সনিয়া গাঁধী। —ফাইল চিত্র
গুজরাতে আরও এক কংগ্রেস বিধায়ক পদত্যাগ করলেন। কর্নাটকে ৫৬ বছর বয়সি নেতার বদলে রাজ্যসভার ভোটে প্রার্থী করা হল ৭৭ বছর বয়সি নেতাকে।
কংগ্রেসের পুনরুত্থানের কোনও সম্ভাবনা অদূর ভবিষ্যতেও দেখা যাচ্ছে না। ফলে সিংহভাগ রাজ্যে বা কেন্দ্রে কংগ্রেস আগামী দিনে ক্ষমতায় আসবে, তার কোনও সম্ভাবনা এখনও নেই। তার মধ্যে রাহুল গাঁধী সভাপতি পদ থেকে বিদায় নেওয়ার পরে দলে ফের প্রবীণদের হাতে ক্ষমতা কুক্ষিগত হচ্ছে। এই সব মিলিয়েই হতাশ হয়ে একের পর এক দলের নেতা বা বিধায়করা দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন বলে কংগ্রেস নেতাদের মত। তাঁদের যুক্তি, শুধু মতাদর্শের কারণে কংগ্রেসে রয়েছেন, এমন নেতা-কর্মীর সংখ্যা হাতে গোনা। বিজেপি ক্ষমতা ও টাকার লোভ দেখিয়ে তারই সুযোগ নিচ্ছে।
বৃহস্পতিবারের পরে শুক্রবারেও গুজরাত কংগ্রেসে ভাঙন অব্যাহত। ১৯ জুনের রাজ্যসভা নির্বাচনের আগে বৃহস্পতিবার কংগ্রেসের দুই বিধায়ক জিতু চৌধুরী ও অক্ষয় পটেল পদত্যাগ করেছিলেন। শুক্রবার ব্রিজেশ মেজরা নামে আরও এক বিধায়ক পদত্যাগ করেছেন। আড়াই বছর আগে গুজরাত বিধানসভায় হাড্ডাহাড্ডি লড়াইতে ১৮২টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস ৮১টি আসন জেতিছিল। শুক্রবার কংগ্রেসের বিধায়ক সংখ্যা নেমে এল ৬৫-তে। মার্চ মাস থেকে এই নিয়ে ৮ জন বিধায়ক দল ছাড়লেন। ফলে রাজ্যসভা ভোটে গুজরাত থেকে চারটি আসনের মধ্যে একটি নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হবে কংগ্রেসকে। গুজরাত কংগ্রেসের মুখপাত্র হেমন্ত বাসবাদা আজ বলেন, “যে কোনও ভোট এলেই বিজেপি গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে ঘোড়া কেনাবেচার হাট বসিয়ে ফেলে। কংগ্রেসের কাছে এখন সেই ক্ষমতা নেই যে বিধায়কদের লোভ তুষ্ট করতে পারে।”
আরও পড়ুন: সাবধান না হলেই বিপদ, বার্তা হু-র
কর্নাটকে চারটির মধ্যে একটি আসনই জুটবে কংগ্রেসের। সেই আসনের জন্য আজ বর্তমান সাংসদ রাজীব গৌড়ার বদলে প্রবীণ নেতা মল্লিকার্জুন খড়গেকে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সনিয়া গাঁধী। অন্য একটি আসনে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী, জেডি(এস)-এর এইচ ডি দেবগৌড়াকে সমর্থন করতে পারে কংগ্রেস। ৭৭ বছরের মল্লিকার্জুন গত লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা ছিলেন। কিন্তু লোকসভা ভোটে হেরে যান। আইআইএম-এর প্রাক্তন অধ্যাপক গৌড়া নিজের হাতে কংগ্রেসের রিসার্চ বিভাগ ঢেলে সাজিয়েছিলেন।
তাঁকে বাদ দিয়ে প্রবীণ মল্লিকার্জুন কেন? কর্নাটক কংগ্রেস সূত্রের খবর, রাহুল নবীন প্রজন্মের কাউকে চাইলেও সনিয়া মল্লিকার্জুনের পক্ষে রায় দেন। আরেকটি অংশের ব্যাখ্যা, কর্নাটক কংগ্রেসে ডি কে শিবকুমারকে প্রদেশ সভাপতি করার পরে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার সঙ্গে ক্ষমতার ভারসাম্য রাখতেই এই সিদ্ধান্ত। মল্লিকার্জুন শিবকুমারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন। কংগ্রেস নেতাদের যুক্তি, এই
প্রবীণ-নবীন সংঘাতেই এর আগে রাহুলের ঘনিষ্ঠ হওয়া সত্বেও জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া দল ছেড়েছেন। দলে ভাঙন নিয়ে কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বল বলেন, “বিজেপি মুখে আত্মনির্ভর ভারতের কথা বলছে। আসলে টাকা ছড়িয়ে নেতা কিনে আত্মনির্ভর হচ্ছে। মানুষ একদিন এঁদের চিনতে পারবে।”