মণিপুর হিংসার একটি ছবি। —ফাইল চিত্র।
প্রাক্তন মিজো জঙ্গি সংগঠন, অধুনা নাম বদলে সমাজের মূলস্রোতে ফিরে আসা মিজোরামের একটি সংগঠন সে রাজ্যে বসবাসকারী মেইতেইদের রাজ্য ছেড়ে চলে যেতে বলে। তার পর মিজোরাম সরকার মেইতেইদের নিরাপত্তার দিকটি সুনিশ্চিত করার কথা বললেও আশ্বাসে ভরসা রাখতে পারছেন না তারা। মেইতেই জাতিগোষ্ঠীর ৪০ জন ইতিমধ্যেই পড়শি অসমে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। সেখানেই তাঁরা একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “আমরাও মানুষ। আমাদের ভয় রয়েছে। মৃত্যুর ভয় তাড়া করছে।” পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার মিজোরামে ফিরে যেতে চান বলেও জানিয়েছেন তাঁদের কেউ কেউ।
মিজোরাম ছেড়ে অসমে আশ্রয় নেওয়া মেইতেই জাতিগোষ্ঠীর মানুষেরা সেই রাজ্যের লখিপুর মহকুমার বিন্নাকান্দি অঞ্চলের একটি কমিউনিটি হলে রয়েছেন। তাঁদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসন। শনিবারই কমিউনিটি সেন্টারে ১৯ জন এসেছিলেন। রবিবার সকালে আসেন আরও ২১ জন।
সম্প্রতি মিজোরামের ‘পামরা’ নামে প্রাক্তন মিজো জঙ্গিদের একটি সংগঠন মেইতেইদের রাজ্য ছাড়ার ডাক দিয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়েছিল, মেইতেইদের উপর এর পর কোনও অত্যাচারের ঘটনা ঘটলে দায়ী থাকবে মেইতেইরাই। এই বিবৃতির পরেই রাজ্যে মেইতেইদের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মিজোরাম সরকার।
‘পামরা’র বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, মণিপুরের নারী নির্যাতনের ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পরেই মিজো যুবকেরা ক্ষুব্ধ হয়ে আছেন। তাই তাদের নিজেদের ‘নিরাপত্তার স্বার্থে’ই মেইতেইদের রাজ্য ছাড়া উচিত। তার পরেও ‘অপ্রীতিকর’ কিছু ঘটলে মেইতেইরাই দায়ী থাকবেন। বিবৃতিটি প্রকাশ্যে আসার পরেই দ্রুত পদক্ষেপ করে প্রশাসন। শনিবার মিজোরামের স্বরাষ্ট্র সচিব এইচ লালেংমাওয়াইয়া রাজ্যের মেইতেই সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানেই একটি বিবৃতির মাধ্যমে মেইতেইদের জন্য সরকারি নিরাপত্তার বিষয়টি সুনিশ্চিত করা হয়। মেইতেইদের নিরাপত্তাও বৃদ্ধি করা হয়। তার পরেও অবশ্য নিশ্চিন্ত হতে পারেননি সেখানে বসবাসকারী মেইতেইরা।
মণিপুর ছাড়াও মেইতেইদের একটি অংশ মিজোরামে বাস করেন। এ ছাড়া, অসমে কিছু মেইতেই সম্প্রদায়ের বাসিন্দা রয়েছেন। মণিপুরে হিংসার আবহে সেখানকার মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের সঙ্গে ফোনে একটি কথোপকথনে মিজোরামের মেইতেই জনগোষ্ঠীর মানুষদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা।