বাড়ির দরজা খুলে ভিতরে ঢুকে অবাক পুলিশ। প্রতীকী ছবি।
পরিবারের ৬ সদস্যের কেউই টানা তিন দিন বাড়ি থেকে বেরোচ্ছেন না। দেখে গতিক সুবিধের লাগছিল না পাড়ার লোকেদের। তাঁরা বিষয়টি স্থানীয় থানায় জানান। পুলিশ খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। বাড়ির দরজা খুলে দেখা যায় ভিতরে তন্ত্রসাধনা চলছে। দুই মহিলা-সহ পরিবারের ৬ সদস্যের প্রত্যেকেরই সারা শরীরে লেপে দেওয়া হয়েছে হলুদ গুঁড়ো এবং গাঢ় লাল সিঁদুর!
কেরলের নরবলি এবং নরমাংস খাওয়ার ঘটনার এক সপ্তাহের মধ্যেই এই ঘটনা তামিলনাড়ুর এক গ্রামে। গ্রামবাসীদের দাবি, এই পরিবারটিতেও নরবলির ঘটনা ঘটার আশঙ্কা ছিল। ঠিক সময়ে পুলিশ এসে পৌঁছনোয় তা আটকানো গিয়েছে।
তামিলনাড়ুর তিরুবন্নামালাই জেলার আরণি গ্রামের ঘটনা। পুলিশকে পরিবারটি জানিয়েছে, বাড়ির এক মহিলা সদস্যের উপর মৃতের আত্মা ভর করেছিল বলেই ওই পুজোর আয়োজন করেছিল তারা। ‘শয়তানকে তাড়াতেই’ চলছিল তন্ত্রসাধনা।
পুলিশ জানিয়েছে, বাড়ির ভিতর থেকে দুই মহিলা-সহ ছ’জনকে উদ্ধার করেছে তারা। এর মধ্যে ৫৫ বছর বয়সি এক কৃষক এস থাভামানি, তাঁর স্ত্রী ৪৫ বছরের কামাৎচি, তাঁদের দুই ছেলে— ২৭ বছরের ভোপালন, ২৩ বছরের বালাজি, গোমতী নামের এক মহিলা এবং তাঁর স্বামী প্রকাশ ছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, প্রকাশের বয়স ৩০। একমাত্র তাঁরই মুখে সামান্য ক্ষতচিহ্ন দেখতে পাওয়া গিয়েছে। বাকিরা অক্ষতই ছিলেন। তবে প্রত্যেকেরই মুখ এবং গোটা শরীরে হলুদ এবং সিঁদুরের গুঁড়ো লেপে দেওয়া ছিল।
পুলিশ তামিলনাড়ুর এই ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে। অন্য দিকে কেরলের এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই জাতীয় মানবাধিকার কমিশন কেরল সরকারকে একটি নোটিস দিয়েছে। তারা জানতে চেয়েছে কেরলের নরবলির ঘটনায় সরকার কী পদক্ষেপ করেছে।
প্রসঙ্গত, নরবলি দিলে আর্থিক সমৃদ্ধি হবে— এক স্বঘোষিত তান্ত্রিকের এই বচনে উদ্বুদ্ধ হয়ে সম্প্রতি দুই মহিলাকে বলি দেন এক দম্পতি। কোচির পুলিশ জানায়, রোশিলি নামক এক লটারি টিকিট বিক্রেতাকে ভুল বুঝিয়ে সেই দম্পতির বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে বিভিন্ন নিয়ম-রীতি মেনে তাঁকে হত্যা করা হয়। সবার আগে দেহ থেকে মাথা ছিন্ন করে বাকি দেহ টুকরো টুকরো করে কবর দেওয়া হয়। তবে ওই ঘটনার বেশ কিছু দিন পরেও দম্পতির আর্থিক অবস্থার কোনও রকম উন্নতি না হওয়ায় দম্পতি ওই সাধুর কাছে জবাব চান। তিনি তাঁদের আরও এক জনকে বলি দেওয়ার পরামর্শ দিলে তাঁর সাহায্য নিয়েই দ্বিতীয় মহিলাকে খুন করেন দম্পতি। এমনকি, সাধুর নিদানে ওই মৃত মহিলাদের মাংসও খান ওই দম্পতি।