ইউক্রেনে আটকে পড়া ভারতীয় ছাত্রদের একাধিক ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া শুরু হতেই ছাত্রদের ক্ষোভ চাপা দিতে বিজেপি শিবিরের আইটি সেলের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগ উঠছিল। ইউক্রেনে প্রথম ভারতীয় ছাত্রের মৃত্যুর খবর আসতেই সেই অভিযোগ আরও জোরদার হল।
মঙ্গলবার দুপুরে ইউক্রেনের খারকিভে কর্নাটকের বাসিন্দা, তরুণ ডাক্তারি পড়ুয়া, নবীন শেখরাপ্পা জ্ঞানগৌড়ের মৃত্যুর খবর জানানো হয় বিদেশ মন্ত্রকের তরফে। তারপরেই টুইটারে একই বয়ানের অজস্র টুইট নজরে আসে যেখানে কেন ওই ছাত্র কেন ফিরতে এত দেরি করলেন তা নিয়ে মৃত ওই ছাত্রকে রীতিমতো কটাক্ষ করা হয়। ওই বয়ান অনুযায়ী, ‘‘কর্নাটকের ২১ বছরের নবীনের মৃত্যু পরিবারের কাছে ক্ষতি। কিন্তু প্রশ্ন হল, ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে গতকাল পর্যন্ত ভারত সরকারের ৬টি নির্দেশ কেন সে অমান্য করেছিল? সে কি কোনও প্রাইভেট জেটের জন্য অপেক্ষা করছিল নাকি ভাবছিল প্রধানমন্ত্রীর থেকে কোনও বিশেষ আমন্ত্রণবার্তার জন্য অপেক্ষা করছিল?’’
বিরোধীদের অভিযোগ, দেশের হাজার হাজার পড়ুয়া ইউক্রেনে আটকে থাকার কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ যখন চড়ছে তখন তা চাপা দিতেই এ ভাবে আইটি সেল নামিয়ে মৃত ছাত্রকেও কদর্য কটাক্ষ করা হচ্ছে। যে কয়েকটি বিমান এসেছে তাতেও ফির আসা একাধিক পড়ুয়া অব্যবস্থার অভিযোগ তুলেছিলেন। সমাজমাধ্যমে সেই সব ভিডিয়োতেও দেখা গিয়েছিল কেন তারা ফিরে এসে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি ‘যথেষ্ট পরিমাণে’ কৃতজ্ঞতা বর্ষণ করছেন না তা নিয়ে আক্রমণ করেছিল শাসক-শিবিরের সমর্থকেরা। তবে এ দিনের ঘটনা ভদ্রতার সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে বলেই বিরোধীদের অভিযোগ।
একই বয়ান একাধিক প্রোফাইল থেকে এ দিন টুইটারে শেয়ার করা হয়েছে। কেবল নবীন নয়, কিছু বয়ানে প্রশ্ন তোলা হয়েছে তার পরিবারের ভূমিকা নিয়েও। তেমনই একটি টুইটের বক্তব্য, ‘‘আমরা দেশের করদাতারাও ওদের পড়তে পাঠাইনি আর ভারত সরকারও ওদের দূত হিসেবে পাঠায়নি। ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রথম নির্দেশিকা জারি হয়। ২৩ তারিখ অবধি কিভ বিমানবন্দর সচল ছিল। এতদিন ওই পড়ুয়ারা ও তাঁদের পরিবার কী করছিল?’’ বিরোধীদের অভিযোগ, মোদী সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষায় মরিয়া বিজেপি আইটি সেলই এই কাজ করিয়েছে।
এ দিনই আবার দিল্লির মান্ডি হাউসে রাশিয়ান কবি আলেকজান্ডার পুশকিনের মূর্তিতে ‘হিন্দু সেনা’ নামে একটি সংগঠনের দেওয়া একটি পোস্টারের ছবি ছড়িয়ে পড়ে সমাজমাধ্যমে। পোস্টারে দাবি করা হয়েছে, সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠায় ভারতীয় হিন্দুরা পুতিনের সঙ্গে আছে। সঙ্গে রয়েছে স্লোগান, ‘‘জয় অখণ্ড রাশিয়া, জয় ভারত।’’