শবরীমালায় ঢোকার পথে রেহানা ফতিমা। ছবি: পিটিআই।
শবরীমালা মন্দিরে ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন। তার জন্য নিজের সমাজ থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন আগেই। এ বার কর্মক্ষেত্রেও নাজেহাল হতে হল সমাজকর্মী রেহানা ফতিমাকে। অন্য জায়গায় বদলি করা হয়েছে তাঁকে। শুরু হয়েছে অভ্যন্তরীণ তদন্তও।
৩১ বছর বয়সী রেহানা পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। পাশাপাশি মডেলিংও করেন। বর্তমানে বিএসএনএলের জনসংযোগ বিভাগে টেলিকম টেকনিশিয়ান হিসাবে কর্মরত। এতদিন কাজ করছিলেন কোচির বোট জেটি শাখায়। মঙ্গলবার তাঁকে বদলি করা হয়েছে পালারিভাত্তোম টেলিফোন এক্সচেঞ্জে। বিভিন্ন বিষয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথোপকথন হতো তাঁর। নয়া কর্মস্থলে আর সেই সুযোগ পাবেন না তিনি।
রেহানার বিরুদ্ধে কর্তব্যে অবহেলার কোনও অভিযোগই নেই। শবরীমালা ঘটনার জেরেই কর্তৃপক্ষ তাঁর উপর রুষ্ট হয়েছেন বলে গোপন সূত্রে খবর। কারণ মঙ্গলবারই পালারিভাত্তোমে বিএসএনএল অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখায় শবরীমালা কর্ম সমিতির সদস্যরা। তারপর আচমকাই তাঁকে বদলি করা হয়।
আরও পড়ুন: 'স্যানিটারি ন্যাপকিন নিয়ে বন্ধুর বাড়ি যান? তা হলে মন্দিরে কেন?' এই কথা বললেন স্মৃতি!
এর আগে, কেরল মুসলিম জামাত কাউন্সিলও মুসলিম সম্প্রদায় থেকে রেহানাকে বহিষ্কার করে। তিনি লক্ষ লক্ষ হিন্দু দর্শনার্থীর আবেগে আঘাত করেছেন বলে অভিযোগ তোলা হয় সেখানে। এর্নাকুলাম সেন্ট্রাল মুসলিম জামাত সংগঠনকে নির্দেশ দেওয়া হয় তাঁর গোটা পরিবারকে ‘একঘরে’ করে দিতে।
গত শুক্রবার তিনি যখন শবরীমালায় ঢোকার চেষ্টা করছিলেন, তাঁর পানামবিলিনগরের বাড়িতে সেই সময় ভাঙচুর চালায় একদল হামলাকারী। মামলা দায়ের করে পাঠানমথিট্টা থানার পুলিশ। শবরীমালার থেকে ব্যর্থ হয়ে ফিরেছিলেন রেহানা। তার পর থেকে একের পর এক খাঁড়া নেমে এসেছে তাঁর উপর।
বরাবরই সমাজ সংস্কারমূলক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত রেহানা। যার জন্য একাধিকবার রোষের মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে। নীতি পুলিশের খবরদারির বিরুদ্ধে ২০১৪ সালে কোচিতে ‘কিস অফ লাভ’ আন্দোলনের অংশ ছিলেন তিনি। এ বছর শবরীমালা আয়াপ্পা মন্দিরের দোরগোড়া থেকে ফিরে আসতে হয় তাঁকে।
আরও পড়ুন: শেষ দিনে মন্দিরে আর এলেন না ঋতুমতী ভক্তেরা
গত বছর বিতর্কিত মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন কোঝিকোড়ের ফারুক ট্রেনিং কলেজের অধ্যাপক জওহল মুনাভির টি। মুসলিম মহিলাদের বক্ষযুগলকে তরমুজের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন তিনি। তার তীব্র প্রতিবাদ করেছিল কেরলের পড়ুয়ারা। তাতে সামিল হয়েছিলেন দুই সন্তানের মা রেহানা ফতিমাও। তরমুজ হাতে টপলেস ছবি তুলে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন তিনি।