প্রতীকী ছবি।
তফসিলি জাতি ও জনজাতি সমাজের জন্য উচ্চশিক্ষায় বাজেট বরাদ্দ বড় রকম কমিয়েছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। এর প্রতিবাদে আগামী দিনে আন্দোলনে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলিত-আদিবাসী সংগঠনগুলি। সরব বিরোধীরাও।
বাজেট বিশ্লেষণ করে তফসিলি জাতি-উপজাতি সংগঠনগুলির দাবি, পরিকল্পিত ভাবেই বরাদ্দ কমানো হয়েছে। দশম শ্রেণি উত্তীর্ণ তফসিলি জাতির পড়ুয়াদের বৃত্তি বরাদ্দ গত বছর ছিল ৩ হাজার কোটি টাকা। এ বার কমে হয়েছে ২,৯২৬ কোটি টাকা। আদিবাসী সমাজের পড়ুয়াদের উৎসাহ ভাতার জন্য বরাদ্দ ১,৬৪৩ কোটি টাকা থেকে হয়েছে ১,৬১৩ কোটি টাকা। দীর্ঘদিন আদিবাসী সমাজের উন্নয়নে জন্য কাজ করা মুম্বইয়ের কুণাল রামটেকের মতে, টাকার হিসেবে বৃত্তি খাতে বার্ষিক বরাদ্দের পরিমাণ খুব না কমলেও, ওই প্রবণতা উদ্বেগজনক। তাঁর কথায়, ‘‘দ্বিতীয়বার ক্ষমতাসীন হয়ে মোদীর সরকার সংখ্যালঘু, দলিত ও আদিবাসী সমাজের পাশে থাকার দৃঢ় বার্তা দিতে পারত। অথচ, বরাদ্দ বাড়ানোর চেয়ে সামাজিক খাতে ও পিছিয়ে থাকা শ্রেণির উন্নয়নে বরাদ্দ আরও কমানো হল।’’ কুণালের মতে, দলিত ও আদিবাসী সমাজের ক্ষেত্রে মাধ্যমিক স্তরের পরে ওই বৃত্তির টাকা পড়ুয়াদের উচ্চশিক্ষা চালাতে উৎসাহিত করে। অবশ্য সরকারি সূত্রের দাবি, গত বারের খরচের হিসেবেই চলতি বছরের বাজেটে বরাদ্দ করা হয়েছে। যদি দরকার পড়ে তখন ওই খাতে বাড়তি টাকা মঞ্জুর করবে কেন্দ্র।
বরাদ্দ কমেছে তফসিলি জাতি ও জনজাতিদের জন্য বরাদ্দ পিএইচডি ও পরবর্তী উচ্চশিক্ষা খাতেও। পাঁচ বছর আগে তফসিলি জাতির জন্য যেখানে ওই খাতে ৬০২ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছিল, এ বারে তা কমে দাঁড়িয়েছে ২৮৩ কোটি টাকায়। আদিবাসী সমাজের ক্ষেত্রে তা ৪৩৯ কোটি টাকা থেকে হয়েছে ১৩৫ কোটি টাকা।
শুধু শিক্ষাখাতে নয়, কম-বেশি একাধিক মন্ত্রকে তফসিলি জাতি ও আদিবাসী ক্ষেত্রের উন্নয়নে বরাদ্দ কমেছে বলে জানিয়েছে ন্যাশনাল ক্যাম্পেন অন দলিত হিউম্যান রাইটস সংস্থা। সংস্থার বক্তব্য, যে মন্ত্রকগুলি পিছিয়ে পড়া সমাজের উন্নয়নে কাজ করে, সেই মন্ত্রকের বরাদ্দ কমানো হয়েছে। বরাদ্দ কমেছে কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় ও স্বশক্তিকরণ মন্ত্রকে। তফসিলি জাতি ও আদিবাসী উন্নয়নে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক, ক্ষুদ্র ছোট ও মাঝারি শিল্প মন্ত্রক, পানীয় জল ও নিকাশি মন্ত্রক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। ওই মন্ত্রকগুলিতেও বরাদ্দ ছাঁটকাট করা হয়েছে। একই ছবি কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু মন্ত্রকের বরাদ্দের ক্ষেত্রেও। বরাদ্দ তো বাড়েনি উল্টে কমে গিয়েছে কিছু ক্ষেত্রে। আজ কংগ্রেসের রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘বাজেটে দলিত ও আদিবাসীদের ধোঁকা দেওয়া হয়েছে। দুই শ্রেণির শিক্ষা খাতে বরাদ্দ কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মোদী সরকার।’’ বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল নেতৃত্বও সরব হবেন। দলের সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী শপথ নেওয়ার সময়ে বলেছিলেন সবকা সাথ, সবকা বিকাশ এবং সবকা বিশ্বাস। সেই বিশ্বাস তো তিনি শুরুতেই খোয়ালেন।’’