ফাইল চিত্র।
বিএসপি এবং কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গড়ে লোকসভা ভোটে বিধ্বস্ত হওয়ার পরে এসপি নেতা অখিলেশ সিংহ যাদব ‘একলা চলো’ নীতির কথা বলে এসেছেন গত দেড় বছর। তবে সাম্প্রতিক বিহার ভোটের পর হিন্দি বলয়ে গুরুত্ব বাড়ছে ছোট ছোট আঞ্চলিক দল বা সংগঠনের। উত্তরপ্রদেশে বাইশের বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপির মোকাবিলা করতে মুলায়ম-পুত্র সেই দলিত এবং পিছড়ে বর্গের সংগঠনগুলির হাত ধরতে চাইছেন।
সম্প্রতি অখিলেশ দেখা করেছেন তাঁর কাকা শিবপাল সিংহ যাদবের সঙ্গে। পরিবারের মনোমালিন্যে ২০১৭ সালের বিধানসভা ভোটে প্রগতিশীল সমাজবাদী পার্টি (লোহিয়া) গঠন করে ভোটে লড়েছিলেন শিবপাল। ভোটব্যাঙ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল এসপি-র। সেই ভুলের পুনরাবৃত্তি করতে চাইছেন-না অখিলেশ। শিবপাল জিতে এলে তাঁকে মন্ত্রিত্ব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অখিলেশ। শিবপালও রাজি। স্থির হয়েছে কাকা-ভাইপো জোট গড়েই বিজেপির বিরুদ্ধে লড়বেন।
সাম্প্রতিক ৮টি আসনে উপনির্বাচন হয়ে গেল উত্তরপ্রদেশে। সেখানে একটি আসন এসপি ছেড়ে রেখেছিল রাষ্ট্রীয় লোক দল বা আরএলডি-র জন্য। বিধানসভা ভোটে আরএলডি-র সঙ্গে জোট গড়বেন অখিলেশ, এ ব্যাপারে পাকা কথা হয়ে গিয়েছে বলেই এসপি সূত্রের খবর। পাশাপাশি পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে প্রভাবশালী কেশব দেবের মহান দলকেও দেখা যাচ্ছে অখিলেশের নেতাদের সঙ্গে ওঠাবসা করতে। জনবাদী পার্টির নেতা সঞ্জয় চৌহান এর আগে এসপি-র প্রতীকে দাঁড়িয়ে হেরেছেন। তবে এখন অখিলেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে কাজ করছেন তিনি। রাজনৈতিক সূত্রের মতে, যে হেতু এই ছোট ছোট সংগঠন বা দলগুলির ভিত্তি হল জাতপাত, ফলে তাদের এককাট্টা সমর্থনে লাভই হবে অখিলেশের।
গত বছর উত্তরপ্রদেশের ভোটে বিজেপি জোট গড়েছিল ‘সুহেলদেব ভারতীয় সমাজ পার্টি’ (এসবিএসপি)-র সঙ্গে। পিছড়ে বর্গ রাজভড় সম্প্রদায়ের নেতা ওমপ্রকাশ রাজভড়কে দেওয়া হয়েছিল ৮টি আসন, যার মধ্যে ৪টি জেতেন তাঁরা। অনুপ্রিয়া পটেলের অপনা দলের সঙ্গেও জোট গড়ে বিজেপি তাদের ১১টি আসন দিয়েছিল। অনুপ্রিয়ারা জিতেছিলেন ৯টিতে। পরবর্তী কালে ওমপ্রকাশকে রাজ্যের মন্ত্রী করা হলেও, পিছড়ে বর্গের প্রতি বঞ্চনার অভিযোগ তুলে তিনি জোট ভেঙে বেরিয়ে আসেন গত বছর। বিহার নির্বাচনে ওমপ্রকাশ বিএসপি-র সঙ্গে হাত মেলালেও, বাইশের উত্তরপ্রদেশের ভোটের জন্য তিনি নতুন ছক কষছেন বলে জানা গিয়েছে। অখিলেশের সঙ্গে তাঁকে হাত মেলাতে দেখা যেতে পারে। গোটা বারো ছোট বড় সংগঠনকে এক করে, তিনি গড়েছেন ভাগীদারি সংকল্পমোর্চা। রাজভড়ের কথায়, “আমাদের মোর্চার দরজা খোলা রয়েছে। আমাদের যে সঙ্গে নেবে তারাই উত্তরপ্রদেশে সরকার গড়তে পারবে। এখনও এসপি বা বিএসপি-র সঙ্গে আমরা আলোচনা শুরু করিনি।”