বাঁ দিক থেকে, রাহুল গান্ধী, শরদ পওয়ার, উদ্ধব ঠাকরে। — ফাইল চিত্র।
মহারাষ্ট্রে প্রধান বিরোধী জোট ‘মহাবিকাশ আবঘাড়ী’তে (এমভিএ) কোনও ফাটল নেই! জোটের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি, মতানৈক্যের কথা স্বীকার করে জানাল কংগ্রেস। শুধু তা-ই নয়, তারা আরও জানাল, মহারাষ্ট্রের ২৮৮ আসনেই এমভিএ-র মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর্ব শেষ হয়েছে।
বিধানসভায় আসন বণ্টন নিয়ে মহারাষ্ট্রের বিরোধী জোটে টানাপড়েন চলছিল। আসন চূড়ান্ত করতে হস্তক্ষেপ করতে হয় কংগ্রেস সাংসদ তথা লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী এবং কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গেকে। তবে তাতেও জট কাটেনি। অন্তিম প্রহরে ‘ইন্ডিয়া’র তিন শরিক— কংগ্রেস, উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বাধীন শিবসেনা (ইউবিটি) এবং শরদ পওয়ারের এনসিপি (এসপি)-র মধ্যে চূড়ান্ত হয় আসনরফা। তার পরই বুধবার কংগ্রেস নেতা তথা এআইসিসির পর্যবেক্ষক রমেশ চেন্নিথলা জানান, তাঁরা ঐক্যবদ্ধ ভাবে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে লড়াই করতে প্রস্তুত।
মঙ্গলবারই ছিল মনোনয়ন জমা দেওযার শেষ দিন। তবে অন্তিমপর্বে এসে দেখা যায়, ১১ আসন নিয়ে মতোবিরোধ রয়েছে ‘ইন্ডিয়া’র তিন শরিকের মধ্যে। সেই নিয়ে রমেশ জানান, জোটের মধ্যে ‘ভুল বোঝাবুঝি’ হয়েছিল। কিন্তু জোট অটুট। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি থাকলেও জোটে সকলের সঙ্গে সমান আচরণ করি।’’ তার পরই শাসক জোটকে নিশানা করেন রমেশ। তাঁর কথায়, ‘‘ওরা একে অপরের কোটা থেকে লড়াই করছে। বিজেপি নেতারাই শিবসেনা (একনাথ শিন্ডে শিবির) এবং এনসিপি (অজিত পওয়ার গোষ্ঠী) প্রতীকে লড়ছেন। শিন্ডে এবং অজিতের ক্ষমতা শেষ হয়ে গিয়েছে।’’ একই সঙ্গে এ-ও জানানো হয়েছে, আগামী ৬ নভেম্বর ‘মহাবিকাশ আঘাড়ী’র হয়ে মুম্বইয়ে প্রচারে যাচ্ছেন রাহুল।
উল্লেখ্য, মহারাষ্ট্রের ২৮৮টি বিধানসভা আসনের মধ্যে কংগ্রেস ১০২, উদ্ধবসেনা ৯৬ এবং এনসিপি(এসপি) ৮৬টি আসনে লড়বে। বাকি চারটি আসনের মধ্যে সমাজবাদী পার্টি এবং কৃষক সংগঠন পিডব্লিউপি-কে দু’টি করে ছাড়া হবে। এ ছাড়া, বড় তিন শরিক চাইলে নিজেদের কোটা থেকে অন্য ছোট দলগুলিকে আসন ছাড়তে পারে।
অন্য দিকে, আসন জট রয়েছে শাসক শিবিরের মধ্যেও। মঙ্গলবার মনোনয়ন পর্ব শেষ হওয়ার পর দেখা যায় চারটি আসন এখনও চূড়ান্ত হয়নি। শুধু তা-ই নয়, নবাব মালিককে নিয়ে শাসক গোষ্ঠীর মধ্যে বিরোধও প্রকাশ্যে এসেছে। এনসিপি (অজিত গোষ্ঠী)-র টিকিটে মানখুরড শিবাজী নগর থেকে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তিনি। কিন্তু তাঁর মনোনয়ন পর্ব ঘিরেও জটিলতার সৃষ্টি হয়। দেখা যায়, নবাব এনসিপি ছাড়া নির্দল হিসাবেও মনোনয়ন জমা দেন নবাব। বিতর্কের মধ্যেই আসরে নামে অজিত। নির্দল হিসাবে লড়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন তিনি। কিন্তু তাঁকে প্রার্থী করা নিয়ে বিজেপির সঙ্গে বিরোধ দেখা দেয় অজিতের। কারণ, বিজেপি চায়নি নবাবকে প্রার্থী করা হোক। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁকেই টিকিট দেওয়ায় ক্ষুব্ধ বিজেপি। তারা স্পষ্ট করেছে, নবাবের হয়ে প্রচার করবে না।