গত ৯ জুলাই বিকাশ দুবেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। —ফাইল চিত্র।
তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে অপরাধ জগতেরর সঙ্গে যুক্ত ছিল সে। খুন, খুনের চেষ্টা-সহ প্রায় ৬০টি মামলা ঝুলছিল। তা সত্ত্বেও গ্যাংস্টার বিকাশ দুবে বার বার জামিনে ছাড়া পেয়ে যাচ্ছিল কী ভাবে? উত্তরপ্রদেশ সরকারের উদ্দেশে এ বার এই প্রশ্নই ছুড়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। আদালতের বক্তব্য, গুরুতর অপরাধমূলক মামলায় নাম থাকা সত্ত্বেও বার বার বিকাশের জামিন পেয়ে যাওয়াটা আসলে প্রশাসনিক ব্যর্থতা।
গত ১০ জুলাই পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে মৃত্যু হয় বিকাশের। আদালতের নজরদারিতে সেই ঘটনার তদন্ত হওয়া উচিত, এমন দাবি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একাধিক জনস্বার্থ মামলা জমা পড়েছিল। সোমবার প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদে নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ সেগুলির শুনানি করছিল। সেখানেই তিরষ্কৃত হয় উত্তরপ্রদেশ সরকার।
এ দিন প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদে বলেন, ‘‘আমরা হতবাক যে, ভূরি ভূরি মামলা থাকা সত্ত্বেও বিকাশ দুবের মতো একটা লোক বার বার জামিন পেয়ে গিয়েছে। শেষমেশ আট পুলিশ কর্মীকেও খুন করেছে সে। এতে প্রশাসনিক ব্যর্থতাই ফুটে উঠেছে। ঢের আগেই যাকে জেলে পোরা উচিত ছিল, সে কিনা এত দিন জামিনে ঘুরছিল।’’
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর সর্বশক্তিমান ভাবমূর্তিই দেশের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা, তোপ রাহুলের
এত দিন যে যে মামলায় বিকাশ দুবে জামিন পেয়েছে, সেই সংক্রান্ত যাবতীয় কাগজপত্র চেয়ে পাঠিয়েছে শীর্ষ আদালত। সেই সঙ্গে রাজ্যে আইনের শাসনকে কার্যকর করতে হবে বলে উত্তরপ্রদেশ সরকারকে নির্দেশও দেয়। আদালতের কথায়, ‘‘এটা শুধু একটি মাত্র ঘটনা নয়। বরং গোটা শাসনব্যবস্থাই বিপন্ন হওয়ার মুখে। রাজ্যে আইনের শাসন কার্যকর করা আপনাদের কর্তব্য।’’
বিকাশ দুবের মৃত্যুতে ইতিমধ্যেই একটি তদন্ত কমিটি গড়েছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। সেই কমিটিতে শীর্ষ আদালতের এক জন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এবং এক জন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিককে সামিল করতে হবে বলেও এ দিন নির্দেশ দেয় আদালত, যাতে সম্মত হয়েছে যোগী সরকার।
আরও পড়ুন: সপ্তাহে ২ দিন রাজ্যে সম্পূর্ণ লকডাউন, এ সপ্তাহে বৃহস্পতি এবং শনিবার
নব্বইয়ের দশকে অপরাধ জগতে পা রাখা বিকাশ দুবের বিরুদ্ধে কমপক্ষে ৬০টি মামলা ঝুলছিল। কমপক্ষে ১৫ জনকে খুন করার অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। ন’টি মামলা ছিল খুনের চেষ্টার। এ ছাড়াও মাদক পাচার আইনে দুটি, গ্যাংস্টার আইনে সাতটি, গুন্ডা দমন আইনে ছ’টি, বেআইনি অস্ত্র রাখার দায়ে তিনটি মামলা ঝুলছিল তার বিরুদ্ধে। এর পাশাপাশি আরও অনেক মামলা দায়ের হয়েছিল তার বিরুদ্ধে।
গত ৩ জুলাই কানপুরে নিজের শাগরেদদের সঙ্গে মিলে আট পুলিশকর্মীকে খুন করে বিকাশ দুবে। বেশ কিছু দিন পালিয়ে বেড়ানোর পর ৯ জুলাই মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়িনীতে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ১০ জুলাই কানপুরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে মৃত্যু হয় তার।