সোমবার থেকে সংসদে শুরু হচ্ছে বিশেষ অধিবেশন। — ফাইল চিত্র।
বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির পাখির চোখ এখন একটাই— মহিলা সংরক্ষণ বিল। শাসকদলের বেশ কিছু শরিক দলেরও এমনটাই ইচ্ছা। সংসদের বিশেষ অধিবেশন শুরু হচ্ছে সোমবার। সেখানে মহিলা সংরক্ষণ বিল পেশ এবং সহমতের মাধ্যমে পাশ করানোর দাবি উঠেছে রবিবারের সর্বদল বৈঠকে। সরকারের তরফে আশ্বাস, ‘সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে’।
সোমবারের বিশেষ অধিবেশনের আগে রবিবার দিল্লিতে সর্বদল বৈঠকের ডাক দিয়েছিল মোদী সরকার। সেখানেই আসন্ন অধিবেশনে মহিলা সংরক্ষণ বিল পেশের দাবি উঠেছে। এই বিলে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, লোকসভা এবং রাজ্য বিধানসভায় মোট আসনের এক-তৃতীয়াংশ মহিলাদের জন্য সংরক্ষণ করতে হবে। বৈঠক শেষে সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী বলেন, ‘‘সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ তিনি এ-ও জানিয়েছেন, রবিবারের বৈঠকে কাশ্মীরে নিহত জওয়ানদের শ্রদ্ধার্ঘ্য জানানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, ১৩ সেপ্টেম্বর জম্মু ও কাশ্মীরের অনন্তনাগে জঙ্গিদের হাতে নিহত হন কমান্ডিং অফিসার কর্নেল মনপ্রীত সিংহ, মেজর আশিস ধনচাক, জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের ডেপুটি সুপার হুমায়ুন ভাট এবং এক জওয়ান। তাঁদের শ্রদ্ধার্ঘ্য জানানো হয় সর্বদল বৈঠকে।
বৈঠক থেকে লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা অধীর চৌধুরী জানান, দেশের সব বিরোধী দল মহিলা সংরক্ষণ বিল নিয়েই সরব হয়েছে। মহারাষ্ট্রে বিজেপির শরিক এনসিপি নেতা প্রফুল্ল পটেলের গলাতেও যদিও বিরোধীদের সুরই শোনা গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘এই অধিবেশনে মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশ করানোর জন্য আমরা সরকারকে আবেদন করেছি।’’ মঙ্গলবার, গণেশ চতুর্থীর দিন সংসদ নতুন ভবনে স্থানান্তরিত হবে বলেও জানিয়েছেন পটেল। বিজেডি নেতা পিনাকী মিশ্রের আশা, নতুন সংসদ ভবন থেকে নতুন যুগ শুরু হবে। তবে তিনিও জানিয়েছেন, চলতি বিশেষ অধিবেশনেই মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশ হওয়া উচিত।
সূত্রের খবর, বৈঠকে কিছু আঞ্চলিক দল মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত আসনের মধ্যে তফশিলি জাতি, অনগ্রসর শ্রেণির জন্যও সংরক্ষণের দাবি তুলেছে। এই দাবি আগেও বিলটি পাশের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
রবিবারের সর্বদল বৈঠকের পরেও একটি প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। কেন বিশেষ অধিবেশন ডাকল মোদী সরকার? এই প্রসঙ্গে কংগ্রেস সাংসদ অধীর সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘এক মাত্র সরকারই জানে, তাদের অভিপ্রায় কী। নতুন অ্যাজেন্ডা দিয়ে সকলকে চমকেও দিতে পারে সরকার।’’
রবিবারের বৈঠকে সরকারের তরফে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা রাজ্যসভায় বিজেপি নেতা পীযূষ গয়াল এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী। বিরোধীদের তরফে ছিলেন জেডিএসের এইচডি দেবগৌড়া, ডিএমকের কানিমোঝি, টিডিপির রামমোহন নায়ডু, তৃণমূলের ডেরেক ও’ব্রায়েন, আপের সঞ্জয় সিংহ, বিজেডির সস্মিত পাত্র, সমাজবাদী পার্টির রামগোপাল যাদব প্রমুখ।