সাত দশকের কাশ্মীর সমস্যা সমাধানে নতুন পথে হাঁটার পক্ষে সওয়াল করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কী সেই নীতি, কোন পথে হবে কাশ্মীরের রক্তক্ষয়ী সমস্যার সমাধান তা নিয়ে বিশদে অবশ্য মুখ খোলেননি তিনি। তবে রাজ্যসভায় জম্মু-কাশ্মীর সংশোধনী বিলের আলোচনায় তিনি আজ দাবি করেন, কাশ্মীর সমস্যার দীর্ঘমেয়াদী সমাধান বিজেপিই করবে। সেইসঙ্গে প্রয়াত অটলবিহারী বাজপেয়ীর সুরে শাহ বলেন, ‘‘উপত্যকায় মানবতা, কাশ্মীরি মনন ও গণতন্ত্রকে (ইনসানিয়ত, কাশ্মীরিয়ত, জমহুরিয়ত) রক্ষা করবে কেন্দ্র।’’ সেইসঙ্গে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘কাশ্মীরি পণ্ডিত আর সুফিরা কি কাশ্মীরি মননের অঙ্গ নন? তাহলে তাঁদের সঙ্কটের সময়ে রক্ষা করতে কেউ উদ্যোগী হননি কেন?’’
গত সপ্তাহে জম্মু-কাশ্মীর সংশোধনী বিলটি নিয়ে লোকসভায় বলতে গিয়ে কাশ্মীরের সমস্যা সমাধানে কঠোর দমননীতি নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন অমিত। সেই কঠোর নীতি দেখে কেউ যদি ভয় পেয়ে থাকে তাহলে সেই ভয় দেশের জন্য ভাল বলেও মন্তব্য করতে পিছপা হননি তিনি। আজ অবশ্য সেই ধাঁচের কড়া বার্তা দেওয়ার পরিবর্তে উপত্যকার যুবকদের সমাজের মূল স্রোতে ফিরে আসার জন্য আহ্বান করেন। আজ তিনি বলেন, ‘‘ফিরে আসুন। সরকার আপনাদের পরিবারকে সম্পূর্ণ নিরাপত্তা দেবে।’’
নিজের বক্তব্যে আজ দমননীতির পাশাপাশি উপত্যকার মন জয়ে উন্নয়ন ও রোজগারের উপরেও জোর দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘মোদী সরকার ওই রাজ্যের উন্নয়নে ৮০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। দিল্লির পাঠানো ওই টাকা পঞ্চায়েতের মাধ্যমে গ্রামগুলিতে পৌঁছলে এক দিকে পরিকাঠামো উন্নয়ন হবে। অন্য দিকে কাজের সুযোগ বাড়বে তরুণদের। হাতে অর্থ আসবে তাদের। দেখা গিয়েছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্রেফ অর্থ উপার্জনের জন্যই বাহিনীর উপরে পাথর ছোড়ে কাশ্মীরের তরুণ ও কিশোররা। অধিকাংশই জানে না কাকে মারছে, কেন মারছে।’’
আজ ওই বিলটির সঙ্গেই জম্মু-কাশ্মীরে রাষ্ট্রপতি শাসনের মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাবটি নিয়েও আলোচনা হয়। বিতর্কে তৃণমূলের ডেরেক ও’ব্রায়েন ও কংগ্রেসের গুলাম নবি আজ়াদেরা প্রশ্ন তোলেন কেন লোকসভার সঙ্গেই বিধানসভায় ভোট হল না কাশ্মীরে। জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘‘জম্মু-কাশ্মীরে লোকসভা আসন ৬টি। প্রার্থী কম। সেখানে বিধানসভায় প্রার্থীসংখ্যা প্রায় হাজারের কাছাকাছি। তাঁদের সকলের নিরাপত্তা দেওয়া, প্রতিটি সভাকে নিশ্ছিদ্র করতে প্রচুর আধাসেনার প্রয়োজন। গোটা দেশে নির্বাচনের সময়ে কেবল কাশ্মীরে এত আধাসেনা মোতায়েন সম্ভব ছিল না।’’ শাহের আরও ব্যাখ্যা, ‘‘লোকসভার পরেই ছিল রমজান। এখন অমরনাথ যাত্রার সময়। ফলে লোকসভা ভোটের পরেই বিধানসভা নির্বাচন করা সম্ভব ছিল না। তবে যাত্রার পরে কমিশন যে দিন বলবে সে দিন সরকার নির্বাচন করতে প্রস্তুত।’’