— প্রতীকী ছবি।
রাজস্থানের কোটায় আবার এক পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা। গত ৪৮ ঘণ্টায় এ নিয়ে দ্বিতীয় ঘটনা এটি। জানা গিয়েছে, শুক্রবার বিহারের বাসিন্দা ওই ছাত্রের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় কোটার মহাবীর নগর এলাকা থেকে। এ বছর এ নিয়ে ১৮টি অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটল কোটায়।
প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সফল হতে এখন ভারতের বিস্তীর্ণ অংশের তরুণদের লক্ষ্য থাকে কোটায় গিয়ে প্রশিক্ষণ নেওয়ার। কিন্তু ইদানীং সেই কোটা খবরের শিরোনামে কমবয়সি পড়ুয়াদের অস্বাভাবিক মৃত্যুর কারণে। এ বছর মোট ১৮টি অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। জানা গিয়েছে, বিহারের চম্পারণের বাসিন্দা দ্বাদশ শ্রেণির ওই পড়ুয়া জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে কোটায় থাকছিলেন।
শনিবার ডিএসপি হর্ষরাজ সিংহ জানিয়েছেন, তাঁদের অনুমান, শুক্রবার দুপুরে ওই ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার সকাল ১১টায় তাঁকে শেষ বার দেখা গিয়েছিল। মা, বাবা বিহার থেকে ছেলেকে বার বার ফোন করলেও তিনি ফোন তুলছিলেন না। তাতে সন্দেহ হয় অভিভাবকদের। এর পর ছেলে যে বাড়িতে ‘পেয়িং গেস্ট’ হিসাবে ছিলেন, সেই বাড়ির কেয়ারটেকারকে ফোন করেন তাঁরা। কেয়ারটেকার দেখেন, ছাত্রের ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। তিনি সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে খবর দেন। রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ পুলিশ পৌঁছয় অকুস্থলে। দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে দেখা যায়, সিলিং থেকে ঝুলছে ওই পড়ুয়ার দেহ। ডিএসপি জানিয়েছেন, কোনও সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়নি। পড়ুয়ার দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ ওই পড়ুয়ার ব্যাপারে আরও খোঁজখবর নেওয়ার চেষ্টা করছে। প্রশ্ন উঠছে, পড়ার চাপেই কি এই পথ বেছে নিলেন তিনি? খবর গিয়েছে বিহারে তাঁর মা, বাবার কাছেও।
বৃহস্পতিবার কোটা থেকে নিট পড়ুয়া মনজ্যোৎ সিংহের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। উদ্ধার হয় মনজ্যোতের হাতে লেখা কয়েকটি নোটও। যার কোনওটিতে লেখা, ‘‘শুভ জন্মদিন বাবা।’’ আবার কোনওটিতে লেখা ছিল, ‘‘সরি।’’ তাঁর মৃত্যুর পর যাতে কাউকে দায়ী না করা হয় সে বিষয়েও একটি নোট লিখে গিয়েছিলেন নিট পড়ুয়া। সেখানে লেখা, “আমি নিজের ইচ্ছাতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার বন্ধুদের কোনও হাত নেই। সুতরাং দয়া করে আমার বন্ধু এবং মা-বাবাকে সমস্যার মুখে ফেলবেন না।” সেই ঘটনার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হল রাজস্থানের ছোট শহরে।
মূলত মধ্য, পূর্ব এবং উত্তর ভারত থেকে লক্ষাধিক পড়ুয়া প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সফল হতে কোটায় এসে প্রশিক্ষণ নেন। সেখানে তাঁদের থাকার জন্য রয়েছে অন্তত ২৫ হাজার পেয়িং গেস্ট এবং সাড়ে ৩ হাজার হস্টেলের ব্যবস্থা। রাজস্থানের এই শহরের বিভিন্ন কোচিং সেন্টারে প্রশিক্ষণ নিয়ে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সফল হয়েছেন, এমন পড়ুয়ার সংখ্যাও কম নয়।