প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্ব নিয়ে আলোচনায় ‘না’ বরুণ গান্ধীর। নিজস্ব ছবি।
বিদেশে গিয়ে রাহুল গান্ধীর মন্তব্য নিয়ে বিতর্কের মধ্যে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করলেন বরুণ গান্ধী। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ভারত ‘সঠিক পথে’ রয়েছে কি না— এই বিষয়ের উপর একটি আলোচনা সভায় যোগ দেওয়ার জন্য বরুণকে আমন্ত্রণ করেছিল অক্সফোর্ড। তাতেই ‘না’ বলে দিলেন বিজেপি সাংসদ। অতীতে কেন্দ্রের অগ্নিপথ প্রকল্প-সহ একাধিক বার দলীয় অবস্থানের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে দেখা গিয়েছে বরুণকে। প্রধানমন্ত্রী মোদীর নেতৃত্ব সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা প্রত্যাখ্যান করেও সাংসদ দলের অস্বস্তি বাড়ালেন বলেই মনে করছেন অনেকে।
বরুণ অক্সফোর্ডেই পড়াশোনা করেছেন। সেখানে যে বিতর্কসভার আয়োজন করা হয়েছে, তার বিষয়বস্তু হল— ভোটারদের মধ্যে বিপুল জনপ্রিয়তার পটভূমিতে মোদীর নেতৃত্বে বিজেপি কোন দিকে এগোচ্ছে, তা নিয়ে আলোচনা অবশ্যই অপরিহার্য। সেখান থেকেই প্রশ্ন ওঠে, ভবিষ্যতে ভারত কোন দিকে এগোবে এবং দেশকে কে ‘সঠিক পথ’ দেখাবেন। এই বিষয়ের উপর আলোচনায় বরুণকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তার জবাবে বরুণ জানান, স্বাধীনতার পরের সাত দশক ধরে উন্নয়নের পথেই এগিয়েছে ভারত। যারাই ক্ষমতায় এসেছে, তারাই সেই লক্ষ্যে কাজ করেছে। সাংসদের আরও মন্তব্য, ‘‘ভারতের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নিয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে আলোচনা করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।’’
ঘটনাচক্রে, সম্প্রতি লন্ডনে গিয়ে নিজের বক্তৃতায় ভারতীয় গণতন্ত্রে আঘাত আসছে বলে মন্তব্য করেছিলেন রাহুল। সংসদে মোদী-আদানি সম্পর্ক নিয়ে বলতে গেলে মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ তুলেছিলেন। এর পরেই রাহুলের বিরুদ্ধে লাগাতার আক্রমণ শানিয়ে যাচ্ছেন বিজেপি নেতারা। কংগ্রেস সাংসদকে ক্ষমা চাইতে হবে বলেও দাবি করছেন তাঁরা। রাহুলের বিরুদ্ধে গোটা দেশ জুড়ে প্রচার নামা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। রাহুল অবশ্য জানিয়েছেন, এই বিতর্কে যা বলার তিনি সংসদেই বলবেন। ওয়ানাডের সাংসদ বলেন, ‘‘আমাকে সংসদে বলতে দেওয়া হবে কি না, তা থেকেই বোঝা যাবে, দেশে গণতন্ত্র আছে কি না।’’ এই বিতর্কের মধ্যে অক্সফোর্ডে বক্তৃতা করতে রাজি হলেন না বরুণ। তা নিয়ে দলের অন্দরেও জল্পনা তৈরি হয়েছে।
বিজেপি নেতাদের একাংশের মতে, যে বিষয় নিয়ে এই আলোচনা সভা, তাতে বরুণের কাছে রাহুলের ‘বিতর্কিত’ মন্তব্যকে খারিজ করার যথেষ্ট পরিসর ছিল। তা ছাড়া, বিদেশের মাটিতে প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তিকে তুলে ধরারও অবকাশ ছিল। এত বড় সুযোগ বরুণের হাতছাড়া করা ‘উচিত’ হয়নি বলেও কেউ কেউ মনে করছেন। যদিও বরুণের ঘনিষ্ঠমহলের দাবি, বিতর্কসভায় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্ব নিয়ে কথা বলার অবকাশ যেমন ছিল, তেমনই কড়া প্রশ্নের মুখোমুখিও হতে হত। রাহুলকাণ্ডের মধ্যে নতুন করে বিতর্ক তৈরি করতে চাননি বলেই হয়তো ‘না’ করে দিয়েছেন সাংসদ।