পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার পরবর্তী দৃশ্য। ফাইল চিত্র।
পাকিস্তানের জঙ্গিদের পাশাপাশি, স্থানীয় জঙ্গিরাও সক্রিয় রয়েছে কাশ্মীরে। তবে তাদের ক্ষমতা অনেকটাই কমে গিয়েছে। তাই পুলওয়ামার মতো ঘটনা আর ঘটবে না, জানাল কাশ্মীর পুলিশ।
মঙ্গলবার ছিল কাশ্মীরের পুলওয়ামা হামলার চতুর্থ বর্ষপূ্র্তি। চার বছর আগে এই ১৪ ফেব্রুয়ারিই পুলওয়ামায় সিআরপিএফের গাড়িতে হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা। ৪০ জন সিআরপিএফ কর্মীর মৃত্যু হয় সেই ঘটনায়। মঙ্গলবার সেই শহিদদের শ্রদ্ধা জানানোর পর কাশ্মীর অঞ্চলের এডিজিপি বিজয় কুমার বলেন, ‘‘পুলওয়ামা হামলার নেপথ্যে যে ১৯ জন জঙ্গি ছিল, তাদের মধ্যে আটজনকেই নিকেশ করা হয়েছে। সাত জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে তিন পাকিস্তানি জঙ্গি-সহ বাকি চার জন এখনও ধরা পড়েনি। তবে কাশ্মীরের নিরাপত্তাবাহিনী সদাসতর্ক রয়েছে।”
২০১৯ সালের ওই হামলার ঘটনার দায় নিয়েছিল পাকিস্তান আশ্রিত জঙ্গিগোষ্ঠী জৈশ-ই-মহম্মদ। বিজয় জানিয়েছেন নিরাপত্তা বাহিনী এখন ভারতে জৈশ-এ-মহম্মদের কার্যকলাপের উপর কড়া নজর রাখছে। ইতিমধ্যে এই জঙ্গি সংগঠনের অধিকাংশ স্থানীয় শীর্ষনেতাকে খতম করা গিয়েছে। তবে এখনও পাক জঙ্গি মেসা সোলাইমানি-সহ পাঁচ, ছ’জন সক্রিয় পাকিস্তানি সন্ত্রাসবাদী কাজ করছে ভারতের জৈশ-ই-মহম্মদের শাখায়। খুব শীঘ্রই তাঁদেরও নিকেশ করা যাবে আশাবাদী কাশ্মীর পুলিশ।
আপাতত কাশ্মীরে মাদক সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণের উপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে পুলিশ। তবে সন্ত্রাসে মদত দিতে পাকিস্তান থেকে আসা অর্থের জোগানের দিকেও নজর রাখা হচ্ছে। আমরা ইতিমধ্যেই ৪১ লক্ষ টাকা উদ্ধার করেছি। বারামুলা থেকেও সম্প্রতি ২৬ লক্ষ টাকা পাওয়া গিয়েছে। সন্ত্রাসবাদীদের সহায়তাকারী একটি শ্রেণিও অলক্ষ্যে বাড়ছিল কাশ্মীরে। বিজয় জানিয়েছেন, এঁদের সংখ্যা অনেকটাই কমিয়ে আনা গিয়েছে। গত বছর অক্টোবর মাসেও ১৬০০র কাছাকাছি জঙ্গি-সহায়ক ছিলেন কাশ্মীরে। এখন সংখ্যাটা ৯৫০। এঁদের মধ্যে ১৩ জন আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।
কাশ্মীরে এখনও ৩৭ জন স্থানীয় জঙ্গি সক্রিয় রয়েছে বলে জানিয়েছে কাশ্মীর পুলিশ। এঁদের মধ্যে দু’জন বহু পুরনো। তাঁদের নাম ফারুক নাল্লি এবং রিয়াজ ছাত্রী। বাকিরা সম্প্রতিই যোগ দিয়েছেন জঙ্গি কার্যকলাপে। সেই খবরও পুলিশের কাছে রয়েছে। তবে সক্রিয় হলেও ক্ষমতা কমেছে জঙ্গিদের। এডিজিপি বিজয় বলেন, ‘‘এখন কাশ্মীরে অনেক বেশি কড়া নজরদারি। জঙ্গিদের বাস্তুতন্ত্রটাই নষ্ট করে দিয়েছি আমরা। ওদের ঘাঁটি উপড়ে ফেলা হয়েছে। ২০১৯ সালের পর পরিস্থিতি অনেকটাই বদলেছে। তাই আমাদের বিশ্বাস পুলওয়ামার মতো ঘটনা আর ঘটবে না।’’