লেফটেন্যান্ট কর্নেল কর্ণবীর সিংহ নাট। — ফাইল চিত্র।
জম্মু এবং কাশ্মীরের কুপওয়ারায় অভিযানে গিয়ে মুখে গুলি খেয়েছিলেন। ২০১৫ সালের ঘটনা। সেই থেকে আট বছর ধরে হাসপাতালে কোমায় পড়েছিলেন জওয়ান। রবিবার লড়াই শেষ হল। মৃত্যু হল লেফটেন্যান্ট কর্নেল কর্ণবীর সিংহ নাটের।
১৬০ নম্বর ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটেলিয়নের টেরিটোরিয়াল আর্মি (জম্মু এবং কাশ্মীর রাইফেলস)-এর সেকেন্ড-ইন-কমান্ড ছিলেন নাট। ২০১৫ সালের ২২ নভেম্বর কুপওয়ারার হাজি নাকা গ্রামে অভিযানে নেমেছিল সেনা। বিশেষ সূত্রে খবর পেয়েছিল, ওই গ্রামে লুকিয়ে রয়েছেন জঙ্গিরা। তার আগে ২০ বছর ধরে সেনাবাহিনীতে ছিলেন নাট। যথেষ্ট অভিজ্ঞ এবং দক্ষ অফিসার বলে পরিচিত ছিলেন। ১৯৯৮ সালে চেন্নাইয়ের অফিসার্স ট্রেনিং অ্যাকাডেমি থেকে পাশ করে সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। সেখানে ১৪ বছর কাজ করার পরে টেরিটোরিয়াল আর্মিতে যোগ দিয়েছিলেন।
২০১৫ সালের ১৭ নভেম্বর কুপওয়ারাতে জঙ্গি-বিরোধী অভিযান শুরু করে ৪১ নম্বর রাষ্ট্রীয় রাইফেলস। নেতৃত্ব ছিলেন কর্নেল সন্তোষ মহাদিক। এনকাউন্টার করতে গিয়ে জঙ্গিদের গুলিতে তিনি নিহত হন। নাটের মুখে এসে লাগে কালাশনিকভের বুলেট। জ্ঞান হারানোর আগে তিন সঙ্গীর প্রাণ বাঁচিয়েছিলেন তিনি। প্রথমে তাঁকে শ্রীনগরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে দিল্লির আর্মি রিসার্চ অ্যান্ড রেফারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় নাটকে। তার পর আট বছর কেটেছে। হাসপাতালের বিছানায় সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পড়ে ছিলেন নাট। চিকিৎসকদের ভাষায় যাকে বলে ‘ভেজিটেটিভ স্টেট’। তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন বলে বছরের পর বছর হাসপাতালের বাইরে অপেক্ষা করে থেকেছেন নাটের স্ত্রী নভরীত, দুই সন্তান গুণিত, অস্মিত, বাবা-মা।
নাট আর ফেরেননি। নাটের রেজিমেন্টে ছিলেন কর্নেল অনিল আলাঘ। এখন অবসর নিয়েছেন। তিনি সমাজমাধ্যমে নাটের এত বছরের দীর্ঘ লড়াই, মৃত্যু এবং তাঁর পরিবারের খবর জানিয়ে পোস্ট দিয়েছেন। লিখেছেন, ‘‘আমি চাইব, সাধারণ মানুষ যেন বোঝেন, আমাদের জওয়ান এবং তাঁর পরিবার কতটা আঘাত সহ্য করে থাকেন।’’