বিচারপতি এস মুরলীধর। —ফাইল চিত্র
এক জন বিচারপতিই ন্যায় করবেন, অন্যরা অন্যায়— এই ভাবনাকেই প্রশ্নের মুখে দাঁড় করালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বিচারপতি এস মুরলীধরের বদলি নিয়ে বিরোধীদের প্রশ্নে আজ এটাই ছিল অমিতের পাল্টা আক্রমণ। দিল্লির হিংসার আগে অনুরাগ ঠাকুর, প্রবেশ বর্মা, কপিল মিশ্রর মতো নেতাদের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক বিবৃতির অভিযোগে দিল্লি হাইকোর্টের তদানীন্তন বিচারপতি এস মুরলীধর অবিলম্বে এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই রাতেই তাঁর বদলির নির্দেশ জারি হয়। দিল্লির হিংসা নিয়ে সংসদে দুই কক্ষের আলোচনাতেই এ নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে। আজ রাজ্যসভায় অমিত তাঁর জবাবে বলেন, ‘‘আপনারা কেন মনে করছেন, এক জন বিচারপতিই ন্যায় করবেন? অন্য বিচারপতিরা করবেন না? বিচারবিভাগ সম্পর্কে কী ধরনের বার্তা দিতে চাইছেন? কেন এই উদ্ভট তত্ত্ব সাধারণ মানুষের সামনে তুলে ধরছেন?’’
দিল্লি হাইকোর্ট থেকে বিচারপতি মুরলীধরকে তড়িঘড়ি বদলির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে চিঠি পাঠিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল বার অ্যাসোসিয়েশন হিউম্যান রাইটস্ ইনস্টিটিউট। আইনজীবীদের এই আন্তর্জাতিক সংগঠনের যুক্তি, সামাজিক বিশৃঙ্খলার মধ্যে এ হেন অস্বাভাবিক বদলি ভারতে বিচারবিভাগের স্বাধীনতা নিয়েই উদ্বেগ তৈরি করে। সরকারকে দায়বদ্ধ করতে বিচারবিভাগের অধিকার আইনের শাসনের মূল বিষয়। বিচারপতি তাঁর স্বাধীন সিদ্ধান্ত প্রয়োগ করলে তাঁকে কোনও ভাবেই ‘শাস্তি’ দেওয়া যায় না।
আজ সংসদে অমিতের যুক্তি, এই বদলি একেবারেই রুটিন। আগেও এ রকম বদলি হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে কলেজিয়াম বদলির সুপারিশ করে। বিচারপতির সম্মতিও নেওয়া হয়। সরকার সেখানে কিছুই করতে পারে না। সরকার আপত্তি তুললেও, কলেজিয়াম ফের সুপারিশ করলে তা মেনে নিতে হয়। এ ক্ষেত্রে সুপারিশ ও সম্মতি দুই-ই এসে গিয়েছিল। বিরোধীরা প্রশ্ন তোলেন, দিল্লি পুলিশকে এফআইআর করতে বলার দিনই রাত বারোটায় বদলির নির্দেশ জারি হল কেন? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অবশ্য তার উত্তর দেননি।