পোখরান টেস্ট রেঞ্জে ‘নাগ’ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা। ছবি: পিটিআই।
লক্ষ্যভেদের পরীক্ষায় সসম্মানে পাশ করল ভারতীয় ‘প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা’ (ডিআরডিও)-র তৈরি নয়া ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটে রাজস্থানের পোখরানে সফল পরীক্ষা হয় তৃতীয় প্রজন্মের ‘নাগ’ ক্ষেপণাস্ত্রের।
ডিআরডিও জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্র বাহক ‘ন্যামিকা’ (আদতে রাশিয়ার তৈরি বিএমপি-২ ‘ইনফ্যান্ট্রি কমব্যাট ভেহিকল’) থেকে একটি ট্যাঙ্ককে লক্ষ্য করে ‘নাগ’-কে ছোড়া হয়েছিল। শুধু নিখুঁত লক্ষ্যভেদই নয় বিস্ফোরকযুক্ত আসল ‘ওয়ারহেড’ বসানো ‘গাইডেড’ ক্ষেপণাস্ত্রটি লক্ষ্যবস্তুকে ধ্বংস করতেও সমর্থ হয়েছে।
এ দিন চূড়ান্ত দফার পরীক্ষায় সফল হওয়ায় দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রটির ভারতীয় সেনায় অন্তর্ভুক্তির পথ খুলে গেল। ডিআরডিও সূত্রের খবর, দ্রুত এর উৎপাদন শুরু করা হতে পারে। সফল পরীক্ষার জন্য প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ এ দিন ডিআরডিও এবং ভারতীয় সেনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
গত বছর থর মরুভূমির অন্দরে পোখরান টেস্ট রেঞ্জে কয়েক দফায় ‘নাগ’-এর কর্মক্ষমতা পরীক্ষা করা হয়েছিল। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর, দিন, রাত এবং প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যে কার্যকরিতা প্রমাণে সফল হয় এই ক্ষেপণাস্ত্র। প্রসঙ্গত, প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত কেনাবেচার দায়িত্বপ্রাপ্ত ‘ডিফেন্স অ্যাকুইজিশন কাউন্সিল’ সেনাবাহিনীতে ‘নাগ ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি’ (নেমিস) অন্তর্ভুক্তিতে সায় দিয়েছে ইতিমধ্যেই। ডিআরডিও এই ক্ষেপণাস্ত্রের নকশা এবং নির্মাণ করে। তাতে লঞ্চপ্যাড থেকে প্রতিপক্ষের ট্যাঙ্কে আঘাত হানতে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র এবং ক্ষেপণাস্ত্রবাহী যান রয়েছে।
আরও পড়ুন: এ বারের ম্যাচ বাঁচানো কঠিন ক্যাপ্টেন ইমরানের, বলছে তামাম পাকিস্তান
মাটিতে ক্ষেপণস্ত্রবাহী যান বা আকাশে যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া যায় নাগের নয়া সংস্করণ। মাটি থেকে ছুড়লে ৫০০ মিটার থেকে ৪ কিলোমিটার দূরত্বে থাকা ট্যাঙ্ককে গুঁড়িয়ে দিতে পারে এটি। আকাশ থেকে ছুড়লে সাত থেকে ১০ কিলোমিটার দূরত্ব পর্যন্ত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে।
আরও পড়ুন: বিনামূল্যে করোনার টিকা, ১৯ লক্ষ চাকরি, বিহারবাসীকে প্রতিশ্রুতি নীতীশের
আশির দশকে ডিআরডিও ‘ইন্টেগ্রেটেড মিসাইল ডেভলপমেন্ট প্রজেক্ট’-এর আওতায় যে পাঁচটি ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির কাজ শুরু করেছিল, ‘নাগ’ তার অন্যতম। এই প্রকল্পের আওতায় বাকি ক্ষেপণাস্ত্রগুলি হল অগ্নি, পৃথ্বী, আকাশ এবং ত্রিশূল। অগ্নি, পৃথ্বী এবং আকাশ ইতিমধ্যেই সেনার হাতে। বাতিল হয়েছে ‘ত্রিশূল’ প্রকল্প। পরীক্ষা চলাকালীন একাধিক বার ‘নাগ’-এর আধুনিকীকরণের কাজ করেছে ডিআরডিও।