(বাঁ দিকে) অখিলেশ যাদব। রাহুল গান্ধী (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
সম্ভলের শাহি জামা মসজিদ ঘিরে বিতর্ক এ বার সংসদে। মঙ্গলবার লোকসভায় সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব অভিযোগ করলেন, রাজ্য সরকার এবং বিজেপির মদতেই গোষ্ঠীহিংসা হয়েছে উত্তরপ্রদেশের ওই শহরে। সেই সঙ্গে সম্ভল-বিতর্ককে ‘দিল্লি বনাম লখনউ’য়ের লড়াই বলেও বর্ণনা করেন তিনি।
কনৌজের সাংসদ অখিলেশ বলেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশ সরকার এবং বিজেপি পরিকল্পিত ভাবে সম্ভলে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। গোষ্ঠীহিংসা পর্বে পাঁচ জন ব্যক্তি পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন।’’ এই অভিযোগ করে দোষী পুলিশ অফিসারদের শাস্তি দাবি করেন তিনি। অন্য দিকে, মঙ্গলবার উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অজয় রাই জানিয়েছেন, বুধবার লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর সম্ভলের পরিস্থিতি পরিদর্শনে যাবেন।
শনিবার রাজ্যের প্রধান বিরোধী পক্ষ সমাজবাদী পার্টির ১৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সম্ভলে ঢুকতে গেলে তাদের বাধা দেয় উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন। রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা মাতাপ্রসাদ পাণ্ডের নেতৃত্বে ওই দলটি শেষ পর্যন্ত ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছিল। এর পরে সোমবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাওয়ার সময়ে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে অজয়ের নেতৃত্বে কংগ্রেসের একটি প্রতিনিধি দলও। অখিলেশ তার নিন্দা করে বলেন, ‘‘পরিকল্পিত ছকে হিংসা হয়েছে। এখন পরিস্থিতি আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে।’’
প্রসঙ্গত, গত ১৯ নভেম্বর সম্ভলের স্থানীয় আদালতে একটি মামলায় দাবি করা হয়, মোগল সম্রাট বাবরের আমলে হরিহর মন্দির ভেঙে সেখানকার শাহি মসজিদ তৈরি হয়েছিল। মামলা দায়ের করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নিম্ন আদালতের বিচারক আদিত্য গোস্বামী কমিশনার নিয়োগ করে মসজিদে সেই দিনই সমীক্ষার নির্দেশ দেন। কোট গারভী এলাকায় প্রথম দিনের সমীক্ষা নির্বিঘ্নেই হয়েছিল। কিন্তু এর পর গত ২৪ নভেম্বর দ্বিতীয় বার সমীক্ষার সময়ে উত্তেজনা ছড়ায়। তাতে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়। পুলিশের গুলিতেই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ।
উত্তেজনা ঠেকাতে আগামী ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত সম্ভলে বহিরাগতদের ঢোকা আটকাতে একটি নির্দেশ জারি করে যোগী আদিত্যনাথের সরকার। এর পরে সম্ভলে হিংসাকাণ্ডের তদন্তের জন্য রাজ্যপাল আনন্দীবেন পটেল গঠিত বিচার বিভাগীয় কমিটি রবিবার এলাকা পরিদর্শনে যায়। অশান্তি ছড়ানো অঞ্চলগুলির বাস্তব চিত্র সরেজমিনে দেখেন তাঁরা। পরিদর্শক দলে ছিলেন কমিটির নেতৃত্বে থাকা ইলাহাবাদ হাই কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি দেবেন্দ্রকুমার অরোরা এবং অবসরপ্রাপ্ত পুলিশকর্তা অরবিন্দকুমার জৈন। তবে কমিটির তৃতীয় সদস্য অবসরপ্রাপ্ত আমলা অমিতমোহন প্রসাদ রবিবারের পরিদর্শনে ছিলেন না।