‘বন্ধু’ সারসকে খাওয়াচ্ছেন আরিফ। ছবি: সংগৃহীত।
বন্ধুবিচ্ছেদ হলে যেমন উপলব্ধি হয়, ঠিক সে রকমই উপলব্ধি হচ্ছিল তাঁর। ‘বন্ধু’ সারস সম্পর্কে এক সাক্ষাৎকারে কথাই বললেন উত্তরপ্রদেশের অমেঠীর বাসিন্দা আরিফ খান গুর্জর। তাঁর কথায়, “অনেক দিনের সম্পর্কে আমরা একে অপরের বন্ধু হয়ে উঠেছিলাম। বন্ধুর সঙ্গে বিচ্ছেদ হওয়ায় খুবই মনখারাপ লাগছিল। বিচ্ছেদ হলে যেমনটা হয় আর কী!”
তাঁর বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া সারসটি এখন কানপুর চিড়িয়াখানায় খাঁচাবন্দি। তাই আরিফের মন ভাল নেই। কয়েক দিন আগেই তাঁর বন্ধুর সঙ্গে দেখা করে এসেছেন আরিফ। তাঁর কথায়, “সারসটিকে খাঁচাবন্দি করে রাখা দেখে আমার খুব একটা ভাল লাগেনি। আমি চাই ওকে ছেড়ে দেওয়া হোক। বা কোনও পাখিরালয়ে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হোক।”
আরিফকে দেখার পর যে ভাবে আনন্দে লাফিয়ে উঠেছিল সারসটি, সেই ভিডিয়োও ভাইরাল হয়েছে। এ প্রসঙ্গে আরিফকে জিজ্ঞাসা করা হয় যে, বন্ধুর সঙ্গে দেখা হওয়ার পর কী করলেন? আরিফ বলেন, “আমাকে দেখেই চিনতে পেরেছিল সারসটি। ওকে বলেছিলাম, কেমন আছ বন্ধু। আমার কাছে আসার জন্য ছটফট করছিল। ওকে উড়তে বলেছিলাম। ওকে দৌড়তে বলেছিলাম। আমার কথাতেই সারসটি উড়ছিল, দৌড়চ্ছিল।”
কিন্তু খাঁচার মধ্যে বন্ধুকে বন্দি অবস্থায় দেখে তাঁর খুব একটা ভাল লাগেনি। তাই সরকারের কাছে আবেদন করেছেন, সারসটিকে যেন তাঁর দলের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। বছরখানেক আগে বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে একটি মাঠের মধ্যে আহত অবস্থায় সারসটিকে উদ্ধার করেন আরিফ। সেটিকে সেবাশুশ্রূষা করে ছেড়ে দেন। কিন্তু বার বারই আরিফের কাছে ফিরে এসেছে। আরিফ যেখানে যেতেন, তাঁর সঙ্গে উড়ে উড়ে যেত সারসও। আরিফ-সারসের এই ‘বন্ধুত্ব’ অমেঠীর ‘জয়-বীরু’ হিসাবে পরিচিতি পায়। ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই আরিফের বিরুদ্ধে প্রাণী সুরক্ষা আইনে মামলা রুজু হয়। তার পরই আরিফের বাড়ি থেকে সারসটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়।
যদিও আরিফের দাবি, তাঁর বাড়িতে সারসটিকে রাখতেন না। জঙ্গলেই থাকত তাঁর ‘বন্ধু’। কিন্তু খিদে পেলে তাঁর বাড়িতে চলে আসত।