জঙ্গিদের ডেরা থেকে উদ্ধার হওয়া অস্ত্র। ছবি সৌজন্য টুইটার।
মণিপুরে এনএসসিএন (আইএম) জঙ্গিদের গোপন ডেরায় অভিযান চালিয়ে প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করল সেনা। উদ্ধার হওয়া অস্ত্রশস্ত্রের মধ্যে ছিল এমআই-১৬ মার্কিন অ্যাসল্ট রাইফেল, ১৫০ রাউন্ড গুলি-সহ প্রচুর স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র। সেনা সূত্রে খবর, আটক করা হয়েছে এক জঙ্গিকেও।
সেনার কাছে অনেক দিন ধরেই খবর আসছিল, রাজ্যের বেশি কিছু জায়গায় এনএসসিএন (আইএম) জঙ্গিরা ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে তোলাবাজি চালাচ্ছে তারা। সম্প্রতি গোপন সূত্রে সেনা খবর পায় কেকরু নাগা গ্রামে জঙ্গিদের দেখা গিয়েছে। সেখানে তোলাবাজি চালাচ্ছিল জঙ্গিরা। গত ৫ জুলাই রাতে পুলিশের সঙ্গে অভিযানে নামে সেনা। তখনই জঙ্গিদের ওই গোপন ডেরার সন্ধান পায় তারা।
সেনা সূত্রে জানানো হয়েছে, তাদের উপস্থিতি টের পাওয়া মাত্রই জঙ্গিরা ওই ডেরা ছেড়ে পালিয়ে যায়। তবে পালানোর সময় কোনও অস্ত্রশস্ত্র নেওয়ার সুযোগ পায়নি তারা। প্রচুর গোলাবারুদ, পোশাক-সহ বেশ কিছু জিনিস উদ্ধার হয় ওই ডেরা থেকে। জঙ্গিদের এই ডেরা পুরো গুঁড়িয়ে দেয় সেনা।
সেনা সূত্রে আরও জানানো হয়েছে, গ্রামবাসীদের ভিড়ে মিশে যাওয়ার চেষ্টা করছিল এক জঙ্গি। তখনই তাকে আটক করা হয়। এ রকম গোপন ডেরা আর কোথায় কোথায় রয়েছে তার সন্ধান চালানো হচ্ছে বলেও এক সেনা আধিকারিক জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে গোয়েন্দা, পুলিশ ও স্থানীয় মানুষের সহযোগিতা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ভারত-শ্রীলঙ্কা ম্যাচে কূটনৈতিক রহস্য: মাঠের উপর কাশ্মীর-স্লোগান নিয়ে বিমানের চক্কর
আরও পড়ুন: কাটমানি ফেরতের দাবিতে বিজেপির মিছিল, গোবরডাঙায় ধুন্ধুমার
১৯৮০ সালে এনএসসিএন (আইএম) তৈরি হয়। দল চালাতেন থুইংগালেং মুইভা। ইসাক চিসি সু নামে আরও এক শীর্ষ মাপের নেতাও এই দায়িত্বে ছিলেন। সে সময় থেকেই মণিপুরে এই জঙ্গিগোষ্ঠী অত্যন্ত সক্রিয় ছিল। হত্যা, তোলাবাজি, সেনাদের উপর হামলার মতো বহু কাজে জড়িত ছিল এরা। ১৯৯৭ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি হয় এই জঙ্গিগোষ্ঠী। তখন থেকেই আলোচনার কাজ চলছিল। ২০১৫-তে মোদী সরকারের সঙ্গেও একপ্রস্থ চুক্তিও হয়।
এই জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে এখন সংঘর্ষবিরতি চলছে। সংঘর্ষবিরতি চুক্তি অনুযায়ী এনএসসিএন (আইএম)-এর নির্দষ্ট ক্যাম্প রয়েছে। সেই ক্যাম্পের বাইরে অস্ত্র নিয়ে যাওয়ার কোনও অনুমতিই নেই এনএসসিএন সদস্যদের। কিন্তু সম্প্রতি জঙ্গিদের এই গোপন ডেরা এবং সেখান থেকে প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার হওয়ার বিষয়টি নতুন করে ভাবাতে শুরু করেছে সেনাকে। এমন আরও কত গোপন ঘাঁটি আছে তার হদিশ পেতেই জোরকদমে অভিযান চালানো শুরু করেছে সেনা।