সেনাপ্রধান এম এম নরবণে— ফাইল চিত্র।
‘যুদ্ধের’ প্রস্তুতি সরেজমিনে দেখতে এসে শান্তির পক্ষে সওয়াল করলেন জেনারেল মনোজ মুকুন্দ নরবণে। শুক্রবার দু’দিনের লাদাখ সফরের দ্বিতীয় দিনে তাঁর মন্তব্য, ‘‘প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় (এলএসি) উত্তেজনা রয়েছে। সতর্কতামূলক সেনা মোতায়েন করাও হয়েছে।’’ তবে সেই সঙ্গেই আত্মবিশ্বাসী ভারতীয় সেনাপ্রধান বলেন, ‘‘আমরা নিশ্চিত, আলোচনার মাধ্যমেই এলএসি-পরিস্থিতির সমাধান সম্ভব।’’
আড়াই মাস পূর্ণ হওয়ার আগেই ফের লাদাখে পৌঁছে আজ জেনারেল নরবণে (এলএসি) সম্ভাব্য চিনা হামলা ঠেকাতে ভারতীয় সেনার প্রস্তুতির খতিয়ে দেখেছেন। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘‘এলএসি-তে মোতায়েন সেনা অফিসার এবং জেসিও (জুনিয়র কমিশনড অফিসার)-দের সঙ্গে আমার আলোচনা হয়েছে। ভারতীয় জওয়ানদের মনোবল তুঙ্গে। ভারতীয় সেনা যে কোনও চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে প্রস্তুত।’’ বৃহস্পতিবার দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠকে একই ভাবে চিনা-চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার দাবি করেছিলেন, চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ (সিডিএস) জেনারেল বিপিন রাওয়ত।
সেনা সূত্রের খবর, দু’দিনের লাদাখ সফরে এসে বৃহস্পতিবার লেহ্তে সেনা আধিকারিকদের সঙ্গে এলএসি বিশেষত, প্যাংগং পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেন জেনারেল নরবণে। আজ তিনি বলেন, ‘‘সতর্কতা মূলক ভাবে সেনা মোতায়েন করা হলেও আমরা এলএসি বরাবর অবস্থান করছি।’’ চিনের তরফে গতকাল ভারতীয় সেনার বিরুদ্ধে এলএসি লঙ্ঘনের অভিযোগ করা হলেও তা খারিজ করেছেন সেনাপ্রধান। তবে সেই সঙ্গেই তাঁর আশ্বাস, ‘‘পরিস্থিতি তৈরি হলে আমাদের অফিসার এবং জওয়ানেরা দেশকে গর্বিত করবে।’’
আরও পড়ুন: নজরে লাদাখ, আজ মস্কোয় মুখোমুখি রাজনাথ ও চিনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রী
গত ১৫ জুন পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকার পেট্রোলিং পয়েন্ট-১৪-র কাছে চিনা ফৌজের সঙ্গে সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় সেনার মৃত্যু হয়েছিল। জখম হয়েছিলেন বেশ কয়েকজন জওয়ান। এর পরে লাদাখ সফরে গিয়ে জেনারেল নরবণে বলেছিলেন, ‘‘আমাদের তরফ থেকে কোনও উস্কানি দেওয়া হবে না। কিন্তু সীমান্ত রক্ষায় কোনও আপস করবে না ভারতীয় সেনা।’’ তাঁর এই মন্তব্য যে নিছক কথার কথা ছিল না, গত ২৯ অগস্ট রাতে প্যাংগং হ্রদের দক্ষিণে ভারতীয় এলাকায় অনুপ্রবেশ করতে গিয়ে টের পেয়েছে লাল ফৌজ। ভারতীয় সেনার প্রতিরোধে তাদের পিছু হটতে হয়েছে।
আরও পড়ুন: লাদাখ-কাণ্ডের জন্য দায়ী চিন, জানাল বিদেশমন্ত্রক
প্যাংগংয়ের দক্ষিণে নতুন করে অশান্তির জেরে চুশুলে দু’তরফের ব্রিগেডিয়ার স্তরের বৈঠক হলেও তাতে তেমন ‘অগ্রগতি’ হয়নি বলে সেনার একটি সূত্রের খবর। এই পরিস্থিতিতে উত্তেজনা প্রশমনে আরও উচ্চ পর্যায়ের সেনা আধিকারিকদের বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে বলে ওই সূত্রের খবর।