ছবি: সংগৃহীত।
ক্রমশই পিছিয়ে যাচ্ছে মহাকাশে ভারতীয় নভশ্চর পাঠানোর প্রকল্প। শুক্রবার ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর চেয়ারম্যান এস সোমনাথ জানিয়েছেন, ২০২৬ সালের শেষ পর্বের আগে কোনও ভাবেই গগনযানের উৎক্ষেপণ সম্ভব নয়। সেই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘আগামী বছরের গোড়ায় গগনযান মিশনের জন্য মহাকাশচারীহীন পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ (আনক্রুড মিশন) শুরু হবে।
২০১৮ সালের ১৫ অগস্ট স্বাধীনতা দিবস পালন কর্মসূচিতে ‘গগনযান-২০২২’ প্রকল্পের ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এর পর ইসরোর তৎকালীন চেয়ারম্যান কে সিভন জানিয়েছিলেন, ২০২২ সালে শ্রীহরিকোটার উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে ওই মহাকাশযান ছাড়া হবে। তাতে থাকবেন তিন জন ভারতীয় মহাকাশচারী। উৎক্ষেপণের ১৬ মিনিটের মাথায় মহাকাশযানটি ভূপৃষ্ঠ থেকে ৩০০-৪০০ কিলোমিটার দূরত্বে পৌঁছে পৃথিবীকে পাক খাওয়া শুরু করবে। সে জন্য ব্যবহার করা হবে ভারতের নিজস্ব জিএসএলভি এম কে-থ্রি রকেট।
পৃথিবীকে ঘিরে মহাকাশযানের যে ‘অরবাইটাল মডিউলটি’ পাক খাবে তাতে দু’টি অংশ থাকবে। একটিতে মহাকাশচারীরা থাকবেন। সেটির নাম ‘ক্রু মডিউল’। যা যুক্ত থাকবে ‘সার্ভিস মডিউল’-এর সঙ্গে। ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার উপরে পৃথিবীর কক্ষপথে তিন দিন মহাকাশচারীরা অবস্থান করবেন। এর পর সমুদ্র উপকূলে কোনও জায়গায় তাঁদের নিরাপদ অবতরণের মাধ্যমে ফেরত আনা হবে। এই প্রকল্প সফল হলে আমেরিকা, রাশিয়া, চিনের পরে চতুর্থ দেশ হিসাবে নিজস্ব প্রযুক্তিতে মহাকাশে নভশ্চর পাঠাবে ভারত।
কিন্তু প্রযুক্তিগত ভাবে অত্যন্ত কঠিন এই প্রকল্পে পদে পদে ঝুঁকির আশঙ্কা রয়েছে। ইসরোর একটি সূত্র জানাচ্ছে, মহাকাশযান উৎক্ষেপণের চেয়েও নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা অনেক বেশি কঠিন। নাসার অভিযাত্রী কল্পনা চাওলার ‘কলম্বিয়া’ মহাকাশযানটি পৃথিবীতে ফেরার পথে ‘হিট শিল্ড’-এ সমস্যা হওয়ায় বায়ুমণ্ডলের সংস্পর্শে আসতেই জ্বলে গিয়েছিল। এ ক্ষেত্রে তাই সব ধরনের সাবধানতা অবলম্বন করেই এগোতে হচ্ছে। আর সে কারণেই বার বার পিছিয়ে যাচ্ছে উৎক্ষেপণ পর্ব।