গ্রামের নাম বোমজা। অরুণাচলপ্রদেশ ও ভুটান সীমান্তের কাছে প্রত্যন্ত গ্রাম। এ হেন গ্রামের কদর গত রাতের পর থেকেই বেড়ে গিয়েছে কয়েকশো গুণ। বোমজা এই মুহূর্তে ভারতের ধনীতম গ্রাম। দিল্লির কাছে, সোনপতের রাধাধনা গ্রামও ‘কোটিপতিদের গ্রাম’ বলে খ্যাত। কিন্তু সেখানেও ধনীদের পাশাপাশি রয়েছেন গ্রামের দু’শো ভূমিহীন দলিত পরিবার। বোমজায় বৈষম্য নেই। এখানে ১০০ শতাংশ পরিবারই রাতারাতি কোটিপতি! সৌজন্যে ভারতীয় সেনাবাহিনী।
অরুণাচলের এক দিকে চিন, অন্য দিকে ভুটান। মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ জেলা তাওয়াং। চিন সীমান্তের কাছে তাওয়াংয়ে সেনা ঘাঁটি মজবুত করা সেনাবাহিনী অনেক দিনের পরিকল্পনা। ‘তাওয়াং গ্যারিসন’ তৈরির জন্য দীর্ঘ দিন ধরেই জমি চাইছিল সেনাবাহিনী। কিন্তু তাওয়াং চু নদীর পাশে, ভুটান সীমান্তের দিক থেকে তৃতীয় গ্রাম বোমজার বাসিন্দারা জমি দিতে তৈরি ছিলেন না।
পাহাড়, জমি তাঁদের কাছে ‘পবিত্র সম্পদ’। কিন্তু প্রশাসন বোঝায়, পাহাড়ের মালিকানা ধরে রেখে মনে শান্তি থাকলেও বছর গেলে আয় হয় না । তাই ওই ২০০.০৫৬ একর জমি দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে দিয়ে দেওয়াই ভাল। বদলে মিলবে ভাল দর।
আরও পড়ুন: মেয়েদের জন্মই বন্ধ করে দেব, হুমকি খাপের
তাওয়াংয়ের জেলাশাসক সাং ফুন্টসকের কথায়, ‘‘প্রায় ছ’বছর আলাপ-আলোচনার পর শেষ পর্যন্ত রাজি হন বোমজাবাসীরা। প্রতিরক্ষামন্ত্রী জমি অধিগ্রহণ ও ক্ষতিপূরণ প্যাকেজে মঞ্জুরি দেন।’’ এর পর গত কাল বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী তথা তাওয়াংয়ের ভূমিপুত্র পেমা খান্ডু নিজের কেন্দ্র মুক্তোয় বোমজা গ্রামের ৩১টি পরিবারের হাতে মোট ৪০ কোটি ৮০ লক্ষ ৩৮ হাজার ৪০০ টাকার চেক তুলে দেন। তার মধ্যে গ্রামের ২৯টি পরিবার সমান হারে ১ কোটি ৯ লক্ষ ৩ হাজার ৮১৩ টাকার চেক পেলেন। একটি পরিবার পেয়েছেন ২ কোটি ৪৪ লক্ষ ৯৭ হাজার ৮৮৬ টাকা। সব চেয়ে বেশি জমির মালিক পেয়েছেন ৬ কোটি ৭৩ লক্ষ ২৯ হাজার ৯২৫ টাকা! মূলত পাহাড়ে চাষবাষ করাই এদের পেশা। সেনাবাহিনীর ১৯০ মাউন্টেন ব্রিগেডের ব্রিগেডিয়ার এম পি সিংহ জানান, ওই জমিতে তাওয়াং গ্যারিসনের ‘কি লোকেশন প্ল্যান ইউনিট’ গড়া হবে।