সুব্রত সিনহা। নিজস্ব চিত্র।
গাড়ি পার্ক করা নিয়ে বচসার জেরে এক প্রতিবেশীর উপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল তিন জনের বিরুদ্ধে। দিল্লির চিত্তরঞ্জন পার্ক (সিআর পার্ক) থানা এলাকার এই ঘটনায় রীতি মতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সিআর পার্কের ‘কে’ ব্লকে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকেন পেশায় আইনজীবী সুব্রত বিশ্বাস। গত মঙ্গলবার কাজ থেকে ফিরে প্রতি দিনের মতোই বাড়ির উল্টো দিকে রাস্তার ধারে নিজের গাড়ি পার্ক করেন তিনি। তাঁর গাড়ি ছাড়াও আরও দু’তিনটে গাড়িও পার্ক করা থাকে ওই জায়গায়। গাড়িগুলো যেখানে পার্ক করা হয়, তার ঠিক পাশেই ‘জে’ ব্লক। সেখানে একতলায় থাকেন অনিল লাম্বা নামে এক ব্যক্তি ও তাঁর পরিবার।
গত তিন মাস ধরে ওই জায়গাতেই নিজের গাড়ি পার্ক করেন সুব্রত। সে দিনও কাজ থেকে ফিরে গাড়িটি পার্ক করতে যান তিনি। অভিযোগ, সেখানে গিয়ে দেখেন আগে থেকেই সেখানে একটি স্কুটার পার্ক করা আছে। সুব্রত দাবি, কার স্কুটার— এই প্রশ্ন করায় অনিল লাম্বার বাড়ির পরিচারক জানান, স্কুটারটি তাঁর মালিকের। সুব্রত তখন পরিচারককে স্কুটারটি সরিয়ে নেওয়ার জন্য বলেন। কিন্তু পাল্টা তাঁকে বলা হয়, ‘বাড়ির মালিককে নিয়ে আসুন, তার পর কথা হবে।’ এর পর সুব্রত তাঁর বাড়ির মালিক সুব্রত সিন্হাকে ঘটনাটি ফোন করে জানিয়ে ঘটনাস্থলে আসার জন্য বলেন।
আরও পড়ুন: করোনার থেকে চার কদম এগিয়ে দিল্লি, দাবি কেজরীর
আরও পড়ুন: মৃত্যু ও আক্রান্তে ফের রেকর্ড দেশে, রেকর্ড সুস্থ হওয়ার সংখ্যাতেও
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, রাত তখন ৮টা। অনিল লাম্বার বাড়ির সামনে হাজির হন সুব্রত সিনহা এবং সুব্রত বিশ্বাস। তাঁরা দু’জনে অনিলের কাছে স্কুটার পার্ক করার বিষয়টি জানতে চান। অভিযোগ, অনিল বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে তাঁদের গালিগালাজ করতে শুরু করেন। তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করেন সুব্রতরা। কিন্তু তাতেও দমেননি অনিল। উল্টে তাঁদের হুমকি দিতে থাকেন। অভিযোগ, এর পরই দুই ছেলেকে ডেকে নিয়ে সুব্রতদের উপর অতর্কিতে হামলা চালান অনিল। মারধরের পাশাপাশি ধারালো অস্ত্র দিয়ে সুব্রত সিনহাকে কোপানোর চেষ্টা করা হয়। তাঁর মাথার পিছনে, চোখের উপর এবং দেহের অন্য জায়গাতেও আঘাত লাগে। ঘটনাটা যখন ঘটছে, চিত্কার-চেঁচামেচি শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন। এর পরেই বেগতিক দেখে সেখান থেকে সরে পড়েন অনিলরা।
এর পর রক্তাক্ত অবস্থায় সেখান থেকে সিআর পার্ক থানায় যান সুব্রতরা। অনিলদের বিরুদ্ধে একটি এফআইআর দায়ের করেন। তার পর সেখান থেকে হাসপাতালে চিকিত্সা করাতে যান। সুব্রত সিন্হা জানিয়েছেন, তাঁর মাথায়, চোখের উপর বেশ কয়েকটি সেলাই পড়েছে। তাঁর অভিযোগ, ‘‘ঘটনার পর তিন দিন কেটে গেলেও এখনও অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেনি পুলিশ। আমাদের উপর হামলা চালিয়েও এলাকায় দিব্যি বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন অভিযুক্তরা।’’ সুব্রতর আরও অভিযোগ, পুলিশকে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বললেও তারা খুব একটা আগ্রহ দেখায়নি। চিন্তা করতে বারণ করার পাশাপাশি তারা যে বিষয়টি দেখছে, সে কথাও জানায় পুলিশ। সুব্রত সিন্হার আরও অভিযোগ, অভিযুক্তরা লাগাতার তাঁদের দু’জনকে ফোনে হুমকি দিচ্ছেন।
এ বিষয়ে দিল্লি পুলিশের ডিসি (দক্ষিণ) অতুল ঠাকুরের সঙ্গে শনিবার যোগাযোগ করা হয়। এ দিন তিনি বলেন, “অভিযোগের কথা জানতে পেরেছি। যত দ্রুত সম্ভব অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”