তখনও মুক্তি পায়নি শিশুরা। সুভাষ বাথামের বাড়ির সামনে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
মাত্র পাঁচ দিন আগেই পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে বাবার। তার কয়েক ঘণ্টা পরেই চোখের সামনে মাকে পিটিয়ে খুন হতে দেখেছে সে। এই সব ঘটনার আগে আবার দশ ঘণ্টা তাকে আটকে রাখা হয়েছিল একটা বদ্ধ ঘরে। এ সব মিলিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়া একরত্তি বর্তমানে উত্তরপ্রদেশের ফারুখাবাদের একটি হাসপাতালে চিকিত্সাধীন। কিন্তু তার পর কী হবে? বাবা-মা হীন ওই শিশুর ঠাঁই কোথায় হবে? এ চিন্তাই যখন ভর করেছিল তার আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশীদের মাথায়, ঠিক সে সময়েই যেন দেবদূতের মতো হাজির হলেন উত্তরপ্রদেশেরই এক পুলিশ আধিকারিক— কানপুরের আইজি মোহিত অগ্রবাল। ওই শিশুকে দত্তক নিয়ে তার পড়াশোনার সমস্ত দায়ভার নিজের কাঁধে নেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন তিনি।
শিশুটির নাম গৌরী। বৃহস্পতিবার সুভাষ বাথাম নামে যে ব্যক্তির ২০ জন শিশুকে পণবন্দি করে রাখার খবরে তোলপাড় হয়েছিল উত্তরপ্রদেশ, তারই এক বছরের মেয়ে এই গৌরী।
ওই পুলিশ অফিসার সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর শিশুটি অনাথ হয়ে গিয়েছে। তাই তিনি তার যাবতীয় খরচ বহন করবেন। তিনি বলেন, “আমি চাই ও এক জন আইপিএস অফিসার হয়ে উঠুক। যাবতীয় আইনি নিয়ম অনুসারেই ওকে দত্তক নেওয়া হবে এবং পড়াশোনার জন্য একটা ভাল বোর্ডিং স্কুলেও পাঠানো হবে। আমার তত্ত্বাবধানেই ও বড় হয়ে উঠবে।” বর্তমানে গৌরী ফারুখাবাদের একটা হাসপাতাবে চিকিত্সাধীন। এক মহিলা কনস্টেবল তার দেখাশোনা করছেন।
আরও পড়ুন: শাহিন বাগ তুঙ্গে তুলছে বিজেপি, কেজরীবাল কি শাঁখের করাতে?
আরও পড়ুন: পুলিশের গুলিতে হত অভিযুক্ত, জনতার পাথরে স্ত্রী, ১০ ঘণ্টার রুদ্ধশ্বাস অভিযানে উদ্ধার ২০ পণবন্দি শিশু
গত বৃহস্পতিবার উত্তরপ্রদেশের ফারুখাবাদ জেলার মহম্মদাবাদে গৌরীর জন্মদিন পালনের অছিলায় গ্রামের ২০ জন শিশুকে নিমন্ত্রণ করেছিল তার বাবা সুভাষ। তার পরই সমস্ত শিশুদের সে পণবন্দি করে রাখে বাড়িতে। সঙ্গে তার স্ত্রী এবং নিজের সন্তানকেও পণবন্দি করে।
পুলিশের হাজার বোঝানো সত্ত্বেও ওই ব্যক্তিকে বাগে আনা যায়নি। তাকে বাগে আনতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় পুলিশকে। পুলিশকে লক্ষ্য করে সুভাষ গুলি এবং বোমা ছুড়তে শুরু করেছিল। শেষে মাঠে নামে কানপুর পুলিশের বিশেষ প্রশিক্ষিত বাহিনী এবং এনএসজি কম্যান্ডোদেরও। পুলিশের সঙ্গে ১০ ঘণ্টা সংঘর্ষে তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর পর পুলিশ সমস্ত পণবন্দি শিশুদের উদ্ধার করে। কিন্তু সে সময় তার স্ত্রী পালানোর চেষ্টা করলে গ্রামবাসীদের রোষ গিয়ে পড়ে তাঁর উপরেও। ইট-পাথরের ঘায়ে গণপ্রহারে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই শিশুটির মায়ের।