হচ্ছে না অভিষেকের মিছিল। ফাইল চিত্র।
বিপ্লব দেবের সরকার পূর্ব ও পশ্চিম আগরতলায় ৪ নভেম্বর পর্যন্ত সভা-মিছিল নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ১৪৪ ধারা জারি করায় হাই কোর্টে গিয়েও আজ শূন্য হাতে ফিরতে হল তৃণমূল কংগ্রেসকে। বুধবার আগরতলায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পদযাত্রা হচ্ছে না। ১৫ ও ১৬ তারিখ পদযাত্রার অনুমতি পুলিশ দেয়নি। ২২ তারিখের পদযাত্রার জন্য অনমুতির আবেদন এক সপ্তাহ ঝুলিয়ে রাখার পর বিপ্লব-প্রশাসন আজ স্পষ্ট করে দিল, অদূর ভবিষ্যতে অভিষেককে আগরতলায় সভা-মিছিল করতে দিতে রাজি নয় তারা। পদযাত্রা বাতিল করতে হলেও অভিষেক কাল আগরতলায় এসে সাংগঠনিক ও সাংবাদিক বৈঠক বৈঠক করবেন বলে প্রথমে দলীয় সূত্রে জানানো হয়েছিল। পরে বলা হয়, অভিষেক কাল আসছেন না।
ত্রিপুরা সরকারের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল সিদ্ধার্থশঙ্কর দেব আজ হাই কোর্টে সরকারের একটি বিজ্ঞপ্তি পেশ করেন। সেটির বক্তব্য, এ দিন থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত পূর্ব ও পশ্চিম আগরতলায় কোনও দলকেই সভা-সমাবেশ-মিছিল করতে দেওয়া হবে না। জারি থাকবে ১৪৪ ধারা। সরকারের এই ‘নীতিগত সিদ্ধান্তের’ উপরে হস্তক্ষেপ করতে রাজি হননি বিচারপতি অরিন্দম লোধ। যদিও ভার্চুয়াল মাধ্যমে তৃণমূলের আইনজীবী বিশ্বজিৎ দেব প্রশ্ন তোলেন, “গত ১৫ তারিখেও একটি রাজনৈতিক সংগঠনকে মিছিল করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। ছ’দিনে পরি স্থিতির কী এমন বদল হল যে, সব সভা-মিছিল বন্ধ করে দিতে হল? সরকারের এই সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য স্পষ্ট।” রাতে তৃণমূলের তরফে জানানো হয়েছে, প্রশাসনিক ক্ষমতার এমন খামখেয়ালি প্রয়োগ নিয়ে তারা আদালতের কাছে ব্যাখ্যা চাইবে।
সভা মিছিলের উপরে এমন সার্বিক নিষেধাজ্ঞা জারির তিনটি কারণ দেখিয়েছে বিপ্লব সরকার। এক বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক কর্মসূচি থেকে হিংসা ছড়াতে পারে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে। দুই, কোভিডের তৃতীয় ঢেউ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা। তিন, সামনে দুর্গা ও কালী পূজা। সরকার চায় না, উৎসবের সময়ে অবাঞ্ছিত পরিস্থিতি তৈরি হোক। অ্যাডভোকেট জেনারেল সিদ্ধার্থশঙ্কর এ দিন সংবাদমাধ্যমে দাবি করেন, ২২ সেপ্টেম্বর যে পদযাত্রার অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়, পুলিশ গত ১৮ সেপ্টেম্বরই তা তৃণমূল নেতা সুবল ভৌমিককে মৌখিক ভাবে জানিয়েছিল। আদালতের অবস্থান জানার পর, বিকালে সদর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক চিঠি দিয়ে জানান, আগামিকাল পদযাত্রার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না।
পশ্চিমবঙ্গের সাংসদ শান্তনু সেন রায় নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তাঁর বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহের নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারের আমলে দেশের কোনও স্বশাসিত এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানই গেরুয়াকরণ থেকে রেহাই পাচ্ছে না। বিপ্লব দেবের বিজেপি এবং তাদের হার্মাদ
বাহিনী ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগার’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কতটা ভয় পাচ্ছে, প্রত্যেক দিন তা উপলব্ধি করা যাচ্ছে। বিজেপির মুখপাত্র নবেন্দু ভট্টাচার্য বলেন, “জঙ্গলের পশু লোকালয়ে চলে এলে খাঁচায় পোরাটাই স্বাভাবিক। ত্রিপুরা হাই কোর্টের পাশাপাশি দিল্লি হাই কোর্টেও তৃণমূল আজ ধাক্কা খেয়েছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ কয়লায় কালো হয়ে গিয়েছে।” শান্তনু সেনের উদ্দেশে নবেন্দুর পরামর্শ, “আগে অভিষেকের মুখটি ধুয়ে পরিষ্কার করে নিয়ে আসুন। তার পর রোড-শো করবেন।” ‘গেরুয়াকরণ’ প্রসঙ্গে শান্তনু আদালত অবমাননা করেছেন বলে দাবি করেন বিজেপির মুখপাত্র।