—ফাইল চিত্র।
লোকসভা ভোটে জেতার পর অমিত শাহ রাজ্যসভা থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। সতীর্থ রবিশঙ্কর প্রসাদ, ডিএমকের কানিমোঝির সঙ্গে রাজ্যসভা সচিবালয় থেকে তার বিজ্ঞপ্তিও বেরিয়ে গেল। অমিত শাহের মতো গুজরাত থেকে একই সঙ্গে রাজ্যসভায় জিতে এসেছিলেন স্মৃতি ইরানি। কিন্তু অমেঠীতে রাহুল গাঁধীকে হারিয়ে লোকসভায় আসার পরও রাজ্যসভায় তাঁর ইস্তফার বিজ্ঞপ্তি আসছে না!
অনেক পরে রাজ্যসভা থেকে স্মৃতি ইরানির ইস্তফার বিজ্ঞপ্তিও জারি হয়েছে। খটকার শুরু তখন থেকেই।
সন্ধিগ্ধ কংগ্রেস নেতারা তখন থেকেই খোঁজখবর শুরু করেন, এর পিছনে নিশ্চয়ই কোনও চাল আছে। না হলে গুজরাত থেকে বিজেপির দুই নেতা কেন বেশ কিছু দিনের ব্যবধানে ইস্তফা দিচ্ছেন? কেনই বা রাজ্যসভা থেকে ব্যবধান রেখে বিজ্ঞপ্তি জারি হচ্ছে? বিস্তর খোঁজখবর নিয়ে কংগ্রেসের নেতারা এখন নিশ্চিত, আসলে গুজরাতের দু’টি আসনের মধ্যে একটি পাওয়ার কথা বিজেপির। এখন দুটিই জেতার ছক কষছেন অমিত শাহ। আর সেটিই আজ আগাম ফাঁস করে দিল কংগ্রেস।
এআইসিসি দফতরে কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, ‘‘গুজরাতের বিধানসভায় বিধায়কদের সংখ্যা অনুসারে রাজ্যসভার দু’টি আসনের ভোট এক সঙ্গে হলে বিজেপি একটি পায়, কংগ্রেস একটি। কিন্তু দু’টি আসনের নির্বাচন আলাদা সময়ে করার ভাবনা হচ্ছে। যাতে দু’বারে দুটি আসন পেয়ে যেতে পারে বিজেপি। আমরা এর প্রতিবাদ করতে নির্বাচন কমিশনের কাছে যাব। বলব যাতে একই সঙ্গে দুটি আসনের ভোট হয়।’’
আলাদা দিনে ভোট হলে কী করে ফায়দা তুলতে পারে বিজেপি?
গুজরাত বিধানসভা ভোটের সময় রাহুল গাঁধীর সক্রিয়তায় রাজ্যের ১৮২টি আসনের মধ্যে বিজেপিকে সেঞ্চুরি পার করতে দেয়নি কংগ্রেস। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ৯২টির চেয়ে মাত্র ৭টি আসন বেশি পেয়ে সরকার গড়ে নরেন্দ্র মোদীর দল। পরে অবশ্য সংখ্যাটি বাড়িয়ে একশো পার করে ফেলেছে তারা। কিন্তু দু’টি আসনে এক সঙ্গে নির্বাচন হলে বিধায়কদের প্রথম পছন্দের ভোট অনুসারে বিজেপি মাত্র একটিতেই জিততে পারে। দু’বারে হলে দু’টি।
কংগ্রেস নেতারা বলছেন, দু’বছর আগে এই গুজরাতের রাজ্যসভা ভোটে আহমেদ পটেলকে হারাতে মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন অমিত শাহ। সে বারে তিনটি আসনে ভোট ছিল। অমিত শাহ, স্মৃতি ইরানি অনায়াসে জেতার পর তৃতীয় আসনে বলবন্তসিন রাজপুতকে দাঁড় করিয়েছিল বিজেপি। কংগ্রেসের দুই বিধায়ক বিজেপি প্রার্থীকে ভোটও দেন। কিন্তু তাঁরা কংগ্রেসের পাশাপাশি বিজেপির প্রতিনিধিকেও ব্যালট দেখিয়েছিলেন বলে অভিযোগ তোলে কংগ্রেস। সেই অভিযোগ পৌঁছয় দিল্লির নির্বাচন কমিশনে। গুজরাতে মাঝরাত পর্যন্ত খোদ অমিত শাহ দাঁড়িয়ে থেকে আর অরুণ জেটলি, নির্মলা সীতারামনদের মতো ওজনদার মন্ত্রীদের নির্বাচন কমিশনে পাঠিয়ে চাপ রেখে দেন। তবে শেষরক্ষা হয়নি। নির্বাচন কমিশন রাত দু’টো নাগাদ কংগ্রেসের দুই প্রার্থীর ভোট বাতিল করে পটেলকে জয়ী ঘোষণা করে। এ বারেও কী গুজরাতের রাজ্যসভা ভোট নিয়ে উত্তাপ ছড়াতে চলেছে? বল সেই নির্বাচন কমিশনের কোর্টেই।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।