দুই সুরের কৌশল মোদী-অমিতের

দিল্লির ভোটের জন্য অমিত শাহ খোলাখুলি মেরুকরণের রাজনীতি করছেন, আর প্রধানমন্ত্রী সব ধর্মের মন জয়ের চেষ্টা করছেন?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০০:৩৯
Share:

ফাইল চিত্র।

এ যেন কানু বিনে গীত নাই-এর মতো! দিল্লি বিধানসভা ভোটের প্রচারে বিজেপি নেতাদের মুখে শাহিন বাগ ছাড়া কথাই নেই! জল-বিদ্যুৎ-স্বাস্থ্য-শিক্ষা ইত্যাদি নিয়ে কথা কেবল ইস্তাহারে। অমিত শাহ থেকে অনুরাগ ঠাকুর— জনসভায় গিয়ে নরেন্দ্র মোদীর তাবড় মন্ত্রীরা শুধুই শাহিন বাগের কথা বলছেন। তার মধ্যেই বিজেপি নেতারা এ বারে আসরে নামাচ্ছেন যোগী আদিত্যনাথকে। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে উগ্র হিন্দুত্বকেই হাতিয়ার করেছেন যোগী। রবিবার শাহিন বাগ থেকে পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে তাঁকে দিয়ে জনসভা করিয়ে মেরুকরণের হাওয়াকে ঝড়ে পরিণত করতে চায় গেরুয়া শিবির।

Advertisement

আজ সন্ধ্যার পরে দিল্লিতে একের পর এক জনসভায় গিয়ে অমিত শাহ রাহুল গাঁধী এবং অরবিন্দ কেজরীবালকে নিশানা করে একটাই প্রসঙ্গ টেনেছেন— শাহিন বাগ! এই শাহিন বাগকে সামনে রেখেই বিজেপির সভায় উঠছে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি। উঠছে শরজিল ইমামের কথা। এমনকি অমিত শাহের মুখে বারবার আসছেন ইমরান খান আর পাকিস্তান!

বিজেপির এই বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে আজ ফের সরব হয়েছেন বিরোধীরা। সংসদের সেন্ট্রাল হলে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের বক্তৃতার জন্য প্রবেশের আগে গাঁধীমূর্তির পাদদেশে বিরোধীরা এ নিয়ে তোপ দেগেছেন। কিন্তু রাষ্ট্রপতির বক্তৃতার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বিভাজনের পথে গেলেন না। বরং সে বক্তৃতায় বারবার বলা হল ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস’-এর কথা। বক্তৃতার শুরুর দিকেই রাখা হল মুসলিম মহিলাদের তিন তালাক প্রথা বন্ধের কথা, সংখ্যালঘুদের উন্নয়নে সরকারের ফিরিস্তি।

Advertisement

়দিল্লির অলিন্দে প্রশ্ন উঠছে, অমিত শাহ আর নরেন্দ্র মোদী কী ভিন্ন পথে হাঁটছেন? দিল্লির ভোটের জন্য অমিত শাহ খোলাখুলি মেরুকরণের রাজনীতি করছেন, আর প্রধানমন্ত্রী সব ধর্মের মন জয়ের চেষ্টা করছেন? এটিই কি জুটির কৌশল, না উভয়ের মধ্যে ফারাক আছে? বিজেপির অনেক নেতা মনে করছেন, এটি আসলে শাসক জুটির কৌশল। দলের এক নেতা বললেন, ‘‘আজও রাষ্ট্রপতির বক্তৃতার সময় নাগরিকত্ব আইনের প্রসঙ্গে এত জোরে টেবিল চাপড়ানো হয়েছে, যাতে বাকি বিতর্ক কেউ তুলতে না পারেন। অমিত শাহ সংসদের গত অধিবেশন পর্যন্ত এনআরসির কথা বলেছেন। এ বারে রাষ্ট্রপতির বক্তৃতায় তা উধাও। সন্ধ্যায় এনডিএর বৈঠকে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন প্রসঙ্গ টেনে মোদী দাবি করেন, ‘‘গাঁধীর পথ মেনেই আইন এসেছে। আইনি দিকও খতিয়ে দেখা হয়েছে, কোনও ভুলও নেই এতে।’’ কাল পর্যন্ত শরিক অকালি সংখ্যালঘুদের বাইরে রাখা নিয়ে আইনের সমালোচনা করছিল। অকালির সামনেই মোদী আজ বলেন, ‘‘এ দেশ সকলের। অনেকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু মুসলমানদেরও ততটাই অধিকার ও কর্তব্য আছে, যা বাকিদের আছে।’’

বক্তৃতায় রাষ্ট্রপতি অযোধ্যা রায়ের পর দেশে সম্প্রীতির পরিবেশের তারিফ করেন। বিরোধের নামে যে কোনও হিংসা সমাজ ও দেশকে ‘দুর্বল’ করে বলেই তাঁর মত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement