গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।
আলিগড়ে একটি শিশুকন্যাকে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগে যে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের এক জনের বিরুদ্ধে ৫ বছর আগে নিজের মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল। জেলেও যেতে হয়েছিল। পরে তার স্ত্রী তাকে জামিনে ছাড়িয়ে আনেন। ওই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এর আগেও ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬, ৩৫৪ এবং ৩৬৩ নম্বর ধারায় মোট চারটি মামলা রুজু হয়েছে। যার কোনওটিরই এখনও পর্যন্ত নিষ্পত্তি হয়নি। ধৃতদের এক জনের নাম জাহিদ। অন্য জন তার ভাই। আলিগড়ের পুলিশ এ কথা জানিয়েছে। ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে শনিবার আরও দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আলিগড়ের আইনজীবীরা অভিযুক্তদের হয়ে আদালতে আইনি লড়াই করতে অস্বীকার করেছেন।
কোনও খোঁজ না পেয়ে টাপ্পাল শহরতলিকে থাকা আড়াই বছরের শিশুটির পরিবার গত ৩০ মে পুলিশের দ্বারস্থ হওয়ার তিন দিন পর আবর্জনা ফেলার একটি জায়গা থেকে শিশুটির পচাগলা দেহ উদ্ধার করা হয়। তার শরীরে তখন জীবাণুর জন্ম হয়েছিল। শিশুটির পরিবারের তরফে অভিযোগ করা হয়, শিশুটি নিখোঁজ হওয়ার পর পুলিশ লিখিত অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে। কারা ওই ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে, তাদের নাম জানানো সত্ত্বেও অপরাধীদের ধরার ব্যাপারে পুলিশ কোনও সক্রিয়তা দেখায়নি। ঘটনাটি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া ও রাজনৈতিক মহলে তোলপাড় শুরু হওয়ার পর ৫ পুলিশকর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন থানার স্টেশন হাউস অফিসারও। পুলিশ জানিয়েছে, ১০ হাজার টাকা ধার নিয়ে শিশুটির দাদু তা শোধ করতে পারেননি। তারই জেরে এই খুন। গত ৩০ মে শিশুটি যখন তার বাড়ির সামনে খেলছিল, তখনই তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
পুলিশ সূত্রে খবর, শিশুটির দেহ রবিবার উদ্ধার হয় আচমকা। একটি কুকুর আবর্জনা ফেলার জায়গা থেকে শিশুকন্যাটির দেহ টানতে টানতে রাস্তায় নিয়ে এসেছিল। তখনই সেটা সকলের চোখে পড়ে যায়। খবর পৌঁছয় পুলিশের কাছে। ময়নাতদন্তের পর পুলিশের ধারণা, শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়নি। তাকে শ্বাসরোধ করে মারা হয়েছে। তবে শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছিল কি না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পুলিশের হাতে আরও কিছু তথ্যপ্রমাণ আসতে হবে বলে আলিগড় পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন- ৫০০০ টাকা ধার না মেটানোর ‘শাস্তি’, আড়াই বছরের শিশুকে চোখ খুবলে, গলা টিপে খুন!
আরও পড়ুন- ফেসবুকে মেয়েদের ছবি বিকৃত করে পোস্ট! মাথা ন্যাড়া করে মারধর যুবককে
তদন্তে যাতে কোনও গাফিলতি না থাকে, সে জন্য মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছেন বলে জানিয়েছেন মহিলা ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। শিশুটির পরিচয় গোপন রাখারও অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি সংবাদমাধ্যমের কাছে। তদন্ত কতটা এগিয়েছে, সে সম্পর্কে আলিগড় জেলা প্রশাসনের কাছে সবিস্তার রিপোর্ট চেয়েছে শিশু অধিকার রক্ষা সংক্রান্ত জাতীয় কমিশন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উত্তরপ্রদেশের এডিজি (আইন ও শৃঙ্খলা) আনন্দ কুমার বলেছেন, ‘‘ফাস্ট-ট্র্যাক আদালতে এই মামলা হবে। যেহেতু এখনও পর্যন্ত ধর্ষণের আশঙ্কা পুরোপুরি উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না, তাই এফআইআরে ‘পকসো’ আইনও ঢোকানো হবে।’’