মুকেশ অম্বানীর বাড়ি থেকে কয়েক মিটার দূরে রাখা বিস্ফোরক ভর্তি সেই গাড়ি। (ডান দিকে) মুকেশ অম্বানী।
অম্বানী পরিবারকে তারা কোনও হুমকি চিঠি দেয়নি। মুকেশ অম্বানী ও তাঁর পরিবারকে হুমকি চিঠির ‘দায় স্বীকারের’ ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই পাল্টা বার্তা দিয়ে এমনটাই দাবি করল জঙ্গি সংগঠন জইশ উল হিন্দ। পাশাপাশি তারা এটাও দাবি করেছে, নেটমাধ্যম এবং সংবাদমাধ্যমে যে চিঠিটি ছড়িয়ে পড়েছে সেটা সম্পূর্ণ ‘ভুয়ো’।
জইশ উল হিন্দ-এর এই দাবির বেশ কয়েকটি প্রশ্ন ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের, তা হলে হুমকি চিঠি কারা লিখেছে? জইশ উল হিন্দ দায় স্বীকার করার পরেও কেন বিষয়টিকে ‘ভুয়ো’ বলছে? জইশ-এর নামে করে কারা লিখল এই চিঠি? তদন্তের মোড় ঘোরাতেই কি এই কৌশল নিল জঙ্গি সংগঠনটি? তবে জইশ এই চিঠির দায় নিতে অস্বীকার করলেও তদন্তকারীরা কিন্তু এই বিষয়ে ফাঁকফোকর রাখতে চাইছেন না।
জঙ্গি সংগঠনটি নেটমাধ্যমে আরও একটি বার্তা ছেড়েছে তাতে বলা হয়েছে, ‘বিশ্বাসঘাতক’দের কাছ থেকে তারা টাকা নেয় না। এবং তাদের লড়াই মুকেশ অম্বানীর সঙ্গে নয়। সেই ব্যানারে লেখা হয়েছে, ‘জইশ উল হিন্দ কোনও ক্ষতি করবে না অম্বানীদের। তাদের লড়াই বিজেপি এবং আরএসএস-এর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে। ভারতে নিরীহ মুসলিমদের প্রতি নরেন্দ্র মোদীর অত্যাচারের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই। অম্বানী নয়, আমাদের লড়াই ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে’।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি মুকেশ অম্বানীর বাড়ি ‘অ্যান্টিলা’ থেকে কয়েক মিটার দূরে একটি জলপাই রঙা স্করপিও থেকে জিলেটিন স্টিক উদ্ধার হয়। গাড়ির ভিতরে একটি হুমকি চিঠিও পাওয়া গিয়েছিল। তাতে অম্বানী পরিবারকে উদ্দেশ করে লেখা ছিল, ‘এটা একটা মহড়া মাত্র। এর পর পুরো পরিবারকেই খতম করা হবে। তার বন্দোবস্ত হয়ে গিয়েছে।’ বিস্ফোরক-সমেত গাড়ি এবং হুমকি চিঠি ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায়। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে হুমকি চিঠিটা জইশ উল হিন্দ জঙ্গি সংগঠনের। ২৮ ফেব্রুয়ারি জঙ্গি সংগঠনটি ওই চিঠির দায় স্বীকার করে। কিন্তু তার পর আবার জঙ্গি সংগঠনটি চিঠির বিষয়টি অস্বীকার করায় রহস্য আরও ঘনীভূত হয়েছে।
মুম্বই পুলিশের সঙ্গে যৌথ ভাবে ঘটনাটির তদন্ত করছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। তদন্তকারীরা মুলুন্দ টোল প্লাজার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছেন। মুকেশ অম্বানীর বাড়ির সামনে যে ব্যক্তিকে স্করপিওটি রাখতে দেখা গিয়েছিল, তাঁকে শেষ বারের মতো মহারাষ্ট্রের সীমানায় দেখা গিয়েছে বলে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন।
মুম্বই পুলিশের মুখপাত্র ডিসিপি এস চৈতন্য জানিয়েছেন, সম্প্রতি যে বার্তা ছেড়েছে জইশ উল হিন্দ তার উৎস খোঁজার কাজ শুরু করেছেন তদন্তকারীরা।