১২ জুলাই পর্যন্ত তিহাড়েই থাকতে হবে সুকন্যা মণ্ডলকে। ফাইল চিত্র।
জেল হেফাজতের মেয়াদ বৃদ্ধি হল অনুব্রত মণ্ডলের কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের। আগামী ১২ জুলাই পর্যন্ত তাঁকে জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালত। একই সঙ্গে অনুব্রতের হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারীরও জেল হেফাজতের মেয়াদ বৃদ্ধি হয়েছে। অর্থাৎ, আগামী দু’মাস তিহাড় জেলেই থাকতে হবে সুকন্যা এবং মণীশকে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে গরমের ছুটির পর, আদালত খুললে। তবে এই মামলায় জামিনের আর্জি জানিয়ে একটি মামলা করেছেন সুকন্যা। সেটির শুনানি হতে পারে ২৬ মে।
গত ২৬ এপ্রিল দিল্লিতে ইডির সদর দফতরে সুকন্যাকে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদের পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। ইডি ৩১ বছরের সুকন্যাকে তিন দিন নিজেদের হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তার পর থেকে সুকন্যা তিহাড় জেলে। ইতিমধ্যে ইডি অনুব্রতের পাশাপাশি সুকন্যার বিরুদ্ধেও চার্জশিট দায়ের করেছে। সুকন্যার তরফে জামিনের আর্জিতে বলা হয়েছে, ইডি তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাঁর বিরুদ্ধে চার্জশিট দায়ের করে ফেলেছে। তা হলে আর কেন সুকন্যাকে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রাখা হবে? সুকন্যার বেশ কিছু শারীরিক সমস্যা রয়েছে বলেও জামিনের আর্জিতে জানানো হয়েছে।
ইডি সূত্রের খবর, সুকন্যা অনুব্রতের যাবতীয় ব্যবসা, গরু পাচার থেকে আয়ের কালো টাকা দেখাশোনা করতেন। কেষ্ট-কন্যা নিজে দাবি করেছিলেন, তাঁর নামে ভোলে বোম চালকল, এএনএম অ্যাগ্রোটেক, নীড় ডেভেলপারের মতো সংস্থা থাকলেও এ সবের বিষয়ে তিনি কিছু জানতেন না। সবটাই তাঁর বাবা জানেন। তিনি শুধু ব্যাঙ্কের নথি, চেকবুকে সই করে দিতেন। তাঁর অ্যাকাউন্টে নগদ টাকা জমা হওয়ার বিষয়েও তাঁর কিছু জানা ছিল না। কিন্তু অনুব্রত, মণীশ কোঠারি দু’জনেই জানিয়েছেন, সুকন্যা ব্যবসায়িক লেনদেন, ব্যাঙ্কের লেনদেন দেখাশোনা করতেন। অনুব্রতের বাড়ির পরিচারক বিদ্যুৎবরণ গায়েনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নমিনি হিসাবে সুকন্যার নাম ছিল। সুকন্যার ইমেল আইডি কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎবরণ গায়েনের আয়কর রিটার্ন জমা করা হত। সুকন্যার ডাকনাম ‘রুবাই’ ব্যবহার করে সেই ইমেল আইডি তৈরি হয়েছিল। ইডি অনুব্রত-সুকন্যাদের বিরুদ্ধে চার্জশিটে জানিয়েছে, অনুব্রতের বেআইনি আয়ের মধ্যে গরু পাচারের ঘুষের টাকার সঙ্গে জেলা পরিষদ থেকে তোলাবাজি, সরকারি প্রকল্পের বিনিময়ে ঘুষের টাকাও থাকত।
গত শনিবার দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে সুকন্যা মণ্ডলের হয়ে জামিনের আর্জি দায়ের করেছিলেন তাঁর আইনজীবী অমিত কুমার। বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক রঘুবীর সিংহ ইডির বক্তব্য জানতে চেয়ে নোটিস জারি করেন।