—ফাইল চিত্র।
উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচনের ভোট-বাদ্য বেজে গিয়েছে অনেক দিন হল। শাসক ও বিরোধী শিবির জোরকদমে প্রচার শুরু করে দিয়েছে। ‘বিজয় যাত্রা’ রথ নিয়ে রাজ্য চষে ফেলছেন প্রধান বিরোধী দল সমাজবাদী পার্টি (এসপি)-র নেতা অখিলেশ সিংহ যাদব। সেই রথেই সর্দার বল্লভভাই পটেল, বি আর অম্বেডকরের সঙ্গে রয়েছে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এপিজে আব্দুল কালামের ছবি। তা নিয়ে লখনউয়ের রাজনীতিতে শুরু হয়েছে জোর চর্চা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, মুসলিম ভোটব্যাঙ্ককে নজরে রেখেই অখিলেশের ওই পদক্ষেপ। তা অবশ্য অস্বীকার করেছে এসপি। ‘বিজয় যাত্রা’ রথে কালামের ছবি নিয়ে
বিজেপির কটাক্ষ, অখিলেশের ‘শুভবুদ্ধির উদয়’ হয়েছে।
হিন্দি বলয়ের সবচেয়ে বড় রাজ্যে বিজেপি জমানার অবসানে কোমর বেঁধে নেমেছেন অখিলেশ। তাঁর ‘বিজয় যাত্রা’ রথে যেমন রয়েছে বল্লভভাই পটেলের ছবি তেমনই রয়েছে সমাজবাদী নেতা আচার্য নরেন্দ্র দেব, রামমনোহর লোহিয়াদের ছবি। এ বার অখিলেশের রথে যুক্ত হয়েছে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি কালামের ছবিও। এসপি নেতারা বলছেন, রথে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির ছবি লাগানো একান্তই অখিলেশের সিদ্ধান্ত। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, বিধানসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশের মুসলিম ভোটব্যাঙ্ককে ‘পাখির চোখ’ করেছেন অখিলেশ। এসপি-র ‘মুসলিম মুখ’ বলে পরিচিত আজ়ম খান বর্তমানে জেলবন্দি। সেই অভাব আড়াল করতেই এসপি প্রধান সুকৌশলে কালামের ছবি ব্যবহার করছেন। এসপি নেতৃত্ব অবশ্য এই যুক্তি খারিজ করে দিয়েছেন। তাঁদের যুক্তি, এ পি জে আব্দুল কালামের সঙ্গে দলের প্রবীণ নেতা মুলায়ম সিংহ যাদবের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। রাষ্ট্রপতি হিসেবে তাঁর নাম এই প্রবীণ নেতাই প্রস্তাব করেছিলেন। দলের প্রধান মুখপাত্র রাজেন্দ্র চৌধরি বলেন, ‘‘সমাজবাদী পার্টি সকল মহান নেতাকে শ্রদ্ধা করে। যাঁরা দেশ ও সমাজকে দিকনির্দেশ করেছেন, তাঁদের সকলের ছবিই রথে থাকছে।’’ মুসলিম ভোটব্যাঙ্কের তথ্য উড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এসপি সব সম্প্রদায়কে শ্রদ্ধা করে। রথে কালামের ছবি থাকার পিছনে সাম্প্রদায়িক উদ্দেশ্য খোঁজা ঠিক হবে না। মহারাষ্ট্রে এসপির সভাপতি আবু আসিম আজ়মির মতে, কালাম সব সম্প্রদায়ের কাছে গ্রহণযোগ্য। এখানে ভোটের অঙ্ক কষা ঠিক নয়।
বিজেপি এ সবে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে না। উত্তরপ্রদেশের বিজেপি নেতা তথা মন্ত্রী মহসিন রেজ়ার কটাক্ষ, ‘‘মহম্মদ আলি জিন্নার বদলে এ পি জে আব্দুল কালাম-সহ অন্য নেতাদের ছবি থাকছে, এটা ভাল। ওঁর (অখিলেশ) শুভবুদ্ধির উদয় হচ্ছে। তিনি বুঝতে পারছেন তাঁকে অনুসরণ করা উচিত যাঁর জন্য জাতি গর্বিত হয়। যিনি দেশকে ভাগ করেন তাঁকে অনুসরণ করা উচিত নয়।’’