ্যুৎ বইছে। ছুঁলেই মৃত্যু। তাই সেই কাঁটাতার টপকে উরির সেনাঘাঁটিতে হামলা চালাতে কাঠের মই কাজে লাগিয়েছিল জইশ -ই-মহম্মদের জঙ্গিরা।

Advertisement

১৮ সেপ্টেম্বর উরি হামলা নিয়ে তদন্তের রিপোর্টে সেনাবাহিনী জানিয়েছে, নিয়ন্ত্রণরেখায় সালামাবাদ নালার কাছে কাঁটাতার টপকে কাশ্মীরে ঢুকেছিল চার জন জইশ-ই-মহম্মদ জঙ্গি। কাঠের মই দিয়ে বৈদ্যুতিক কাঁটাতারের উপরে কার্যত ফুটব্রিজ বানিয়ে ফেলেছিল তারা। তাই বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র, বিস্ফোরক, গ্রেনেড লঞ্চার, খাবারদাবার নিয়ে ঢুকে পড়তে অসুবিধা হয়নি।

উরির জবাবে নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গি শিবিরে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালিয়েছে ভারতীয় সেনা। পাশাপাশি নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে কী ভাবে জইশ জঙ্গিরা ভারতে ঢুকে পড়েছিল, তারও তদন্ত চালাচ্ছিলেন সেনা গোয়েন্দারা।

Advertisement

সেনা সূত্রের বক্তব্য, সালামাবাদ নালার কাছে কাঁটাতারে একটি অংশে ফাঁক ছিল। চার জঙ্গির মধ্যে এক জন সেই ফাঁক দিয়ে পাক-অধিকৃত কাশ্মীর থেকে ভারতের এলাকায় ঢুকে পড়ে। কিন্তু বাকিদের পিঠে অস্ত্রশস্ত্র-বিস্ফোরক-খাবারদাবার ভর্তি বড়সড় রুকস্যাক থাকায়, তাদের পক্ষে সেই ফাঁক দিয়ে ঢোকা সম্ভব ছিল না। তাই প্রথম জন জোড়াতালি দিয়ে একটি মই বানিয়ে ফেলে। কাঁটাতারের উল্টো দিকে থাকা তিন জনের কাছেও একটা মই ছিল। দু’টো মই জুড়ে কাঁটাতারের উপর দিয়ে কার্যত ফুটব্রিজ বানিয়ে ফেলে তারা। চার জঙ্গির সঙ্গে তাদের পথ দেখানোর জন্য দু’জন গাইডও নিয়ন্ত্রণরেখা পর্যন্ত এসেছিল। মহম্মদ কবির আওয়ান ও বশরত নামের দুই গাইড উল্টো দিক থেকে মই টেনে নেয়। যাতে জঙ্গিদের অনুপ্রবেশের কোনও চিহ্ন না থাকে।

এই তদন্ত থেকেই সেনার অন্দরমহলের গাফিলতির প্রশ্নও উঠেছে। যে ভাবে মই বানিয়ে জঙ্গিরা কাঁটাতার টপকেছিল তাতে যথেষ্ট সময় লাগার কথা। সেনার নিয়মিত সময়ের ব্যবধানে ওই সব এলাকায় টহল দেওয়ার কথা। তা সত্ত্বেও জঙ্গিদের কার্যকলাপ কী করে নজর এড়াল, সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। প্রাক্তন সেনা কর্তারা বলছেন, এর দু’টি ব্যাখ্যা। এক, নিয়ন্ত্রণরেখায় নজরদারিতে গাফিলতি ছিল। দুই, সেনার মধ্যেই জঙ্গিদের কোনও চর ছিল। যে টহলদারি বাহিনীর অবস্থান সম্পর্কে জঙ্গিদের সতর্ক করে।

গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, জঙ্গিরা হামলার এক দিন আগে কাঁটাতার ডিঙোয়। তার পরে রাত কাটায় সুখদার নামে একটি গ্রামে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement