মুশকিল বাড়িয়ে এ বার অরবিন্দ কেজরীবালের বিরুদ্ধে সরব হলেন গুরু অণ্ণা হজারে। অণ্ণার হুমকি, কেজরীবালের বিরুদ্ধে ওঠা ঘুষ খাওয়ার অভিযোগের তদন্ত শুরু না হলে তিনি দিল্লিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ধর্নায় বসবেন। এক দিকে এই হুমকি ও অন্য দিকে দলের বিক্ষুব্ধ নেতা কপিল মিশ্রের অনশন মিলিয়ে নতুন করে অস্বস্তির মুখে কেজরীবাল।
গত দু’দিনে দুর্নীতি দমন শাখা ও সিবিআইয়ের কাছে অভিযোগ জানানোর পরে আজ কেজরীবাল সরকারের মন্ত্রীদের বিদেশ ভ্রমণের হিসেব চেয়ে নিজের সরকারি বাংলোতে অনশনে বসেন কপিল। বিকেলে ওই অনশন মঞ্চে অঙ্কিত ভরদ্বাজ নামে এক ব্যক্তি এসে হঠাৎই সপাটে একের পর এক চড় মারতে থাকেন কপিলকে। বাধা দেন কপিলের সমর্থকেরা। পরে পুলিশ এসে গ্রেফতার করে অঙ্কিতকে। কপিলের দাবি, ওই ব্যক্তি আম আদমি পার্টির সমর্থক। আর আপের দাবি, অঙ্কিত বিজেপি যুব মোর্চার সদস্য। এরই মধ্যে আপের একাংশ দাবি করেছে, গোটাটাই সাজানো ঘটনা। নিজের অনশন যাতে প্রচারের আলো পায় তাই এই হইচই পাকান কপিল মিশ্র।
তবে কপিল প্রশ্নে কেজরীবাল যত না চিন্তায় তার চেয়ে ঢের বেশি চাপে অণ্ণার এ ভাবে সরব হওয়া নিয়ে। আপ শিবির মনে করছে, বিজেপির প্ররোচনাতেই এ ভাবে সক্রিয় হয়েছেন অণ্ণা। কারণ বিজেপি খুব ভাল করেই জানে, প্রকাশ্যে অন্তত নিজের রাজনৈতিক গুরু হিসেবে অণ্ণাকেই মানেন কেজরীবাল। সেই অণ্ণা যদি শিষ্যের বিরুদ্ধে পথে নামেন তবে কেজরীবালের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে সব শিবিরে প্রশ্ন উঠবে। তাতে আরও এক ঘরে হয়ে পড়বেন তিনি। যার ফায়দা নিতে পারবে বিজেপি।
এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে এখন ঘর গোছাতে নেমেছেন কেজরীবাল। প্রথমে দলের বিক্ষুব্ধ নেতাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেন তিনি। পুর ভোটের পরে যাঁরা ক্ষুব্ধ ছিলেন সেই নেতারাও এখন বুঝছেন কেজরীবাল না থাকলে দলটাই থাকবে না। তাই তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন কুমার বিশ্বাস। কেজরীর সমর্থনে মুখ খুলেছেন দলত্যাগী যোগেন্দ্র যাদবও। যা স্বস্তি দিয়েছে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে। সাংসদ ভগবন্ত সিংহ মানকে দলের পঞ্জাব শাখার প্রধান করার বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন উপকার সিংহ সান্ধু। তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
কাল দিল্লি বিধানসভায় ইভিএম বিতর্ককে খুঁচিয়ে দিয়ে নিজের লড়াইকে আরও বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন কেজরীবাল। বুঝিয়ে দিয়েছেন তাঁর একমাত্র রাজনৈতিক শত্রু হল বিজেপি। ইভিএমের বিষয়টি সামনে আসায় ঘুষ খাওয়ার অভিযোগ নিয়ে বিতর্ক অনেকটাই থিতিয়ে গিয়েছে।