অমৃতপালের স্ত্রী কিরণদীপকে তিন দিন আগে বিমানবন্দরে আটক করেছিল পুলিশ। ফাইল ছবি।
ভোরবেলা গুরুদ্বারের সামনে পুলিশের সামনে আত্মসমর্পণ করেছেন খলিস্তানি নেতা অমৃতপাল সিংহ। তার পর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এমনটাই দাবি করা হচ্ছে একাধিক সূত্রে। যদিও অমৃতপাল কী ভাবে ধরা পড়লেন, সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পুলিশ প্রকাশ করেনি। শুধু জানা গিয়েছে, ধৃত নেতাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে অসমের জেলে।
অমৃতপালের স্ত্রী কিরণদীপ কউরকে মাত্র তিন দিন আগেই আটক করা হয়েছিল। অমৃতসর বিমানবন্দরে প্রথমে তাঁকে আটকানো হয়। তিনি লন্ডনে যাচ্ছিলেন। কিরণদীপকে জিজ্ঞাসাবাদ করে শুল্ক দফতর। তার পর সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসাবে তাঁকে আটক করা হয়। সেই ঘটনার তিন দিন পরেই ধরা পড়লেন পলাতক নেতা। অনেকের প্রশ্ন, তবে কি স্ত্রীর টানেই অবশেষে হার মানলেন অমৃতপাল? নিজে থেকেই পুলিশের কাছে গিয়ে আত্মসমর্পণ করলেন?
‘ইন্ডিয়া টুডে’ জানিয়েছে, শনিবার সন্ধ্যাতেই মোগা শহরে পা রেখেছিলেন অমৃতপাল। তিনি যে শহরে এসেছেন, তা নিজেই ফোন করে পুলিশকে জানিয়েছিলেন। তার পর রবিবার ভোরে আত্মসমর্পণ করেন। জাতীয় নিরাপত্তা আইনে অমৃতপালকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ফেব্রুয়ারি মাসেই কিরণদীপ-অমৃতপালের বিয়ে হয়েছিল। কিরণদীপ অনাবাসী ভারতীয়। থাকেন ব্রিটেনে। সমাজমাধ্যমে অমৃতপালের ভিডিয়ো দেখে প্রেমে পড়েছিলেন কিরণদীপ। ‘দ্য উইক’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কিরণদীপ জানিয়েছিলেন যে, ১ বছরেরও বেশি সময় ধরে ইনস্টাগ্রামে অমৃতপালকে ‘ফলো’ করতেন তিনি। তার পরই প্রশংসা করে অমৃতপালকে মেসেজ করেছিলেন। এর পর দু’জনের মনের আদানপ্রদান হয়। বিয়ে সেরে ফেলেন খলিস্তানি নেতা।
কিরণদীপ জানিয়েছেন, বিয়ের আগেই তাঁকে অমৃতপাল বলেছিলেন যে, কোনও এক দিন হয়তো তাঁকে গ্রেফতার করা হতে পারে। তবে সেই আশঙ্কা যে এত দ্রুত সত্যি হবে, তা হয়তো ভাবতে পারেননি কেউ।
অমৃতপালের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জাতির মধ্যে বৈষম্য ছড়ানো, খুনের চেষ্টা, পুলিশকে আক্রমণ এবং পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ, অমৃতসরের কাছে অঞ্জলা থানার লকআপে বন্দি সঙ্গীকে ছাড়ানোর জন্য কয়েকশো জনকে নিয়ে ১৮ মার্চ হামলা চালান অমৃতপাল এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ সঙ্গী পপ্পলপ্রীত সিংহ। ওই ঘটনার পর থেকেই দু’জন পলাতক ছিলেন। তবে ১০ এপ্রিল পপ্পলপ্রীতকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অমৃতপাল অধরাই ছিলেন। ১৮ মার্চ থেকে পঞ্জাবের জলন্ধর, হোশিয়ারপুর এবং অমৃতসরের একাধিক গ্রামে ছদ্মবেশে আশ্রয় নিয়েছিলেন অমৃতপাল। কিছুতেই তাঁকে ধরতে পারছিল না পুলিশ। অবশেষে খলিস্তানি নেতার হাতে হাতকড়া পরানো গেল।