বুধবার মুম্বইয়ে সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে জাতীয় সঙ্গীতের ‘অবমাননা’র অভিযোগ তুললেন মুম্বইয়ের বিজেপি নেতা। এই মর্মে তৃণমূলনেত্রীর বিরুদ্ধে পুলিশে একটি অভিযোগও দায়ের করেছেন তিনি। ঘটনাটিকে হাতিয়ার করে তৃণমূলনেত্রীর বিরুদ্ধে আক্রমণে নেমে পড়েছেন পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতৃত্বও। পাল্টা কটাক্ষ করেছে তৃণমূলও। পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে বিজেপি-র অভিযোগ প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার টুইট করেন, ‘জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন কুৎসা করছে বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী ‘জন গণ’ গাননি। গানের শব্দ ধরে ভাবার্থ বিশ্লেষণ করে দেশের ঐক্য, ঐতিহ্য, সম্প্রীতি, সংহতির কথা তুলে ধরছিলেন। বিজেপি না বোঝে প্রকৃত জাতীয়তাবাদ, না বোঝে জাতীয় সঙ্গীত, না বোঝে জাতীয় সংহতি।’
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার মুম্বই সফরে গিয়েছিলেন মমতা। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে বিজেপি-বিরোধী দলগুলিকে একত্রিত করার কাজ শুরু করে দিয়েছেন। আর সেই লক্ষ্যেই মুম্বইয়ে শিবসেনা এবং এনসিপি নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁদের সঙ্গে বৈঠকের পর একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন তৃণমূলনেত্রী। এর পর মমতা বিশিষ্টজনদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেন। সেই বৈঠকেই জাতীয় সঙ্গীতকে ঘিরে ‘বিতর্কের’ সূত্রপাত।
অভিযোগ, বৈঠক চলাকালীন হঠাৎই মমতা উঠে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে শুরু করেন। এবং বিরোধীদের দাবি, পুরো জাতীয় সঙ্গীত না গেয়েই, কয়েকটি লাইন উচ্চারণের পর হঠাৎ জাতীয় সঙ্গীত থামিয়ে দিয়ে বলে ওঠেন, ‘জয় মহারাষ্ট্র’। এখানেই আপত্তি মুম্বই এবং বাংলা বিজেপি-র।
মহারাষ্ট্রের বিজেপি নেতা প্রতীক কাপরে কটাক্ষ করে বলেছেন, “বৈঠকে তথাকথিত বিদ্বজ্জনেরা হাজির ছিলেন। তাঁদের উপস্থিতিতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বসে থাকা অবস্থাতে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে শুরু করলেন। শুধু তাই নয়, আবার হঠাৎ মাঝপথেই জাতীয় সঙ্গীত থামিয়েও দিলেন! এটা কি জাতীয় সঙ্গীতকে অবমাননার সামিল নয়?” অন্য দিকে, বিজেপি নেতা অমিত মালব্য টুইটে লেখেন, ‘আমাদের জাতীয় পরিচয় হল আমাদের জাতীয় সঙ্গীত। এই সঙ্গীতকে যে ভাবে গেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা, তা অবমাননাকর। বিরোধীরা কি দেশপ্রেম ভুলে গিয়েছেন?’
১৬ সেকেন্ডের সেই ভিডিয়ো হাতিয়ার করে আক্রমণে নেমে পড়েছেন পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতারাও। রাজ্য বিজেপি টুইট করেছে, ‘এক জন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বাংলার সংস্কৃতি, জাতীয় সঙ্গীত, দেশ এবং গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকেও অপমান করেছেন মমতা।’ দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের অভিযোগ, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ‘জেনেবুঝে’ই এ কাজ করেছেন। তাঁর কথায়, “বাংলার মুখ্যমন্ত্রী একটি সাংবিধানিক পদে থাকা সত্ত্বেও জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননা করেছেন। জাতীয় সঙ্গীত কী ভাবে গাইতে হয়, সেটা কি তিনি জানতেন না, নাকি ইচ্ছাকৃত ভাবেই অবমাননা করেছেন জাতীয় সঙ্গীতকে?”