—প্রতীকী চিত্র।
অতিমারির প্রকোপের মধ্যেই দেশে অন্য আর এক মারণ রোগের হানা। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এই রোগের নাম মিউকরমাইকোসিস। এটি বিরল প্রকৃতির একটি ছত্রাক সংক্রমণ। দিল্লি, মুম্বই এবং গুজরাত মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৬০ জন এই রোগে সংক্রমিত হয়েছেন। এর মধ্যে গুজরাতেই এখনও পর্যন্ত ৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
তবে এই মিউকরমাইকোসিস কোনও নতুন রোগ নয়। আগে এটি জাইগোমাইকোসিস নামে পরিচিত ছিল। মিউকরমাইসিটস নামের ছত্রাক থেকে এই রোগ ছড়ায়। মূলত নাক ও চোখের মাধ্যমেই সংক্রমণ শরীরে প্রবেশ করে। শুরুতেই ধরা পড়লে এর চিকিৎসা সম্ভব। তবে অবহেলা করলে এই রোগ প্রাণঘাতী আকার ধারণ করে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মিউকরমাইকোসিসে সংক্রমিত হলে চোখের চারপাশের পেশি অসাড় হয়ে যায়। যে কারণে দৃষ্টিশক্তি হারান অনেকে। সংক্রমণ মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়লে রোগীদের মেনিনজাইটিসও হতে পারে।
আরও পড়ুন: ৫ লক্ষ পেরোল মোট সুস্থ, সক্রিয় রোগী ২০ হাজারেরও কম
সাধারণত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যাঁদের কম, নানারকম ওষুধ খাওয়ার ফলে যে সমস্ত অসুস্থ রোগীদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, তাঁদের মিউকরমাইকোসিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। তাই সদ্য কোভিড-১৯ থেকে সেরে উঠেছেন যে সমস্ত মানুষ, তাঁদের মিউকরমাইকোসিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
এখনও পর্যন্ত আমদাবাদে যে ক’জন রোগীর সন্ধান মিলেছে, তাঁরা সকলেই ডায়াবিটিসে আক্রান্ত এবং সম্প্রতি করোনা থেকে সেরে উঠেছেন। আচমকা নাক ফুলে ব্যথা হলে এবং চোখে ঝাপসা দেখতে শুরু করলে, অবিলম্বে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
আরও পড়ুন: রুশি করোনা টিকার ট্রায়াল হবে শহরের এক বেসরকারি হাসপাতালে
দু’দিন আগে পর্যন্ত দিল্লির স্যর গঙ্গারাম হাসপাতালে মিউকরমাইকোসিসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ১২। মুম্বইয়েও একাধিক রোগীর সন্ধান মিলেছে। আমদাবাদের সিভিল হাসপাতালেই ৪৪ জন রোগীর হদিশ মেলে। তাঁদের মধ্যে ৯ জনের মৃত্যুও হয়েছে ইতিমধ্যেই। হাসপাতালের চিকিৎসক বেলা প্রজাপকি জানিয়েছেন, আক্রান্তদের সকলের বয়স পঞ্চাশের ঊর্ধ্বে।
মিউকরমাইকোসিস থেকে রক্ষা পেতে হলে পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর রাখতে হবে বলে পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। একই সঙ্গে নিয়মিত হাত ধোওয়া, মাস্ক পরে বাইরে বেরনো এবং অযথা নাক ও চোখে হাত না দেওয়ায় গুরুত্ব দিয়েছেন তাঁরা।