নিজের গড়ে তোলা পাঠাগারে কুরেলা।
পড়াশোনা করতে গিয়ে কঠিন লড়াইয়ের মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে। তখন দেশে জমিদাররাজ চলত। ভেবেছিলেন নিজে পড়াশোনার পাশাপাশি একটা পাঠাগার গড়ে তুলবেন যাতে অন্যরাও শিক্ষার সুযোগ পায়। কিন্তু সেটা করে উঠতে পারেননি অন্ধ্রপ্রদেশের নালগোন্ডা জেলার প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দা কুরেলা ভিট্টালাচার্য। জমিদারদের প্রতাপে এবং বাধার মুখে পড়ে তাঁর সেই ইচ্ছা পূরণ করতে পারেননি সে সময়। কিন্তু স্বপ্ন দেখা বন্ধ করেননি তিনি।
শিক্ষার বিরোধিতার পরিবেশ থেকে উচ্চশিক্ষিত হয়ে ওঠা বছর চুরাশির কুরেলা এখন একটি বিশাল পাঠাগার খুলেছেন সর্বসাধারণের জন্য। সেখানে দু’লক্ষ বইয়ের ভান্ডার। এ ভাবেই শিক্ষা বিলোনোর কাজ করে চলেছেন তিনি।
কুরেলা পেশায় এক জন অধ্যাপক ছিলেন। পরে কলেজের অধ্যক্ষও হন। তেলুগু সাহিত্যে পুরস্কারও জিতেছেন। জীবনের যাবতীয় সঞ্চয় খরচ করে নিজের গ্রাম ইয়েল্যাঙ্কিতেই কুরেলা গড়ে তুলেছেন বিশাল পাঠাগার।
২০১৪ থেকে তাঁর স্বপ্ন একটু একটু করে সাকার করার কাজ শুরু করেন কুরেলা। প্রথমে বাড়িতেই গড়ে তোলেন পাঁচ হাজার বইয়ের ভান্ডার। তাঁর এই প্রচেষ্টায় সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন আরও অনেক কবি, অধ্যাপক থেকে লেখকরা। সেই পাঁচ হাজার বইয়ের ভান্ডারকে এখন বইয়ের সমুদ্রে পরিণত করেছেন কুরেলা।
তাঁর কথায়, “চাইনি আমার মতো কেউ পড়াশোনা নিয়ে সমস্যায় পড়ুক। ভাবতে অবাক লাগে আমার মতোই সে সময় অনেকে শিক্ষার জন্য লড়াই করেছেন। এখন তাঁরা বিদেশে প্রতিষ্ঠিত। তাঁরা নিজেদের গোড়াকেই ভুলে গিয়েছেন। এমনকি সহযোগিতার হাত বাড়াতেও কুণ্ঠিত বোধ করেন।” এক জন ছাত্র হিসেবে যে কাজ তিনি করতে পারেননি, প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর সেটাই করে শিক্ষা বিলোনোর কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওযার চেষ্টা করছেন কুরেলা। তাঁর মৃত্যুর পরও এই পাঠাগার সকলের জন্য খোলা থাকবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।