ছবি: পিটিআই।
যার যা কাজ, সেটাই ভাল করে করতে হবে। অন্য কাজে মন দেওয়ার দরকার নেই। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে বসে এমন নীতিই নিয়েছেন অমিত শাহ। সেই ধাক্কায় বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে বিএসএফের সাতটি অ্যাড-হক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। তার মধ্যে কয়েকটি কেন্দ্র গড়া হয়েছিল উগ্রপন্থা দমনে বিএসএফের জওয়ানদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য।
বিএসএফ সূত্রের খবর, দেশের নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চান, সীমান্তরক্ষী বাহিনী সীমান্ত রক্ষার কাজটাই নিপুণ ভাবে করুক। জঙ্গি দমন বা মাওবাদী দমনের কাজে বিশেষজ্ঞ হয়ে ওঠার দরকার নেই তাদের। জঙ্গি দমন বা মাওবাদী দমনের অভিযান চালানোর দায়িত্ব যে-সব বাহিনীর উপরে ন্যস্ত আছে, তারাই সেই কাজ করবে। সেই হিসেবে সিআরপি, এনআইএ, বিশেষ বাহিনী হিসেবে গড়া কোবরা, গ্রে-হাউন্ড এবং কেন্দ্রের টাকায় গড়া রাজ্য পুলিশের বিশেষ বাহিনীর হাতেই থাকবে জঙ্গি দমনের কাজ। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাবাহিনী-সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থার গোয়েন্দা বিভাগের অপারেশন বিভাগও তা করতে পারে। মিজোরামে ভ্যারাংটেতে ভারতীয় সেনার জঙ্গল-যুদ্ধ ও জঙ্গি দমনের আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের খবর, মাওবাদী এলাকায় কাজ করার জন্য বিএসএফ বেঙ্গালুরুর কারাহাল্লিতে কাউন্টার ইনসারজেন্সি অ্যান্ড অ্যান্টি টেররিজম স্কুল খুলতে ১৪০ কোটি টাকা চেয়েছিল। ২৭৫ জনকে নিয়োগের প্রস্তাবও দেয় ওই সংস্থা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে সেই ফাইল দেখে তা বাতিল করে দেন শাহ। তখন আমলারা তাঁকে জানান, বিএসএফ এই ধরনের আরও কিছু প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালাচ্ছে। তার মধ্যে ভোঁদসিতে ৯৫ নম্বর ব্যাটেলিয়ন, দিল্লির ছাওলায় ২৫ নম্বর ব্যাটেলিয়ন, পঞ্জাবের ফরিদকোটে আর্টিলারি ট্রেনিং স্কুল, দিল্লির ছাওলায় বিএসএফ ল ইনস্টিটিউট, দেহরাদূনের বিআইএএটি এবং গুজরাতের ওখায় ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব কোস্টাল পোলিশিং উল্লেখযোগ্য। এগুলি সবই বাতিল করে দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
বিএসএফের একাংশ সরকারের এই সিদ্ধান্তে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ। অনেক শীর্ষ অফিসার মনে করছেন, বাহিনীর অফিসার ও জওয়ানদের প্রশিক্ষণ দেওয়া জরুরি, সেই প্রশিক্ষণ বিএসএফ নিজেদের পরিকাঠামোয় সেরে ফেলতে পারলেই সব চেয়ে বেশি লাভ। সীমান্তরক্ষী বাহিনীর একাংশের বক্তব্য, সীমান্ত রক্ষা করা একমাত্র কাজ হলে মাওবাদী এলাকায় বিএসএফ মোতায়েন করা হয় কেন, কেনই বা ভোটের কাজে ডাকা হয় সীমান্তরক্ষীদের? স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পাল্টা জবাব, বিএসএফের সীমান্ত রক্ষার কাজ নিয়ে অজস্র অভিযোগ মন্ত্রকে আসে। আপৎকালীন অবস্থায় বিএসএফ-কে কাজে লাগানো হতেই পারে। কিন্তু বিএসএফের অগ্রাধিকারে জঙ্গি দমনের বদলে সীমান্তই থাকা উচিত। সেই জন্যই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গুটিয়ে নিতে বলেছে নর্থ ব্লক।